গোপনে ধারণ করা ধর্ষণের ভিডিও প্রকাশের হুমকি, গ্রেপ্তার ১
Published: 23rd, April 2025 GMT
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এক কলেজ ছাত্রীকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করে গোপনে সেই ভিডিও ধারণ করা হয়। পরে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল ও অর্থ আদায়ের অভিযোগে রকিউজ্জামান রকি নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রকি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে রকিউজ্জামান রকিকে প্রধান আসামি করে দেবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় রকির বন্ধু মামুনের নাম উল্লেখসহ আরও দুই-তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পরপরই দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে রকিকে গ্রেপ্তার করে।
গ্ৰেপ্তার রকিউজ্জামান রকি উপজেলার শালডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দেবীগঞ্জ সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী এবং অভিযুক্ত রকিউজ্জামান রকি একই শ্রেণির শিক্ষার্থী। প্রথমে তারা বন্ধুত্ব গড়ে তোলে এবং পরে ফেসবুকে রকি ভুক্তভোগিকে প্রেমের প্রস্তাব দিতে থাকে। প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় রকি প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওঠে।
গত বছরের ২৩ অক্টোবর সকালে ‘কম্পিউটার শেখানোর’ কথা বলে কৌশলে ভুক্তভোগীকে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের দোতলায় একটি কক্ষে নিয়ে যায় এবং সেখানেই তাকে ধর্ষণ করে। এসময় রকির বন্ধু মামুন গোপনে সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে।
পরবর্তীতে সেই ভিডিও দেখিয়ে রকি একাধিকবার ব্ল্যাকমেইল করে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে তার কাছ থেকে অর্থ আদায় করে। পরে মেয়েটির নামে একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে সেখানে নগ্ন ছবি আপলোড করে রকি।
সবশেষ গত ১০ এপ্রিল রকি মেয়েটিকে আবারও শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হলে দুই লাখ টাকা দাবি করে এবং ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি দেয়। ভুক্তভোগী বিষয়টি নিয়ে কান্নাকাটি করলে পরিবার তা জানতে পারে।
পরিবারের সদস্যরা প্রথমে শালডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুল ইসলামের কাছে অভিযোগ করেন। চেয়ারম্যান রকির বাবাকে বিষয়টি জানিয়ে ছেলেকে সংশোধনের জন্য সতর্ক করেন। কিন্তু এতে রকি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও-ছবি পোস্ট করা অব্যাহত রাখে। এক পর্যায়ে নিরুপায় হয়ে মেয়েটির বাবা দেবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
ঢাকা/নাঈম’/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে এটিএম বুথে ধর্ষণের অভিযোগ, অভিযুক্ত পলাতক
গাজীপুরের শ্রীপুরে অধিক বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক নারী পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একটি এটিএম বুথের নিরাপত্তা প্রহরীর বিরুদ্ধে।
সোমবার (১৬ জুন) সকালে ওই নারী শ্রমিকের বাবা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
রবিবার (১৫ জুন) সকালে শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ গ্রামের এমসি বাজার এলাকায় তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন একটি ব্যাংকের এটিএম বুথে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ।
ভুক্তভোগী নারী স্থানীয় একটি কারখানায় ৬ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন। অভিযুক্ত নিরাপত্তা প্রহরী মো. লিটন (৩৫) তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন বুথে দায়িত্ব পালন করতেন।
লিটন ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার ডুবাইল গ্রামের মৃত আব্দুল আউয়ালের ছেলে। বর্তমানে তিনি মুলাইদ গ্রামের আতাব উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন এবং ফাস্ট সলিউশন লিমিটেড নামের একটি নিরাপত্তা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের অধীনে চাকরি করতেন।
থানায় দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, এটিএম বুথে টাকা তোলার সূত্র ধরে এই নারী শ্রমিকের সঙ্গে পরিচয় হয় লিটনের। একপর্যায়ে লিটন ভুক্তভোগীকে ১২ হাজার টাকা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রবিবার সকালে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে ডেকে আনেন। সকাল ৬টার দিকে বুথে গেলে লিটন তাকে ভেতরে একটি ছোট কক্ষে বসিয়ে রাখেন এবং জানান যে, নতুন চাকরির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসে তার সাক্ষাৎকার নেবেন।
ভিকটিমের বাবা দুইবার মেয়ে চাকরির বিষয়ে খোঁজ নিলে লিটন জানান, চিন্তার কিছু নেই, সব ঠিক আছে। তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেব। এরপর আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে লিটন কক্ষে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। বাড়ি ফেরার পথে মেয়ে তার বাবাকে ঘটনাটি জানায়।
ঘটনার বিষয়ে ফাস্ট সলিউশন লিমিটেডের সুপারভাইজার মো. হানিফের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল বারিক জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্ত লিটন পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। দ্রুতই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরো জানান, ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সম্পন্ন করা হয়েছে।
ঢাকা/রফিক/টিপু