জবির লড়াকু ছেলেটির পাশে ছাত্রদলের শাহরিয়ার
Published: 2nd, April 2025 GMT
উচ্চশিক্ষার স্তর পাড়ি দিতে তাকে অনেক লড়াই করতে হয়, নিজের খরচ নিজেকে জোগাড় করে নিতে হয়; গ্রামের সংসারের দিকেও খেয়াল রাখতে হয়। একটি ভালো জীবনের জন্য লড়াকু এই শিক্ষার্থী সন্ধ্যার পর রাস্তার পাশে লুঙ্গি বিক্রি করেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী মোঃ ইমদাদুল হক। তার এই সংগ্রামী জীবনে সম্প্রতি বিপর্যয় ঘটিয়ে দিয়েছে প্রতারক চক্র। প্রতারণা করে তার ৩০ হাজার টাকার লুঙ্গি চুরি করে নিয়ে গেছে চক্রটি।
পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা ইমদাদুল হকের পাশে দাঁড়িয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক মোঃ শাহরিয়ার হোসেন।
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে ৬ দফা দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
বোরকা পরে পালানোর সময় ‘ধর্ষক’কে ধরে গণপিটুনি
জবি সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ইমদাদুল হক ঈদের সময় তার ছোট্ট ব্যবসায় সহযোগিতা করতে কুষ্টিয়া থেকে বাবাকে নিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসেন। আর তার বাবার সরলতার সুযোগে প্রায় ৩০ হাজার টাকা দামের লুঙ্গি নিয়ে চুরি করে নিয়ে গেছেন এক নারী।
ইমদাদুল হকের সঙ্গে সেদিনকার চুরি ঘটনা নিয়ে কথা হয়। তার কথা অনুযায়ী, গত ২৪ মার্চ বিকালের ঘটনা। ঢাকার গেন্ডারিয়ার ঘুণ্টিঘর-সংলগ্ন এলাকা গেন্ডারিয়া মসজিদের পাশে সাধনার গলির সামনে লুঙ্গি বিক্রি করছিলেন ইমদাদুল হকের বাবা। তখন এক নারী এসে ৩০-৪০ টি লুঙ্গি নেওয়ার কথা বলেন। ওই মানের পর্যাপ্ত লুঙ্গি না থাকায় আরো লুঙ্গি আনার জন্য তিনি।
ইমদাদুলের ভাষ্য- তখন লুঙ্গিগুলো পাশের একটি দোকানে বুঝিয়ে রেখে যান তার বাবা। পরে ফিরে এসে দোকান বন্ধ দেখেন। দোকানদার এসে তাকে বলেন, তার কাছ থেকে ওই নারী লুঙ্গিগুলো নিয়ে চলে গেছেন।
ইমদাদুল হক বলেন, “আমি ঋণ করে ঈদ উপলক্ষে লুঙ্গিগুলো ব্যবসার উদ্দেশ্যে ক্রয় করি। কিন্তু ওই প্রতারক আমার ৩০-৩৫ হাজার টাকার মতো মালামাল নিয়ে গেছে। এতে আমি আমার পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ি।”
তিনি বলেন, “আমি জিডি করলে পরদিন পুলিশ এসে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে। তাতে দেখা যায়, দোকানদার লুঙ্গিগুলো প্রতারকের কাছে দিয়ে দিচ্ছেন। পুলিশ ওই নারীকে শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয়। এরপর দায়িত্বে অবহেলার কারণে পুলিশের মধ্যস্থতায় দোকানদারের কাছ থেকে দশ হাজার টাকা ক্ষতিপূরন দেওয়া হয়।
“আমার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহরিয়ার হোসেন ভাই যোগাযোগ করে অর্থ সহযোগিতা করেন,” বলেন ইমদাদুল হক।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশনের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে জবাবে তিনি বলেন, না। কোনো অর্থ সহযোগিতা পানি তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম-আহবায়ক মোঃ শাহরিয়ার বলেন, “আমি মনে করি, দলমত নির্বিশেষে সবার বিপদে পাশে থাকতে হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে সবসময় চেষ্টা করি মানুষের বিপদে পাশে থাকার। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলও যে কারো বিপদে পাশে থাকাকে সমর্থন করে, ইতিবাচক কাজকে গুরুত্ব দিয়ে দেখে। আমি ভবিষ্যতেও জবিয়ানদের সকল সমস্যায় পাশে থাকব। নিজের ক্যাম্পাসের ভাইবোনকে সহায়তা করতে পারার মধ্যে আমি তৃপ্তি খুঁজে পাই।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.
ঢাকা/মেজবা/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল র সহয গ ত
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে দুই স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ১
রাজবাড়ীর পাংশায় প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে দুই স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল রোববার রাতে পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ভুক্তভোগী দুই ছাত্রীর মা ও বাবা গতকাল পৃথকভাবে বাদী হয়ে ধর্ষণের অভিযোগে পাংশা থানায় দুটি মামলা করেন। এতে হাসমত আলী (২২) ও শিহাব মণ্ডল (২০) নামের দুই তরুণকে আসামি করা হয়। তাঁদের বাড়ি উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নে। মামলা করার পর পুলিশ রাতে অভিযান চালিয়ে শিহাবকে গ্রেপ্তার করে।
ভুক্তভোগী দুই স্কুলছাত্রী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাদের একজনের বয়স ১৪ বছর এবং অপরজনের বয়স ১৫ বছর।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়া শেষে দুই বান্ধবী একসঙ্গে বাড়ি ফিরছিল। পথে উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের বনগ্রাম এলাকায় পৌঁছালে তাদের পথ রোধ করে হাসমত ও শিহাব। ধারালো ব্লেড বের করে স্কুলছাত্রী দুজনকে জিম্মি করে রাস্তার অদূরে একটি পানের বরজে জোর করে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে পৃথক স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করেন ওই দুই তরুণ। বিষয়টি কাউকে না জানাতে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চলে যান তাঁরা।
গতকাল রাতে পাংশা মডেল থানায় মামলা করতে আসা ভুক্তভোগী দুই স্কুলছাত্রীর পরিবার জানায়, হাসমত ও শিহাব ওই দুই স্কুলছাত্রীকে মাঝেমধ্যে উত্ত্যক্ত করতেন। এ ঘটনায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।
পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘অষ্টম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে একজনের মা এবং অপরজনের বাবা বাদী হয়ে রোববার রাতে হাসমত আলী ও শিহাব মণ্ডলকে আসামি করে পৃথক দুটি মামলা করেন। রাতেই আসামি শিহাব মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামি হাসমতকে গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
ওসি সালাহ উদ্দিন আরও বলেন, গ্রেপ্তার শিহাব পুলিশের কাছে ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তাঁর পোশাকেও ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তাঁকে সোমবার রাজবাড়ীর আদালতে পাঠানো হবে। দুই স্কুলছাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।