কক্সবাজারে সেনা কর্মকর্তা তানজিম হত্যার বিচার শুরু
Published: 19th, March 2025 GMT
কক্সবাজারের চকরিয়ায় ডাকাতি প্রতিরোধে যৌথবাহিনীর অভিযানের সময় ডাকাতদের ছুরিকাঘাতে লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জন (২৩) হত্যার বিচার শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মুনসী আব্দুল মজিদের আদালতে মামলার বাদী সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. আবদুল্লাহ আল হারুনর রশীদের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বেদারুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাষ্ট্রপক্ষে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম-৪, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ও অ্যাডভোকেট তৌহিদুল এহেসান বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু এবং পলাতক আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট দীলিপ কুমার ধর বাদীকে আংশিক জেরা করেন।
এদিন ১৮ আসামির মধ্যে ১২ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক রয়েছেন।
আদালতে উপস্থিত ১২ আসামিরা হলেন- জালাল উদ্দিন (বাবুল), মো.
পলাতক ৬ আসামি হলেন- আবদুল করিম (করিম), আনোয়ারুল ইসলাম (আনোয়ার), মোর্শেদ আলম, শাহ আলম, আবু হানিফ ও মিনহাজ উদ্দিন।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা আদালতের বেঞ্চ সহকারী দেলোয়ার হোসাইন জানান, চার্জ গঠনের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। আগামী ২৫ মার্চ বাদীকে অবশিষ্ট জেরা ও অন্যান্য সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ভোররাতে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়ায় মাছ ব্যবসায়ী রেজাউল করিমের বাড়িতে ডাকাতির সময় সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জন ছুরিকাঘাতে নিহত হন।
এ ঘটনায় যৌথ বাহিনী ঘটনাস্থল থেকে তিন ডাকাতকে আটক এবং তাদের ফেলে যাওয়া একটি দেশীয় বন্দুক ও ছয়টি গুলি উদ্ধার করে। সেনা কর্মকর্তা হত্যার ঘটনায় ডাকাতির প্রস্তুতি, হত্যা ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়।
২০২৫ সালের ১১ মার্চ কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলার ১৮ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। তার আগে, ১৯ জানুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) অরূপ কুমার চৌধুরী আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
ঢাকা/তারেকুর/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত ল কর ম গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
পরবর্তী সরকারের পক্ষে এত সহজে সংস্কার আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না: আসিফ নজরুল
বাংলাদেশে পরবর্তী সরকারের পক্ষে এত সহজে সংস্কার আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। নিজের এই ধারণার পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘কারণ, এত কষ্ট, এত ত্যাগ কখনোই বাংলাদেশের মানুষ কোনো সংস্কারের জন্য বা রাষ্ট্র মেরামতের জন্য করে নাই।’
আজ বুধবার বিকেলে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইন উপদেষ্টা। সহকারী অ্যাটর্নি সার্ভিস অধ্যাদেশের প্রাথমিক খসড়ার ওপর মতবিনিময় সভার আয়োজন করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
‘আমরা অনেক ধরনের সুযোগ পেয়েছি, কোনো সুযোগেরই আমরা সদ্ব্যবহার করতে পারি নাই’ মন্তব্য করে আসিফ নজরুল বলেন, ‘এইবার আমার মনে হয় এত ত্যাগ, এত রক্তক্ষয়ের পর এবার যে আমাদের রাষ্ট্র মেরামতের সুযোগ এসেছে, আমাদের যে একটু সুশাসন প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার যে সুযোগ এসেছে, এবার যদি আমরা সেই সুযোগটা মিস করি...আমার মনে হয় আগামী কয়েক দশকে আমরা এই সুযোগ পাব না। কাজেই এই সুযোগ আমাদের কোনোভাবেই মিস করা চলবে না।’
মতবিনিময় সভায় সহকারী অ্যাটর্নি সার্ভিস অধ্যাদেশের প্রাথমিক খসড়ার ওপর আলোচনায় অংশ নেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। এ সময় খসড়াটির নানা সংকট ও করণীয় বিষয়ে তুলে ধরা হয়। তার জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আরও কনসাল্টেশন (পরামর্শ) করব। আরও মতামত দেব। আমি খুবই খুশি হয়েছি আমাদের এই আইনটাকে একদম তুলাধোনা করে দেওয়া হয়েছে। এটা ভালো হয়েছে। আমাদের জন্য একটা ইনসেন্টিভ তৈরি হয়েছে। আমরা আরও ভালো করার চেষ্টা করব।’
খসড়াটি চূড়ান্ত করতে আরও পরামর্শ নেওয়া হবে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘একটা খুব ভালো সাজেশন আসছে পলিটিক্যাল পার্টির সঙ্গে কনসাল্টেশন। এটা পলিটিক্যাল পার্টির জন্য খুবই রেলেভান্ট (প্রাসঙ্গিক), অবশ্যই করব। আপনাদের সবার সহযোগিতায় ইনশা আল্লাহ আমরা একটা ভালো আইন করতে পারব এবং আমাদের প্রত্যাশা আছে এই সরকারের আমলে অন্তত কিছু নিয়োগ যদি আমরা অ্যাটর্নি সার্ভিসে দিয়ে দিতে পারি—সে চেষ্টা করব।’
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘সব সময় শুনতাম যে নিম্ন আদালতে বা উচ্চ আদালতে যে দুর্নীতি হয় বা অনিয়ম হয় এখানে অনেক পক্ষ থাকে। শুধু যে আপনার সাপোর্ট স্টাফরা বা জাজরা করে, সেটা না। এক শ্রেণির আইনজীবীরা, সরকারি আইনজীবীদেরও ভূমিকা থাকে। আমি কিছু রিসার্চ করেও শুনেছি যে অল্প, অত্যন্ত অল্প টাকা পান উনারা। বিশেষ করে যাঁরা পাবলিক প্রসিকিউটর অফিসে আসেন, তারপরও এটা হওয়ার প্রচণ্ড আগ্রহ থাকে সবার। কারণ, এমন অভিযোগ শুনেছি, এগেইন বলছি অভিযোগ অন্যভাবে নিয়েন না। সরকারি উকিল হয়ে উনারা দেখা যায়, প্রতিপক্ষের পক্ষে কাজ করে টাকা নেন এরকম কিছু উদাহরণ আছে। সবাই না। অনেকে তো আছেন, অনেক ভালো প্র্যাকটিস করেছেন বা করছেন।’
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্পেশাল প্রসিকিউটোরিল অ্যাসিস্ট্যান্ট এহসানুল হক সমাজী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল, আইনজীবী তানিম হোসেন শাওন, আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া, বিজিবির পাবলিক প্রসিকিউটর মো. বোরহান উদ্দিন, জেলা ও দায়রা জজ আদালত ঢাকার পাবলিক প্রসিকিউটর মো. ইকবাল হোসেন, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের প্রমুখ।