খাল–নালায় পড়ে মৃত্যুর দায় নেয় না, তদন্তও করে না
Published: 21st, April 2025 GMT
চট্টগ্রাম নগরের অরক্ষিত নালা ও খালে পড়ে গত ৬ বছরে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এভাবে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও তা তদন্তে কোনো কমিটি গঠন করেনি নালা ও খালের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এতে কী কারণে এবং কাদের গাফিলতি ও অবহেলায় এ ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে, তা চিহ্নিত করা যাচ্ছে না।
মৃত্যুর ঘটনার মতো তদন্তের দায়িত্বও পরস্পরের কাঁধে চাপিয়ে নীরব আছে দুটি সংস্থা। এ কারণে দায়িত্বে গাফিলতির সঙ্গে জড়িত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বারবার আড়ালে থেকে যাচ্ছেন।
গত শুক্রবার রাত আটটার দিকে মায়ের কোলে থাকা ছয় মাস বয়সী শিশু সেহরিশসহ তিনজনকে নিয়ে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নগরের হিজড়া খালে পড়ে যায়। রিকশায় থাকা শিশুটির মা ও দাদি খাল থেকে উঠে এলেও শিশুটির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। ১৪ ঘণ্টা পরে পরদিন শনিবার সকালে নগরের চাক্তাই খাল থেকে শিশুটির নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনার তিন দিন পার হলেও গতকাল রোববার পর্যন্ত কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করেনি চসিক ও সিডিএ। শুধু এ ঘটনাই নয়, এর আগের ১৩ মৃত্যুর ঘটনায়ও তদন্তের ব্যাপারে নীরব ছিল সংস্থা দুটি।
চট্টগ্রাম নগরের নালা ও খালগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ এবং তত্ত্বাবধানের দায়ভার চসিক ও সিডিএর। সংস্থা দুটির হাতে নগরের ৫৭টি খাল এবং ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার নালার দায়িত্ব।
এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা উচিত ছিল বলে স্বীকার করেন চসিক ও সিডিএর দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তবে কেন গঠন করা হয়নি, তার দায় নিতে রাজি হননি তাঁরা।
আরও পড়ুনঅটোরিকশা উল্টে পড়ল খালে, নিখোঁজ ছয় মাসের শিশু১৮ এপ্রিল ২০২৫তদন্তে অনীহা দুই সংস্থার
গত ৬ বছরে নগরে খাল-নালায় পড়ে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০ সালে ২ জন, ২০২১ সালে ৫, ২০২৩ সালে ৩, ২০২৪ সালে ৩ এবং চলতি বছর ১ জন।
খাল ও নালায় পড়ে মারা যাওয়া ১৪ জনের মধ্যে ৬টিই শিশু। তাদের একজনের বয়স মাত্র ছয় মাস। নারী মারা গেছেন পাঁচজন, আর পুরুষ তিনজন। তাঁদের মধ্যে একজনের মরদেহ এখনো পাওয়া যায়নি।
এই ১৪ জনের মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে নগরের চশমা খালে পড়ে। মহেশ খালে পড়ে মারা গেছেন তিনজন। চাক্তাই, কলাবাগিচা, নাসির খাল ও হিজড়া খালে একজন করে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি তিনজনের মৃত্যু হয়েছে নালায় পড়ে।
যে খালগুলোতে পড়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে, সবগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে সিডিএ। সেখানে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ করছে সংস্থাটি। ২০১৮ সালে নগরের ৩৬টি খাল ও বড় নালাগুলোতে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ শুরু করে সিডিএ, এ কাজ এখনো চলমান। আর যেসব নালায় পড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে, সেগুলো সিটি করপোরেশনের আওতাধীন।
মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও কেন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি, জানতে চাইলে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি। তবে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নালা ও খালে পড়ে মৃত্যুর ঘটনায় অবশ্যই তদন্ত কমিটি হওয়া উচিত। হিজড়া খালে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় চসিক ও সিডিএ যৌথভাবে তদন্ত করতে পারে। চাইলে বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনও করতে পারে। তবে এটি নির্ভর করছে সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।
কাজী হাসান বিন শামস দাবি করেন, মুরাদপুরে চশমা খালে সবজি বিক্রেতা ছালেহ আহমেদের (৫০) তলিয়ে যাওয়ার ঘটনার পর খালের পাশে স্থায়ী নিরাপত্তাবেষ্টনী নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। বর্তমানে ১৯টি খালে দেওয়া হয়েছে। বাকি খালগুলোতেও কাজ চলছে। আর নগরের আগ্রাবাদে যে নালায় পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী মারা গিয়েছিলেন, সেটি ছিল সিটি করপোরেশনের। এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি করলে তারা করতে পারত।
আরও পড়ুনচট্টগ্রামে খালে পড়ে নিখোঁজ শিশুর লাশ ১৪ ঘণ্টা পর উদ্ধার১৯ এপ্রিল ২০২৫বৃষ্টি হলে এসব নালা আর সড়ক পানিতে একাকার হয়ে যায়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ত য র ঘটন য় জন র ম ত য ১৪ জন র ম তদন ত ক গঠন কর ত নজন নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
সব খাবারে কি কারও অ্যালার্জি হতে পারে?
