চট্টগ্রাম নগরের অরক্ষিত নালা ও খালে পড়ে গত ৬ বছরে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এভাবে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও তা তদন্তে কোনো কমিটি গঠন করেনি নালা ও খালের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এতে কী কারণে এবং কাদের গাফিলতি ও অবহেলায় এ ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে, তা চিহ্নিত করা যাচ্ছে না।

মৃত্যুর ঘটনার মতো তদন্তের দায়িত্বও পরস্পরের কাঁধে চাপিয়ে নীরব আছে দুটি সংস্থা। এ কারণে দায়িত্বে গাফিলতির সঙ্গে জড়িত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বারবার আড়ালে থেকে যাচ্ছেন।

গত শুক্রবার রাত আটটার দিকে মায়ের কোলে থাকা ছয় মাস বয়সী শিশু সেহরিশসহ তিনজনকে নিয়ে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নগরের হিজড়া খালে পড়ে যায়। রিকশায় থাকা শিশুটির মা ও দাদি খাল থেকে উঠে এলেও শিশুটির খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। ১৪ ঘণ্টা পরে পরদিন শনিবার সকালে নগরের চাক্তাই খাল থেকে শিশুটির নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনার তিন দিন পার হলেও গতকাল রোববার পর্যন্ত কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করেনি চসিক ও সিডিএ। শুধু এ ঘটনাই নয়, এর আগের ১৩ মৃত্যুর ঘটনায়ও তদন্তের ব্যাপারে নীরব ছিল সংস্থা দুটি।

চট্টগ্রাম নগরের নালা ও খালগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ এবং তত্ত্বাবধানের দায়ভার চসিক ও সিডিএর। সংস্থা দুটির হাতে নগরের ৫৭টি খাল এবং ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার নালার দায়িত্ব।

এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা উচিত ছিল বলে স্বীকার করেন চসিক ও সিডিএর দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তবে কেন গঠন করা হয়নি, তার দায় নিতে রাজি হননি তাঁরা।

আরও পড়ুনঅটোরিকশা উল্টে পড়ল খালে, নিখোঁজ ছয় মাসের শিশু১৮ এপ্রিল ২০২৫

তদন্তে অনীহা দুই সংস্থার

গত ৬ বছরে নগরে খাল-নালায় পড়ে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০ সালে ২ জন, ২০২১ সালে ৫, ২০২৩ সালে ৩, ২০২৪ সালে ৩ এবং চলতি বছর ১ জন।

খাল ও নালায় পড়ে মারা যাওয়া ১৪ জনের মধ্যে ৬টিই শিশু। তাদের একজনের বয়স মাত্র ছয় মাস। নারী মারা গেছেন পাঁচজন, আর পুরুষ তিনজন। তাঁদের মধ্যে একজনের মরদেহ এখনো পাওয়া যায়নি।

এই ১৪ জনের মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে নগরের চশমা খালে পড়ে। মহেশ খালে পড়ে মারা গেছেন তিনজন। চাক্তাই, কলাবাগিচা, নাসির খাল ও হিজড়া খালে একজন করে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। বাকি তিনজনের মৃত্যু হয়েছে নালায় পড়ে।

যে খালগুলোতে পড়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে, সবগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে সিডিএ। সেখানে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ করছে সংস্থাটি। ২০১৮ সালে নগরের ৩৬টি খাল ও বড় নালাগুলোতে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ শুরু করে সিডিএ, এ কাজ এখনো চলমান। আর যেসব নালায় পড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে, সেগুলো সিটি করপোরেশনের আওতাধীন।

মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও কেন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি, জানতে চাইলে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি। তবে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নালা ও খালে পড়ে মৃত্যুর ঘটনায় অবশ্যই তদন্ত কমিটি হওয়া উচিত। হিজড়া খালে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় চসিক ও সিডিএ যৌথভাবে তদন্ত করতে পারে। চাইলে বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনও করতে পারে। তবে এটি নির্ভর করছে সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

কাজী হাসান বিন শামস দাবি করেন, মুরাদপুরে চশমা খালে সবজি বিক্রেতা ছালেহ আহমেদের (৫০) তলিয়ে যাওয়ার ঘটনার পর খালের পাশে স্থায়ী নিরাপত্তাবেষ্টনী নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। বর্তমানে ১৯টি খালে দেওয়া হয়েছে। বাকি খালগুলোতেও কাজ চলছে। আর নগরের আগ্রাবাদে যে নালায় পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী মারা গিয়েছিলেন, সেটি ছিল সিটি করপোরেশনের। এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি করলে তারা করতে পারত।

আরও পড়ুনচট্টগ্রামে খালে পড়ে নিখোঁজ শিশুর লাশ ১৪ ঘণ্টা পর উদ্ধার১৯ এপ্রিল ২০২৫বৃষ্টি হলে এসব নালা আর সড়ক পানিতে একাকার হয়ে যায়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ত য র ঘটন য় জন র ম ত য ১৪ জন র ম তদন ত ক গঠন কর ত নজন নগর র

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে ফের করোনাক্রান্ত রোগীর মৃত্যু

সিলেটে পাঁচ দিনের ব্যবধানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১জুলাই) দিবাগত রাত ২টার দিকে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ওই ব্যক্তি। মারা যাওয়া ব্যক্তির বয়স ছিল ৮০ বছর। তিনি মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার বাসিন্দা। সিলেটে এনিয়ে নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুই জনের মৃত্যু হলো।

বুধবার (২ জুলাই) দুপুরে শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. মিজানুর রহমান বলেন, “৮০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি গত ২১ জুন হাসপাতালে ভর্তি হন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।”

এদিকে, বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এদের মধ্যে একজনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।

এখন পর্যন্ত সিলেটে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫ জন। এই সময়ে করোনা পরীক্ষার জন্য ৪২২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৬ জুন সিলেটে করোনায় একজনের মৃত্যু হয়।

ঢাকা/নূর/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আমাজনের বৃষ্টিবনে
  • দালাই লামার উত্তরসূরি কীভাবে নির্বাচন করা হবে
  • ‘উপহাসে এখন আর খারাপ লাগে না, কষ্ট হয় না’
  • বিয়ের দুই সপ্তাহ যেতেই গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু লিভারপুল তারকার
  • শুল্ক ছাড়া বিদেশ থেকে ফেরার সময় বছরে আনা যাবে একটি ফোন
  • ব্যাগেজ রুলস সংশোধন: শুল্ক ছাড়া ১০০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার আনা যাবে
  • করোনাভাইরাস: ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু এক, আক্রান্ত ২৭
  • শরীয়তপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল একজনের
  • নোয়াখালীতে করোনায় চলতি বছরের প্রথম মৃত্যু
  • সিলেটে ফের করোনাক্রান্ত রোগীর মৃত্যু