সামাজিক নিরাপত্তা খাত থেকে সঞ্চয়পত্রের সুদ, আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ বেশ কিছু কর্মসূচি বাদ দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তাসহ নতুন কিছু প্রকল্প অন্তর্ভুক্তও হবে। সার্বিকভাবে এ খাত নিয়ে নতুন বাজেটে বেশ সংস্কারের ঘোষণা থাকছে। তাই সামাজিক নিরাপত্তা খাতের চলমান আটটি কর্মসূচিতে ভাতা ও কিছু ক্ষেত্রে উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়লেও আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সার্বিকভাবে এ খাতে বরাদ্দ কমছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণে গঠিত টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের আওতায় থাকা ২১টি কর্মসূচিকে দরিদ্র মানুষের সুরক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মত দেওয়া হয়েছে। সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, কিন্তু সামাজিক নিরাপত্তার অন্তর্ভুক্ত খাতগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো অবসরভোগী সরকারি কর্মচারীর পেনশন, কৃষি খাতে ভর্তুকি ও সঞ্চয়পত্রের সুদ পরিশোধ। এ ধরনের কর্মসূচিতে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৭২ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা, যা এ খাতে মোট বরাদ্দের ৫৩ শতাংশ। 

সরকারের জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলপত্রের (এনএসএসএস) সঙ্গে এই কর্মসূচিগুলোর মিলও নেই। তাই সামঞ্জস্যহীন কর্মসূচি বাদ দিয়ে প্রকৃত অর্থে সামাজিক সুরক্ষায় বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে টাস্কফোর্স। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত বৈষম্যহীন টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সম্পদ আহরণবিষয়ক টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে এসব সুপারিশ করা হয়। শুধু টাস্কফোর্সই নয়, বিভিন্ন দাতা সংস্থা, দেশি-বিদেশি গবেষণা প্রতিষ্ঠানসহ অর্থনীতিবিদরা বহুদিন থেকেই সামাজিক সুরক্ষা খাতকে ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দিয়ে আসছেন। 
জানতে চাইলে বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, সম্প্রতি সচিবালয়ে উপদেষ্টা ড.

সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতকে সাজানো হচ্ছে। এ খাতের পরিচালন বাজেটের অংশে সঞ্চয়পত্রে সুদ বাবদ যে বরাদ্দ রাখা হতো, তা অন্য খাতে দেখানো হবে– এমনটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে সরকারি কর্মচারীর পেনশন, কৃষি খাতে ভর্তুকিসহ অন্যান্য কর্মসূচি এ খাতেই অন্তর্ভুক্ত থাকবে। 
তিনি আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তাসহ এ খাতে অন্তর্ভুক্ত হবে। এ খাত থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ বেশ কিছু প্রকল্প বাদ যাবে। তবে এখন বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) চূড়ান্ত হয়নি। তাই কতগুলো প্রকল্প বাদ যাবে আর কতগুলো অন্তর্ভুক্ত হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। নতুন করে অন্তর্ভুক্ত আর বাদ দেওয়ার পর সার্বিকভাবে এ খাতে মোট বরাদ্দ কিছুটা কমবে। 

অর্থ বিভাগ সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের চলমান আটটি কর্মসূচিতে ভাতার পরিমাণ ও ক্ষেত্রে বিশেষ উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ছে। মা ও শিশু, বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী, বেদে এবং অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে ভাতার পরিমাণ ৫০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে। 
সংশ্লিষ্টরা বলেন, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বরাদ্দ বেশি দেখানোর জন্য বিগত আওয়ামী লীগ সরকার প্রতি অর্থবছরেই এ খাতের বরাদ্দ ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখিয়ে আসছিল। বর্তমানে ২৬টি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৪০টি কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এ জন্য চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে, যা জাতীয় বাজেটের ১৭ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। এর মধ্যে সঞ্চয়পত্রে সুদ বাবদ ব্যয় খাতে বরাদ্দ রয়েছে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। এটিসহ আরও কিছু কর্মসূচি বাদ যাওয়ায় আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ কমে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা হতে পারে। 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বর দ দ র প রকল প সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের মাঝে সঞ্চয়পত্র প্রদান

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শরীয়তপুরের ১১টি শহীদ পরিবারের মাঝে ১০ লাখ টাকা করে সঞ্চয়পত্র প্রদান করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। 

মঙ্গলবার (১৩ মে) বেলা ১২টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পরিবারগুলোর হাতে সঞ্চয়পত্র তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন।

এসময় তিনি বলেন, “বর্তমানে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রয়েছেন, তার সামর্থ্যে মধ্যে শহীদ পরিবারগুলোর জন্য যা করণীয় সে বিষয়ে বদ্ধপরিকর। আজ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে শরীয়তপুরের ১১টি পরিবারের মাঝে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়েছে। যখনই যেই মন্ত্রণালয় থেকে সহযোগিতা আসবে তা শহীদ পরিবারের মাঝে দেওয়া হবে।” 

এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাদিয়া জেরিন, জেলা সমাজসেবার উপ-পরিচালক বিশ্বজিৎ বৈদ্য নাদিম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির, যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন মিন্টু প্রমুখ।

ঢাকা/আকাশ/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশসহ ৫ দেশের কূটনীতিকের পরিচয়পত্র পেশ অনুষ্ঠান স্থগিত করল ভারত
  • নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের পরিচয়পত্র পেশ অনুষ্ঠান পেছাল
  • দিল্লিতে বাংলাদেশি দূতের পরিচয়পত্র পেশ অনুষ্ঠান স্থগিত
  • ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছে আগামীকাল পরিচয়পত্র পেশ করছেন নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার
  • ২ ভারতীয়কে বাংলাদেশি সাজিয়ে জমি বিক্রি
  • ভারতীয়কে এনআইডি দেওয়ায় ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা 
  • দিনাজপুরে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার পেল ১০ লাখ টাকা
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের মাঝে সঞ্চয়পত্র প্রদান
  • ব্যাংকব্যবস্থা থেকে কম ঋণ নেবে সরকার