সোনারগাঁওয়ে অস্ত্র ও গুলিসহ আলী আকবর খান (৩০) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত যুবক মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার খানের ছেলে । 

সে একজন মাদকাসক্ত ও উচ্ছৃঙ্খল ছিলো এবং প্রায় সময় মাদকের টাকার জন্য তার বাবার ওপর নির্যাতন করতো বলে জানায় তার পরিবার।

শুক্রবার (৯ মে) দিবাগত রাত পৌঁনে তিনটায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ অংশের মেঘনা টোল প্লাজা এলাকায় ঢাকাগামী লেনে গাড়ি তল্লাশিকালে একটি মোটরসাইকেলসহ পুলিশ তাকে আটক করে।

এ সময় তার দেহ তল্লাশি করে ৮ রাউন্ড গুলিভর্তি একটি বিদেশী রিভলবার উদ্ধার করে পুলিশ।  সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মফিজুর রহমান বলেন"মহাসড়কে চেকপোস্ট করার সময় একটি মোটরসাইকেল আরোহী যুবককে সন্দেহ হলে তার দেহ তল্লাশি করে ৮ রাউন্ড গুলিসহ একটি রিভলবার উদ্ধার করে পুলিশ।

তার বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম শেষে শনিবার বিকেলে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও য বক ন র য়ণগঞ জ স ন রগ

এছাড়াও পড়ুন:

হাদিকে গুলি: ‘রিকশা ভেসে আসছিল বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার’

রাজধানীর পুরানা পল্টনে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রকাশ্যে গুলির ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও স্বাধীন প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি। জুমার নামাজের পর তুলনামূলক ফাঁকা রাস্তায় ব্যাটারিচালিত একটি রিকশায় চলন্ত অবস্থায় তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। মাথায় গুলি লেগে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

দুপুর ২টা ২৪ মিনিটের দিকে বক্স কালভার্ট সড়ক হঠাৎই গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে। আশেপাশের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। রিকশার ভেতর থেকে ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ বলে আর্তচিৎকার করতে করতে রক্তাক্ত হাদি লোকজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। রিকশাটি থামানো হলে দেখা যায় তার মাথা ও কান বেয়ে রক্ত ঝরছে।

আরো পড়ুন:

গুলিবিদ্ধ হাদির মঞ্চ: ‘প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে আ.লীগ- সন্দেহে সবাই’

হাদির ওপর হামলাকারীদের ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম এনসিপির

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং নিকটস্থ এক ভবনে কর্মরত রাশেদ ইসলাম জানান, জুমার নামাজ শেষে ভবনের সামনে দাঁড়িয়েই তিনি পুরো ঘটনাটি দেখেছেন। তার বর্ণনায়, ফকিরাপুল দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেল কিছুটা দূর থেকে হাদির রিকশাকে অনুসরণ করছিল। মোটরসাইকেলে দুজন ব্যক্তি ছিলেন; দুজনেরই হেলমেট পরা ছিল। পিছনে বসা ব্যক্তির গায়ে কালো চাদর, যাতে তার হাতও ঢাকা ছিল।

রাশেদের ভাষ্যে, মোটরসাইকেলটি রিকশার খুব কাছে আসতেই পেছনে বসা ব্যক্তি চাদরের ভেতর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র বের করে হাদিকে লক্ষ্য করে কাছ থেকে গুলি চালান। মুহূর্তের মধ্যে গুলি ছুড়ে তারা দ্রুতগতিতে বিজয়নগরের দিকে পালিয়ে যান। গুলির শব্দে রাস্তায় থাকা মানুষজন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন। পরে রিকশায় থাকা আরেক যাত্রী আহত হাদিকে ধরে রাখেন এবং উপস্থিত লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

ঘটনার পর পুলিশ, র‍্যাব, সিআইডি, পিবিআই এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। আশপাশের একাধিক ভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। ফুটেজে দেখা যায়, একটি মোটরসাইকেলে দুই আরোহী রিকশাটিকে অনুসরণ করছে এবং চলন্ত অবস্থায় কাছ থেকে গুলি চালাচ্ছে। দুজনেরই হেলমেট পরা থাকায় পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।

বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় রাস্তায় রক্তের দাগ এবং এলাকা ঘিরে রাখা হলুদ ফিতা। সিআইডির অপরাধ শনাক্তকরণ দলের সদস্যরা তিনটি স্থান থেকে রক্তসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছেন। দলের পরিদর্শক আবদুর রশীদ জানান, আলামত যাতে নষ্ট না হয় সে জন্য জায়গাটি কর্ডন করে রাখা হয়েছে।

মতিঝিল জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার হোসাইন মোহাম্মদ ফারাবী জানান, বিভিন্ন সংস্থা একযোগে কাজ করছে হামলাকারীদের শনাক্ত করতে। তবে কারা এবং কী উদ্দেশ্যে এই হামলা চালিয়েছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। ফুটেজ বিশ্লেষণ, সাক্ষ্য সংগ্রহ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে হামলাকারীদের ধরতে তৎপরতা চলছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে আলোচিত ওসমান হাদি গত বছর গণ–অভ্যুত্থানের পর সক্রিয় হয়ে ওঠেন। ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং এলাকাব্যাপী গণসংযোগ করছিলেন। এমন সময় তার ওপর প্রকাশ্যে গুলির এই হামলায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং রাজনৈতিক মহলেও তীব্র আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, ঘটনাটিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে এবং দ্রুত হামলাকারীদের শনাক্ত করা হবে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