আলুচাষিদের স্বার্থ যেন ক্ষুণ্ন না হয়
Published: 16th, February 2025 GMT
একটা রক্তাক্ত গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিরাট রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ঘটে গেল দেশে। এরপর বিগত সব বৈষম্য অবসানে রাষ্ট্র সংস্কারের জোর দাবি ওঠে। বিভিন্ন খাতের সংস্কার ছাড়া, বিশেষ করে কৃষি খাত বাদ দিয়ে রাষ্ট্র সংস্কারের কার্যক্রম কতটা সফল হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। আমরা দেখছি কৃষি ও কৃষক নিয়ে রাষ্ট্র ও সরকারের ভাবনা আগের মতো থেকে গেছে। এবারের মৌসুমে আলুচাষিদের হতাশায় সেটিই প্রতীয়মান হয়।
আমরা দেখতে পেলাম চলতি মৌসুমে উচ্চফলনশীল (উফশী) বা হাইব্রিড জাতের আলুর বীজের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়। আলুর বীজ নিয়ে সিন্ডিকেট বিষয়ে সংবাদমাধ্যমগুলোয় প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। বেশি দামে আলুর বীজ কিনতে বাধ্য হয়েছেন কৃষক। অন্যান্য খরচ বৃদ্ধির পর মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে হিমাগারের মজুরি বৃদ্ধি। কৃষকেরা দাবি করছেন, অন্যায্য ও অযৌক্তিকভাবে হিমাগারের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।
হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে দিনাজপুরের কৃষকেরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। আলু ফেলে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন। আলুচাষিরা বলেন, কয়েক বছর ধরে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নানা সমস্যার কারণে তাঁরা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
অনেকে পুঁজি হারিয়েছেন। গত দুই বছরে আলু চাষ করা থেকে অনেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। চলতি মৌসুমে উৎপাদনের জন্য বীজ, আলু ও সার বেশি দামে কিনতে হয়েছে। যে জমি ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা প্রতি বিঘা ইজারা নেওয়া গেছে, এবার সেটি পড়েছে ২৫ হাজারের বেশি। গত বছর প্রতি কেজি আলুর হিমাগার ভাড়া ছিল তিন থেকে পাঁচ টাকা। একলাফে এবার সেটা আট টাকা করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আলুর উৎপাদন এবার বেশি হওয়ায় হিমাগারমালিকেরা আলু সংরক্ষণে ভাড়া বাড়ানোর পাঁয়তারা করছেন।
আলুচাষি ও ব্যবসায়ীদের উল্লেখযোগ্য দাবি হচ্ছে হিমাগারে প্রতি বস্তা আলুর বিপরীতে ন্যায্য ভাড়া নির্ধারণ ও অহেতুক হয়রানি বন্ধ করা, আলু শুকানোর জন্য শেড চার্জ ফ্রি বা নামমাত্র করা আলু সংরক্ষণের জন্য হিমাগারমালিকেরা যে ঋণ করেন, তা ব্যাংকের সুদের হারের চেয়ে ২ শতাংশের বেশি নির্ধারণ না করা এবং সংরক্ষিত আলু পচে গেলে কিংবা হিমাগার কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে নষ্ট হলে বাজার অনুযায়ী সংরক্ষণকারীকে মূল্য পরিশোধ করা।
বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্বাস দিয়েছেন, তিনি সমস্যা সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবেন। আমরা আশা করব স্থানীয় প্রশাসন আলুচাষিদের দাবি পূরণে সচেষ্ট হবেন। হিমাগারমালিক, আলুচাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে। গোটা দেশে হিমাগার খাদ্য সংরক্ষণে কৃষকদের স্বার্থ অক্ষুণ্ন থাকার বিষয়টি জাতীয়ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হোক।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলি হামলায় ইরানে নিহত বেড়ে ২২৪
ইসরায়েলি হামলায় ইরানে রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
রোববার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭৭ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।