সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নামে কিংবা ছদ্মনামে পরিচালিত বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহিংসতা, উসকানি ও নারীর প্রতি ঘৃণা সৃষ্টির মতো বর্বর আচরণ বারবার সামনে আসছে। শুক্রবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ।

সম্প্রতি গঠিত ছাত্রসংগঠনটির মুখপাত্র আশরেফা খাতুনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর যে আকাঙ্ক্ষা ছাত্রসমাজ ধারণ করেছিল, সেই চেতনার সঙ্গে শিবিরের বর্তমান অবস্থান সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী। নামে-বেনামে বিভিন্ন সংগঠনের আড়ালে এ দায় এড়ানোর রাজনীতি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ প্রত্যাখ্যান করে।

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ বলেছে, পতিত স্বৈরাচারের সহযোগী নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ যেভাবে বিরোধী মতাদর্শের কর্মসূচিতে সংঘর্ষে জড়াত এবং সহিংসতা চালাত, ছাত্রশিবিরও বর্তমানে একই কায়দায় নামে-বেনামে সংগঠনের ব্যানারে কর্মসূচি দিয়ে ফ্যাসিবাদী ছাত্ররাজনীতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির এ ছাত্রসংগঠনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিগত স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদী শাসনের আমলে ইসলামী ছাত্রশিবির নিজেই রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হয়েছিল। সেই ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আমরা বলি, মজলুম থেকে জালিমে পরিণত হওয়ার এ বিবর্তন শুধু দুঃখজনকই নয়, ছাত্রসমাজের প্রতি একধরনের বিশ্বাসঘাতকতা।’

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের অভিযোগ, ছাত্রশিবির ভিন্ন রাজনৈতিক অবস্থান দেখলেই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে এবং সংঘবদ্ধভাবে ক্যাম্পাসে বিভ্রান্তি, অস্থিরতা ও গুপ্তচর রাজনীতির চর্চা করছে। এটি গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা ও স্বাভাবিক শিক্ষাব্যবস্থার পরিপন্থী।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের মিছিলে হামলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরোধী মতের কর্মসূচিতে ধারাবাহিক বাধা এবং চট্টগ্রামে এক ছাত্রীকে পা দিয়ে আঘাত করে ফেলে দেওয়ার ঘটনাকে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ রাজনৈতিক বিপজ্জনক রূপান্তরের নিদর্শন হিসেবে দেখছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

সম্প্রতি গঠিত সংগঠনটি বলছে, ‘গুপ্ত রাজনীতির চর্চা, গুপ্ত এজেন্ডা বাস্তবায়ন এবং নামে-বেনামে বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের প্রবণতা ছাত্ররাজনীতির জন্য মারাত্মক হুমকি। আমরা মনে করি, ছাত্ররাজনীতি হবে উন্মুক্ত, মতপ্রকাশ থাকবে মুক্ত ও গণতান্ত্রিক ভিন্নতা হবে সম্মানিত।’

ছাত্রশিবিরকে গুপ্ত রাজনৈতিক চর্চা থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ বলেছে, ঐক্যবদ্ধভাবে ক্যাম্পাসজুড়ে সব প্রকার উগ্রতা, গুপ্তচর রাজনীতি ও গণতন্ত্রবিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার এখনই সময়।

আরও পড়ুনছাত্রজোটের কর্মসূচিতে নারীসহ দুজনকে লাথি মারার অভিযোগ ‘শিবির ক্যাডারের’ বিরুদ্ধে২৯ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত র র জন ত ক স গঠন র

এছাড়াও পড়ুন:

চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে

কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আমলের পুরোনো চক্র ও সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলন। এই সিন্ডিকেট ও চামড়াশিল্প ধ্বংসের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংগঠনটি আয়োজিত ‘চামড়া শিল্পের নৈরাজ্য ও সিন্ডিকেট রুখো’ শীর্ষক মানববন্ধনে এসব কথা বলা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মির্জা শরিফুল আলম। সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, কলামিস্ট মীর আবদুল আলীম, রাজনীতিবিদ নুরুজ্জামান হীরা, মানবাধিকারকর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুন প্রমুখ।
কয়েক বছর ধরে কাঁচাচামড়ার দাম কমছে। দাম না পেয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নদী বা খালে ফেলে দিয়েছেন কিংবা মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন– এমন ঘটনাও ঘটছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চলতি বছর ৮৫ থেকে ৯০ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ট্যানারি মালিকদের। এর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সংগ্রহ হয় কোরবানির সময়। 

জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। কিছু ক্ষেত্রে বর্গফুটের হিসাবে চামড়ার দাম আরও কম পড়েছে। কোরবানিদাতাদের থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছেন। সেসব চামড়া আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে চামড়া সংগ্রহ করলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ার দাম পড়ে গেছে তলানিতে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও বেশির ভাগ ছাগলের চামড়া নষ্ট হয়েছে। বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। দেশে ও বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। অথচ কোরবানির চামড়া শিল্প নিয়ে গভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, বিদেশি চক্রান্তে দেশের সোনালি আঁশখ্যাত পাট শিল্পকে সুকৌশলে ধ্বংস করা হয়েছে। এবার আরেক সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। গত বছরের মতো এবারও কম দামে সব ধরনের চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। এতে করে গরিব-অসহায় মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
  • নড়াইলে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে বৈষম্যবিরোধী তিন নেতাকে শোকজ
  • দিনে ৫ টাকা করে জমিয়ে দুস্থদের খাওয়ান তারা