খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে দুই ঘণ্টা শাহবাগ মোড়ে ব্লকেড দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের অবরোধে গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত টানা দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা আজ বুধবার সারাদেশে স্কুল-কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস বর্জন এবং প্রতীকী অনশন পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে একই দাবিতে ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আমরণ অনশনে বসেছেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের নেতাকর্মী। রাত ১০টা থেকে ঢাবি শাখার সদস্য সচিব মহির আলম, কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরী, ছাত্র সংসদ নেতা রেজোয়ান আহমেদ রিফাত, রিমন চৌধুরীসহ ১০-১২ শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেছেন।
গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। তারা ‘ব্লকেড, শাহবাগ ব্লকেড; আমার ভাই অনশনে, ইন্টেরিম কী করে; শিক্ষা সন্ত্রাস একসঙ্গে চলে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। অবরোধে শাহবাগের চারপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এ সময় কর্মসূচি ঘোষণা করে ঢাবির বাংলা বিভাগের ছাত্র মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, কুয়েটের শিক্ষার্থীরা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। তবে কুয়েট ভিসির কোনো নড়চড় নেই। কুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বুধবার সারাদেশে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস বর্জনের আহ্বান জানাচ্ছি। সব ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে বিকেল ৩টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে।
এ সময় অনলাইনে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন কুয়েটের অনশনরত শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ সৈকত। তিনি বলেন, আমাদের এক দফা দাবি– উপাচার্য অধ্যাপক ড.
এদিকে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল ঢাকায় এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যুগ্ম সদস্য সচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত।
আমরণ অনশনে অসুস্থ কুয়েটের চার শিক্ষার্থী
আমরণ অনশন কর্মসূচিতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কুয়েটের চার শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিক্ষকরা একাধিকবার শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানালেও সাড়া দেননি তারা।
গতকাল দুপুর ১২টার দিকে অনশনরত শিক্ষার্থী আজিমুল হক সিয়াম কিছুটা অসুস্থ বোধ করলে কুয়েটের মেডিকেল সেন্টারে তাঁকে ভর্তি করা হয়। দুপুর দেড়টার দিকে নামাজ পড়ার সময় অনশনরত শিক্ষার্থী সাদিক সিদ্দিক ফারিব অজ্ঞান হয়ে পড়েন। প্রথমে তাঁকে কুয়েটের মেডিকেল সেন্টার, পরে নগরীর বেসরকারি সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ শিক্ষা উপদেষ্টার
কুয়েট শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সিআর আবরার। গতকাল কুয়েটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফোনালাপকালে তিনি এ আহ্বান জানান। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপদেষ্টা আন্দোলন ও অনশনরত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অবর ধ শ হব গ অনশনরত শ ক ষ র থ আমরণ অনশন শ হব গ গতক ল অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
পিএসসিকে চাপ দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে: উপদেষ্টা আসিফ
সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) চাকরি প্রত্যাশী ও শিক্ষার্থীদের অনশন তীব্র আন্দোলনের মুখে ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার মধ্যস্থতায় পিএসসি প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত নেয় পিএসসি। তবে দেশের একটি গণমধ্যমের প্রতিবেদনে পিএসসির এমন সিদ্ধান্তে ‘উপদেষ্টা আসিফের বলপ্রয়োগ রয়েছে’ বলে অভিযোগ করা হয়।
এ অভিযোগের বিষয়ে এবার নিজের বক্তব্য জানিয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, ওই রিপোর্টে আমার বিরুদ্ধে পিএসসিকে চাপ দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়। তারপর সেটাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে টার্গেটেড প্রোপাগান্ডা।
মঙ্গলবার নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাসে তিনি একথা বলেন।
ফেসবুক পোস্টে উপদেষ্টা বলেন, পিএসসি সংস্কারের দাবিতে প্রায় ৮০ ঘণ্টা অনশন করে চার জন চাকরিপ্রার্থী ঝুকিপূর্ণ শারীরিক অবস্থায় পৌঁছালে পিএসসি এবং তাদের মধ্যে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিই। রাজু ভাস্কর্যে বসেও বারবার বলেছি- পিএসসি সাংবিধানিক, স্বাধীন ও স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান। আমি পিএসসি এবং আপনাদের মধ্যে ব্রিজ হতে পারি, সিদ্ধান্ত দেওয়ার এখতিয়ার আমার নেই’। প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি সুরাহা না করে লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার বিরুদ্ধে ছিলেন আন্দোলনকারীরা।
তিনি বলেন, পিএসসি সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে রাজুতে বসেই ফোনে কথা বলেছি। পিএসসির চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম স্যার তিনজন সদস্য পাঠান আলোচনার জন্য। টিএসসিতে সাংবাদিক সমিতির অফিসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি এবং পিএসসির সদস্যদের মধ্যকার দীর্ঘ আলোচনার পর পিএসসি লিখিত পরীক্ষা আপাত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়। তা ঘোষণা করেন পিএসসির একজন সদস্য। এই প্রক্রিয়ার কোনো অংশেই পিএসসিকে আমি কোনো চাপ প্রয়োগ করিনি। পিএসসি এবং ছাত্রদের মধ্যে ব্রিজ হিসেবে সমস্যার সমাধান করাই ছিল আমার লক্ষ্য। তাছাড়া অনশনরত চাকরি প্রার্থীদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছিল দ্রুত।
ওই রিপোর্ট প্রসঙ্গে উপদেষ্টা আসিফ বলেন, রিপোর্টে আমার বিরুদ্ধে পিএসসিকে চাপ দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়। তারপর সেটাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে টার্গেটেড প্রোপাগান্ডা। গণ-অভ্যুত্থানের একজন ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে দায়িত্ব পালন করছি। ফলে শিক্ষার্থীদের যেকোনও যৌক্তিক দাবি কিংবা সমস্যায় এগিয়ে যাওয়াটা আমার দায়িত্ব। আমি সে দায়িত্ব পালন করছি এবং ভবিষ্যতেও করবো।