মদিনায় হিজরতের পর একটি মসজিদ নির্মাণ করা জরুরি হয়ে পড়ে। কুবা পল্লীতে একটি মসজিদের জায়গা পাওয়া যায়। কুবা মসজিদ নির্মাণকাজে সবার সঙ্গে মহানবী (সা.) নিজে অংশগ্রহণ করেন। কুলসুম (রা.)-এর নিজস্ব একখণ্ড জমিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। পবিত্র কোরআনের সুরা তাওবায় এই মসজিদের উল্লেখ আছে। হিজরতের সময় মুহাম্মদ (সা.) মদিনায় আসার পথে কুবা নামক স্থানে এসে ১৪ দিন অবস্থান করেন। এখানে মসজিদটি নির্মাণ করেন। এটি নবীজির (সা.
এ মসজিদে নামাজ আদায়ের ফজিলত প্রসঙ্গে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে যে, ‘মসজিদে কুবায় দুই রাকাত নামাজ একটি ওমরাহর সমান।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৩২৪)।
আরও পড়ুন মসজিদে নববি ভ্রমণ করা যাবে ঘরে বসেই৩০ জানুয়ারি ২০২৩ইতিহাস থেকে জানা যায়, কুবা মসজিদের জায়গাটি ছিল কুলসুম ইবনুল হিদম (রা.) নামের এক ব্যক্তির। খেজুর শুকানোর পতিত জমি। তিনি ছিলেন আমর ইবনে আওফের গোত্রপতি। এখানে রাসুল (সা.) ১৪ দিন অবস্থান করেন ও তার আতিথ্য গ্রহণ করেন।
মক্কা থেকে ৩২০ কিলোমিটার উত্তরে এবং মদিনার দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে অবস্থিত এই মসজিদ কুবা গ্রামে অবস্থিত। মসজিদে নববি থেকে এর দূরত্ব মাত্র পাঁচ কিলোমিটার কুবা একটি বিখ্যাত কূপের নাম। সময়ের পরিক্রমায় এ কূপকে কেন্দ্র করে যে জনবসতি গড়ে উঠেছে। এই সূত্রে মসজিদের নাম হয়ে যায় মসজিদে কুবা।
মসজিদে কুবা শুরু থেকে এ পর্যন্ত কয়েক দফা সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ করা হয়। মহানবীর (সা.) আমলের পর ইসলামের তৃতীয় খলিফা উসমান (রা.) তার খেলাফতকালে মসজিদে কুবার সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ করেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে আরও বেশ কয়েকবার এই মসজিদের পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়। ৪৩৫ হিজরিতে আবু ইয়ালি আল-হোসায়নি মসজিদের মিহরাব তৈরি করেন। উসমানি সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদ মসজিদটির সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করেন। ও তার ছেলে সুলতান প্রথম আবদুল মাজিদ ১২৪৫ হিজরিতে সর্বশেষ সংস্কার করেন।
আরও পড়ুনমদিনার প্রাণকেন্দ্র মসজিদে নববি০৩ জুন ২০২৪১৯৮৬ সালে বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ আলে সৌদের সময় সম্প্রসারণ করা হয়। পুরো মসজিদে এক ধরনের সাদা পাথর ব্যবহার করা হয়, যা অন্য কোনো মসজিদে সাধারণত দেখা যায় না।
মসজিদে কুবায় চারটি উঁচু মিনার, ছাদে ১টি বড় গম্বুজ এবং ৫টি অপেক্ষাকৃত ছোট গম্বুজ রয়েছে। এছাড়া ছাদের অন্য অংশে ৫৬টি ছোট গম্বুজের অবয়ব রয়েছে। ২০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন এই মসজিদে।
মূল মসজিদ ছাড়াও এখানে রয়েছে আবাসিক এলাকা, অফিস, অজুখানা, দোকান ও লাইব্রেরি। তবে মসজিদের মূল আকর্ষণ বিশাল গম্বুজ এবং চার কোনায় চারটি সুউচ্চ মিনার। মসজিদের চতুর্দিকের সবুজ পাম গাছের বলয় মসজিদটিকে বাড়তি সৌন্দর্য দিয়েছে। মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন প্রচুর মানুষ আসেন। মসজিদে নারী ও পুরুষদের নামাজের জায়গা ও প্রবেশ পথ আলাদা। অজুর জায়গাও ভিন্ন। সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মসজিদের ভেতরের কারুকাজও বেশ মনোমুগ্ধকর।
আরও পড়ুনযেভাবে নির্মিত হলো মসজিদে নববি২০ ডিসেম্বর ২০২৪মূল মসজিদ ভবনের মাঝে একটি খালি জায়গা আছে, সেখানেও নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে। দামি কার্পেট বিছানো মেঝেতে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন। এছাড়াও রয়েছে জমজম পানির ব্যবস্থা।
মসজিদে ৭টি মূল প্রবেশ দ্বার ও ১২টি সম্পূরক প্রবেশ পথ রয়েছে। প্রতিটি ১০ লাখ ৮০ হাজার থার্মাল ইউনিট বিশিষ্ট তিনটি কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র রয়েছে।
সম্প্রতি মসজিদে নববি থেকে মসজিদে কুবায় পায়ে হেঁটে যাওয়া সহজ করার জন্য কুবা স্কয়ার করা হয়েছে। মসজিদে নববি থেকে পায়ে হেঁটে যেতে প্রায় ৪৫ মিনিট সময় লাগে। ব্যাটারি চালিত গাড়িতেও যাওয়া যায়। ইবনে উমর (রা.)-এর হাদিস থেকে জানা যায়, রাসুল (সা.) মসজিদে কুবাতে যেতেন (কখনও) হেঁটে এবং কখনও বাহনে চড়ে। কুবা মসজিদে দুই রাকাত নামাজ পড়তেন। (বুখারি)
আরও পড়ুনমক্কার পর পবিত্রতম শহর মদিনা৩০ জুন ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন র ম ণ কর মসজ দ র গম ব জ ণ কর ন প রথম অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের
ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।