ফুটবলে এই বছরটা কেমন কাটলো ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার
Published: 20th, November 2025 GMT
বিশ্বকাপের ক্ষণ গুনতে গুনতে ২০২৫ সালকে বিদায় জানাল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা ফুটবল দল। সামনের ২০২৬ দুই দেশের জন্যই মহাগুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বকাপের বছর বলে কথা! চার বছর ধরে ফুটবলের পরাশক্তি দেশগুলো অপেক্ষায় থাকে এই সময়টির। বিশ্বকাপ শিরোপা জিতে চার বছরের জন্য নিজেদের সিংহাসন ও মর্যাদাকে সমুন্নত করার এটিই একমাত্র উপলক্ষ।
আর বিশ্বকাপ মানেই উত্তাপের বড় একটি অংশজুড়ে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার নাম। বিশ্বব্যাপী দক্ষিণ আমেরিকার এই দুই দেশের কোটি সমর্থক নিজ দলের হাতে ট্রফি দেখার অপেক্ষায় থাকেন। সর্বশেষ ২০২২ সালে এই অপেক্ষাটা ঘুচেছিল আর্জেন্টিনা সমর্থকদের, লিওনেল মেসিরা ট্রফি হাতে তুলেছেন ৩৬ বছর পর। ব্রাজিলের এখনকার অপেক্ষাটা ২০০২ সালের পর থেকে। এমন পরিস্থিতিতে ২০২৬ বিশ্বকাপের আগের বছরে দুই দেশ কেমন খেলল, দেখে নেওয়া যেতে পারে।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে এই দশকটাকে কেউ চাইলে আর্জেন্টিনা ও লিওনেল মেসির দশক হিসেবেও মনে রাখতে পারে। ২০২২ বিশ্বকাপ জিতে ফুটবলে নিজেদের হারানো রাজত্ব পুনরুদ্ধার করেছে ‘আলবিসেলেস্তা’রা। এর আগে ২০২১ সালে কোপা আমেরিকা জিতে আর্জেন্টিনার উত্থানের গল্পটা শুরু হয়েছিল।
আরও পড়ুনট্রফি জেতায় সবচেয়ে সফল ১০ জাতীয় ফুটবল দল, আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল কোথায়১৯ জুলাই ২০২৫সেবার ফাইনালে ব্রাজিলকে হারিয়ে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের জানান দেয় মেসির আর্জেন্টিনা। এরপর ইউরোপ চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে ফিনালিসিমাও জিতে নেয় তারা। আর বিশ্বকাপের পর গত বছর আর্জেন্টিনা জিতেছে টানা দ্বিতীয় কোপা আমেরিকা শিরোপা। মেসিকে ঘিরে আর্জেন্টিনায় এখন নতুন একটি ফুটবল–প্রজন্মের আবির্ভাব ঘটেছে। ২০২৬ বিশ্বকাপে ব্যাটনটা থাকবে তাঁদের হাতেই।
২০২৫ সালে আর্জেন্টিনার পারফরম্যান্স ছিল মূলত আগের চার বছরের ধারাবাহিকতা। লিওনেল স্কালোনির অধীনে আর্জেন্টিনার অবিশ্বাস্য ছন্দ অব্যাহত ছিল এই বছরও। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের আঞ্চলিক লড়াইয়ে পয়েন্ট তালিকায় সবার ওপরে ছিল স্কালোনির দল। এ বছর সব মিলিয়ে আর্জেন্টিনা ম্যাচ খেলেছে ৯টি। এর মধ্যে জিতেছে ৭টিতে, ১টি করে ড্র ও হার। এই ৯ ম্যাচে আর্জেন্টিনা গোল করেছে ১৯টি, বিপরীতে হজম করেছে মাত্র ৩টি, যা আর্জেন্টিনার আক্রমণ ও রক্ষণের শক্তিমত্তারই জানান দিচ্ছে।
মেসিই এখনো আর্জেন্টিনার সেরা ফুটবলার.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন র ব শ বক প র র বছর ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বের কোন দেশগুলোয় মৃত্যুদণ্ড আছে, কারা বাদ দিয়েছে
যুক্তরাষ্ট্রে গত বছরের জানুয়ারি মাসে একজন দণ্ডিত খুনিকে নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ পদ্ধতিতে কারও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘটনা দেশটিতে এটাই প্রথম।
জাপানেও এক ব্যক্তিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কারণ, তিনি যে অগ্নিসংযোগ করেছিলেন, তাতে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
এদিকে বাংলাদেশে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাকে গতকাল সোমবার মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।
