ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারের পর আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেইয়ের বিরুদ্ধে ‘জালিয়াতির’ অভিযোগ উঠেছে। এ জন্য তাঁকে আইনি পদক্ষেপের মুখোমুখি হতে হয়েছে। বিরোধীদের পক্ষ থেকে এখন প্রেসিডেন্টের অভিশংসনের দাবিও উঠেছে।

ঘটনাটি গত শুক্রবারের। ওই দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ক্রিপ্টোকারেন্সি ‘$লিবরা’ নিয়ে একটি পোস্ট দেন হাভিয়ের মিলেই। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র বাণিজ্য ও স্টার্টআপগুলোর তহবিল সংগ্রহে সহায়তায় তাঁর এই পোস্ট।

ওই পোস্টে ক্রিপ্টোকারেন্সিটি কেনার জন্য একটি লিংক জুড়ে দেন হাভিয়ের মিলেই। এতে ওই ক্রিপ্টোকারেন্সির দাম বেড়ে যায়। কয়েক ঘণ্টা পর এক্স থেকে পোস্ট সরিয়ে নেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট। এতে ক্রিপ্টোকারেন্সিটির দরপতন ঘটে। বিনিয়োগকারীরা তাঁদের বেশির ভাগ লগ্নি হারান।

এ কারণে আইনি ঝামেলায় জড়িয়েছেন প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই। গত রোববার আর্জেন্টিনার একটি আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন আইনজীবীরা। এদিকে আর্জেন্টিনার কংগ্রেসের কয়েকজন বিরোধী সদস্য হাভিয়ের মিলেইয়ের বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরুর পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছেন।

অনলাইনে অনেকে অভিযোগ করেছেন, প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই ‘রাগ পুলে’ জড়িত। এর মাধ্যমে ক্রিপ্টোকারেন্সির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা ক্রেতাদের আকর্ষণ করেন। ব্যবসায়িক কার্যকলাপ বন্ধ করে দিতে এবং বিক্রি থেকে সংগ্রহ করা অর্থ থেকে লাভবান হতে এমনটা করা হয়।

আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের দপ্তর গত শনিবার জানিয়েছে, ক্রিপ্টোকারেন্সি চালু হওয়ার পর থেকে এ নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। এটি এড়াতে পোস্টটি সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

আরও বলা হয়, ক্রিপ্টোকারেন্সির উন্নয়নে প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেই জড়িত ছিলেন না। সরকারের দুর্নীতি দমন দপ্তর এ বিষয়ে তদন্ত করবে এবং প্রেসিডেন্টসহ কেউ নিয়ম ভেঙেছেন কি না, তা বের করবে।

প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের অন্যতম আবেদনকারী জোনাথন বালদিভিয়েজো এপিকে বলেন, জালিয়াতি হয়েছে। আর এ ব্যাপারে প্রেসিডেন্টের পদক্ষেপ নেওয়া অপরিহার্য ছিল।

প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেইয়ের রাজনৈতিক বিরোধীরা সুযোগটি লুফে নিয়েছেন। আর্জেন্টিনার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমানে বিরোধী দলে থাকা ক্রিস্টিনা ফার্নান্দেজ দে কিচনার তীব্র সমালোচনা করে প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলেইকে ‘ক্রিপ্টো প্রতারক’ বলে উল্লেখ করে একটি পোস্ট করেছেন। পোস্টটি ৬৪ লাখ বার দেখা হয়েছে।

এদিকে আর্জেন্টিনার প্রধান বিরোধী জোট জানিয়েছে, তারা প্রেসিডেন্টের অভিশংসনের জন্য পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব জমা দেবে। কেননা, তাদের মতে এটি একটি ‘নজিরবিহীন কেলেঙ্কারি’।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন র প র স ড ন ট

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তান সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের মন্তব্যে ভারতে ক্ষোভ, কী বলেছেন তিনি

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির সাধারণত আলোচনার কেন্দ্রে আসেন না। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে খবরের শিরোনাম হয়ে উঠেছেন তিনি—শুধু পাকিস্তানে নয়, সীমানা পেরিয়ে ভারত ও বিশ্বের বিভিন্ন কূটনৈতিক কেন্দ্রেও।

ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এর কয়েক দিন আগে কাশ্মীর নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন আসিম মুনির। তাঁর এসব মন্তব্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থান ও আঞ্চলিক উত্তেজনায় তাদের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই কাশ্মীরকে পুরোপুরি নিজেদের বলে দাবি করে। কিন্তু তারা এটির একেক অংশ শাসন করে। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার কেন্দ্রে রয়েছে এ ভূখণ্ড।

জেনারেল মুনিরের বক্তব্য যদিও প্রত্যক্ষভাবে পেহেলগামের হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, তবু তাঁর বক্তব্য বিশ্লেষণ করে এটিকে বেশি আগ্রাসী মনোভাবের হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সেনাপ্রধান হিসেবে জেনারেল আসিম মুনিরকে বর্তমানে পাকিস্তানের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে ধরা হয়। দেশটির রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ, সরকারকে ক্ষমতায় বসানো ও অপসারণে দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনী নানা ভূমিকা রাখছে বলে অভিযোগ করা হয়ে থাকে। এখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী প্রতিবেশী এ দুই দেশে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছেন তিনি।

ইসলামাবাদে গত ১৭ এপ্রিল প্রবাসীদের সঙ্গে একটি বৈঠকে আসিম মুনির বলেন, ‘আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ থেকে আলাদা।’ কাশ্মীরকে পাকিস্তানের ‘জীবন সঞ্চারণী শিরা’ উল্লেখ করে তিনি অঙ্গীকার করেন, ‘ভারতের দখলদারত্বের বিরুদ্ধে কাশ্মীরিদের বিরোচিত লড়াইকে পাকিস্তান কখনো পরিত্যাগ করবে না।’

২০২২ সালের নভেম্বরে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নেন জেনারেল মুনির। দায়িত্ব গ্রহণের পর তাঁকে প্রকাশ্যে তেমন কথা বলতে শোনা যায়নি। তবে তাঁর একটি বক্তব্য ব্যাপকভাবে মনোযোগ কেড়েছে।

আরও পড়ুনভারতে অনলাইনে ছড়ানো হচ্ছে মুসলিমবিদ্বেষী গান, কনটেন্ট২৯ এপ্রিল ২০২৫

ইসলামাবাদে গত ১৭ এপ্রিল প্রবাসীদের সঙ্গে একটি বৈঠকে আসিম মুনির বলেন, ‘আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ থেকে আলাদা।’ কাশ্মীরকে পাকিস্তানের ‘জীবন সঞ্চারণী শিরা’ উল্লেখ করে তিনি অঙ্গীকার করেন, ‘ভারতের দখলদারত্বের বিরুদ্ধে কাশ্মীরিদের বিরোচিত লড়াইকে পাকিস্তান কখনো পরিত্যাগ করবে না।’

জেনারেল মুনিরের এ বক্তব্যের সঙ্গে পেহেলগামে হামলার কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকতে পারে। কেননা পাকিস্তানের নেতারা অনেক বছর ধরেই এমন ধরনের আদর্শিক বক্তব্য–বিবৃতি দিয়ে আসছেন।

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার স্থলে ছড়িয়ে আছে চেয়ার–টেবিল

সম্পর্কিত নিবন্ধ