জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দা‌বি দাওয়া রাজপথে নয়, আলোচনার টেবিলে সমাধান করার আহ্বান জা‌নি‌য়ে‌ছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।

শুক্রবার (১৬ মে) এক বিবৃতিতে তি‌নি এ আহ্বান জানান।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, “দেশের প্রথমসারির একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দূরীকরণ ও ক্যাম্পাস নির্মাণের মতো বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের রাজপথে আন্দোলন করতে হচ্ছে। এর মতো লজ্জাজনক বিষয় আর হতে পারে না। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের অপশাসনের ফলে দেশের সব খাতের মতো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর সম্ভাবনা নষ্ট করে ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। এখন এর একটা বিহিত হওয়া আবশ্যক। তবে তা রাজপথে নয় বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদা ও সরকারের সামর্থ্য  পর্যালোচনা করে আলোচনার টেবিলে এর সমাধান করতে হবে।”

তি‌নি বলেন, “আমাদের সবার মনে রাখতে হবে, বর্তমান সরকার অভ্যুত্থান পরবর্তী একটি অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকারের প্রধান কাজ রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় নীতি ও কাঠামোগত সংস্কার শেষ করে নির্বাচন আয়োজন করা। বিগত ৫৪ বছরের অনিয়মের ফলে সৃষ্ট জঞ্জাল দূর করার দাবি এই সরকারের ওপরে চাপিয়ে দেওয়া বেইনসাফি হবে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার দেশের অর্থনীতিকে যে পর্যায়ে রেখে গেছে তাতে করে মানুষের প্রাথমিক মৌলিক চাহিদা পূরণেই সরকারকে সংগ্রাম করতে হচ্ছে। এই বাস্তবতায় বিগত সরকারগুলোর সৃষ্ট সমস্যার সমাধান তাৎক্ষণিকভাবে এই সরকারের কাছে চাওয়া যৌক্তিক হবে কিনা তা ভেবে দেখতে হবে।”

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কষ্ট অবর্ণনীয়। ঢাকার মতো উচ্চ আবাসন ব্যয়ের শহরে তাদের নিজ দায়িত্বে আবাসন ব্যবস্থা করতে হয়। এটা একজন শিক্ষার্থীর ওপরে প্রচণ্ড আর্থিক চাপ তৈরি করে। সেই চাপে শিক্ষার্থীরা টিউশনি, খণ্ডকালীন চাকরি করতে বাধ্য হয়; যা তাদের একাডেমিক দক্ষতা অর্জনের পথে বাধা তৈরি করে। সেজন্য তাদের আবাসন বৃত্তি ও ক্যাম্পাস নির্মাণের দাবি খুবই যৌক্তিক। তাই সরকারকে আহ্বান করব, অতি দ্রুত সম্ভাব্য যেকোনো পন্থায় তাদের দাবি পূরণের ব্যবস্থা করুন।”

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশের শক্তি প্রয়োগ এবং তাদের সমাবেশ থেকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপরে বোতল নিক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে তি‌নি বলেন, “পতিত স্বৈরাচার রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তারা যৌক্তিক আন্দোলনে অনুপ্রবেশ করে সুযোগ নিতে পারে। সেজন্য সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। তাই এই আন্দোলন রাজপথে না বরং আলোচনার টেবিলে সমাধান করুন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র র র জপথ ই সরক

এছাড়াও পড়ুন:

বাবরি মসজিদ নির্মাণের ডাক দেওয়ায় সাসপেন্ড তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা

ভারতে আবারো বাবরি মসজিদ নির্মাণের ডাক দেওয়া হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস। মমতার দলের সিনিয়র এই নেতা ও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিধায়ককে মূলত দলবিরোধী কাজের জন্যই সাসপেন্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেন কলকাতার মেয়র ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। 

তিনি বলেন, “হুমায়ুনের সঙ্গে কোনোরকম সম্পর্ক রাখবে না দল।”

সম্প্রতি বাবরি মসজিদ শিলান্যাসের ঘোষণা এবং এই ইস্যুতে দলের মতামতকে প্রাধান্য না দিয়ে দিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে নিশানা করে সবচেয়ে বড় বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন কবীর। সেই সাথে নিজের দল তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যেই কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন কবীর। যদিও বাবরি মসজিদ পুনঃনির্মাণের ব্যাপারে অটল থাকেন তিনি। 

কয়েক দিন আগেই বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমের সামনে কবীর জানিয়েছিলেন, চলতি বছরের ৬ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বেলডাঙ্গায় বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করা হবে। মসজিদটি সম্পূর্ণ হতে তিন বছর সময় লাগবে। শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্রায় দুই লাখ মানুষ উপস্থিত থাকবেন এবং মঞ্চে ৪০০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত থাকবেন। অবশ্য ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর রাজ্য বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়েই প্রথমবারের জন্য বাবরি মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন হুমায়ূন কবীর। 

এবারই প্রথম নয় বিভিন্ন সময়ে নিজের দলের বিরুদ্ধে প্রশাসনের বিরুদ্ধে মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল এই বিধায়কের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে দলের পক্ষ থেকে সতর্কও করা হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন থেকে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “বাবরি মসজিদ করার কথা বলে বাবরি ধ্বংসের স্মৃতি উসকে দিতে চাইছেন কবীর। আমরা মনে করি এর পিছনে বিজেপি রয়েছে। ওরা হুমায়ুনকে সামনে রেখে হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের রাজনীতি করছে।”

ফিরহাদ আরো বলেন, “কেউ কোথাও নিজের অর্থে মসজিদ করলে করতেই পারেন। কিন্তু দলের বিধায়ক সংহতি দিবসের (৬ ডিসেম্বর) তারিখটাকেই বেছে নিলেন শিলান্যাসের জন্য? কেন?” ফিরহাদের দাবি, হুমায়ুন বাংলায় দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে।

যদিও দলের সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিতে নারাজ হুমায়ুন। সাসপেন্ডের সিদ্ধান্তের কথা জানামাত্রই আগামী ২২ ডিসেম্বরই নতুন দল ঘোষণা দেন কবীর। 

যদিও হুমায়ুন কবীরের বাবরি মসজিদ নির্মাণের ঘোষণার পরেই দেশ জড়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়। এমনকি ভারতের সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও সিনিয়র বিজেপি নেত্রী উমা ভারতী সরাসরি হুমকি দিয়ে বলেন, “আমরা উপরওয়ালা বা ইসলামের নামে নির্মিত মসজিদগুলোকে সম্মান করব, কিন্তু বাবরের নামে কোনো মসজিদ নির্মাণের চেষ্টা হলে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মতো পরিণতি হবে।” 

মমতা ব্যানার্জীকে পরামর্শ দিয়ে উমা ভারতী বলেন, “যারা বাবরের নামে মসজিদ তৈরির কথা বলেন তাদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।” 

ঢাকা/সুচরিতা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