প্রশ্ন: আমার একেক সময় একেক খাবারে অ্যালার্জি হয়। দীর্ঘদিন ধরে কোনো খাবারই ঠিকমতো খেতে পারি না। অ্যালার্জিতে ত্বকের বিভিন্ন স্থানে র্যাশ ওঠে। আমি একজন নারী, বয়স ২৩। আমি কি খেয়ে বাঁচব?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
পরামর্শ: আপনার বর্ণনা শুনেই ভোগান্তির মাত্রাটা অনুভব করতে পারছি। কিন্তু আপনি নির্দিষ্ট সময়ের কথা উল্লেখ করেননি। ঠিক কত মাস বা বছর ধরে আপনার এই সমস্যা হচ্ছে? আপনি কি ছোটবেলা থেকেই অ্যালার্জিতে আক্রান্ত? সে ক্ষেত্রে আগে কোনো চিকিৎসা নিয়েছেন কি না, তা–ও জানা প্রয়োজন।
নানা কারণে হতে পারে অ্যালার্জি। কখনো এটি বংশগত। আবার পরিবেশগত কিছু কারণও থাকতে পারে। নির্দিষ্ট কিছু খাবার থেকেও অ্যালার্জি হতে পারে। কিন্তু সব খাবারেই আপনার অ্যালার্জি হচ্ছে বলে যেটা মনে করছেন, তা ঠিক নয়। কিছু কিছু খাবার থেকে অ্যালার্জি হতে পারে, কিন্তু সব খাবারেই অ্যালার্জি নেই।
আরও পড়ুনচুলকানি শুধু অ্যালার্জি বা চর্মরোগ নয়, হতে পারে মারাত্মক সব রোগের লক্ষণ১৩ অক্টোবর ২০২৫আপনি একজন অ্যালার্জি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সরাসরি পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যালার্জি প্যানেল টেস্ট করিয়ে নিন। এই টেস্টের মাধ্যমে কোন কোন খাবারে আপনার অ্যালার্জি রয়েছে, সুনির্দিষ্টভাবে জানতে পারবেন।
এ ছাড়া বাসাবাড়ির ধুলাবালু, পুরোনো শীতের কাপড়, লেপতোশকে জমা হওয়া মাইট কিংবা পোষাপ্রাণীর পশম নাকে গেলেও অ্যালার্জি হতে পারে। আপনার ক্ষেত্রে কোনটি বেশি দায়ী, এই পরীক্ষার মাধ্যমে তা শনাক্ত করা যাবে।
বর্তমানে অ্যালার্জির কারণে আপনার ত্বকে যে র্যাশ উঠেছে, তা–ও সরাসরি না দেখে ওষুধপথ্য দেওয়া সম্ভব না। র্যাশের ধরন অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে। আপনি সমস্যাটিকে আর অবহেলা করবেন না। আশা করি সুচিকিৎসায় উপকার পাবেন।
আরও পড়ুনকেন আমরা চোখ ঘষি, এতে চোখের কি কোনো ক্ষতি হয়?১৫ নভেম্বর ২০২৫