বিশ্বজুড়েই মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা বাড়ছে, যদিও অনেক দেশ এ শাস্তি পুরোপুরি বা আংশিকভাবে বাতিল করে দিয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্বের কোন দেশগুলোয় বিভিন্ন অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে এবং কোন সব দেশ এ সাজা বাদ দিয়েছে, দেখা নেওয়া যাক।
মৃত্যুদণ্ডের বিধান কত দেশে
বিবিসি বলেছে, লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ৯টি দেশ শুধু ‘সবচেয়ে গুরুতর’ অপরাধে (যেমন একাধিক খুন, যুদ্ধাপরাধ) মৃত্যুদণ্ড কার্যকর রেখেছে। ২৩টি দেশ মৃত্যুদণ্ড আইনে রাখলেও গত ১০ বছরে একবারও তা কার্যকর করেনি।
‘ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ’ ২০২৫ সালে তাদের এক প্রতিবেদনে মৃত্যুদণ্ড বৈধ—এমন ৫৫টি দেশ ও অঞ্চলের একটি তালিকা দিয়েছে। দেশগুলো হলো ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, বাংলাদেশ, ইথিওপিয়া, জাপান, মিসর, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (ডিআর কঙ্গো), ভিয়েতনাম, ইরান, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, সুদান, উগান্ডা, ইরাক, আফগানিস্তান, ইয়েমেন, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া, তাইওয়ান।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ধারণা, চীনই বিশ্বের সবচেয়ে বড় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকারী দেশ। দেশটিতে প্রতিবছর কয়েক হাজার মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তবে দেশটি এ-সংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রকাশ না করায় সঠিক সংখ্যা জানা অসম্ভব।আরও আছে সোমালিয়া, জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ সুদান, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কিউবা, বেলারুশ, লিবিয়া, সিঙ্গাপুর, লেবানন, ফিলিস্তিন, ওমান, কুয়েত, কাতার, জ্যামাইকা, গাম্বিয়া, বতসোয়ানা, লেসোথো, বাহরাইন, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, কোমোরস, গায়ানা, বেলিজ, বাহামাস, বার্বাডোস, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রানাডাইনস, অ্যান্টিগুয়া ও বার্বুডা, ডোমিনিকা এবং সেন্ট কিটস ও নেভিস।
প্রতিবছর কতজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সরকারি পরিসংখ্যান, সংবাদমাধ্যমের তথ্য এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের পরিবার ও প্রতিনিধিদের দেওয়া তথ্য মিলিয়ে এ বিষয়ে হিসাব তৈরি করেছে।
সংস্থাটির ধারণা, চীনই বিশ্বের সবচেয়ে বড় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকারী দেশ। দেশটিতে প্রতিবছর কয়েক হাজার মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তবে দেশটি এ–সংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রকাশ না করায় সঠিক সংখ্যা জানা অসম্ভব।
চীন বাদে ২০২২ সালে বিশ্বে ৮৮৩টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। এটি ২০১৭ সালের পর সবচেয়ে বেশি। তবে ১৯৮৮, ১৯৮৯ বা ২০১৫ সালের তুলনায় এ সংখ্যা অনেক কম। এ সালগুলোয় প্রতিবছর ১ হাজার ৫০০–এর বেশি মানুষ মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন।
অ্যামনেস্টির হিসাবে, ২০২২ সালে অন্তত ২ হাজার ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, ৫২টি দেশে। ওই বছর বিশ্বজুড়ে মৃত্যুদণ্ডের সাজা নিয়ে কারাগারে ছিলেন ২৮ হাজার ২৮২ জন।
অনেক বন্দী মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগে বছরের পর বছর, কখনো কখনো দশক ধরে কনডেমড সেলে অপেক্ষা করেন।
শেখ হাসিনা