ভিন্নমত দেখলেই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে ছাত্রশিবির: গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ
Published: 30th, May 2025 GMT
সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নামে কিংবা ছদ্মনামে পরিচালিত বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহিংসতা, উসকানি ও নারীর প্রতি ঘৃণা সৃষ্টির মতো বর্বর আচরণ বারবার সামনে আসছে। শুক্রবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এ অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ।
সম্প্রতি গঠিত ছাত্রসংগঠনটির মুখপাত্র আশরেফা খাতুনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঐতিহাসিক জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর যে আকাঙ্ক্ষা ছাত্রসমাজ ধারণ করেছিল, সেই চেতনার সঙ্গে শিবিরের বর্তমান অবস্থান সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী। নামে-বেনামে বিভিন্ন সংগঠনের আড়ালে এ দায় এড়ানোর রাজনীতি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ প্রত্যাখ্যান করে।
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ বলেছে, পতিত স্বৈরাচারের সহযোগী নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ যেভাবে বিরোধী মতাদর্শের কর্মসূচিতে সংঘর্ষে জড়াত এবং সহিংসতা চালাত, ছাত্রশিবিরও বর্তমানে একই কায়দায় নামে-বেনামে সংগঠনের ব্যানারে কর্মসূচি দিয়ে ফ্যাসিবাদী ছাত্ররাজনীতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির এ ছাত্রসংগঠনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিগত স্বৈরাচারী ফ্যাসিবাদী শাসনের আমলে ইসলামী ছাত্রশিবির নিজেই রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হয়েছিল। সেই ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আমরা বলি, মজলুম থেকে জালিমে পরিণত হওয়ার এ বিবর্তন শুধু দুঃখজনকই নয়, ছাত্রসমাজের প্রতি একধরনের বিশ্বাসঘাতকতা।’
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের অভিযোগ, ছাত্রশিবির ভিন্ন রাজনৈতিক অবস্থান দেখলেই আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে এবং সংঘবদ্ধভাবে ক্যাম্পাসে বিভ্রান্তি, অস্থিরতা ও গুপ্তচর রাজনীতির চর্চা করছে। এটি গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা ও স্বাভাবিক শিক্ষাব্যবস্থার পরিপন্থী।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের মিছিলে হামলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরোধী মতের কর্মসূচিতে ধারাবাহিক বাধা এবং চট্টগ্রামে এক ছাত্রীকে পা দিয়ে আঘাত করে ফেলে দেওয়ার ঘটনাকে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ রাজনৈতিক বিপজ্জনক রূপান্তরের নিদর্শন হিসেবে দেখছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
সম্প্রতি গঠিত সংগঠনটি বলছে, ‘গুপ্ত রাজনীতির চর্চা, গুপ্ত এজেন্ডা বাস্তবায়ন এবং নামে-বেনামে বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের প্রবণতা ছাত্ররাজনীতির জন্য মারাত্মক হুমকি। আমরা মনে করি, ছাত্ররাজনীতি হবে উন্মুক্ত, মতপ্রকাশ থাকবে মুক্ত ও গণতান্ত্রিক ভিন্নতা হবে সম্মানিত।’
ছাত্রশিবিরকে গুপ্ত রাজনৈতিক চর্চা থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ বলেছে, ঐক্যবদ্ধভাবে ক্যাম্পাসজুড়ে সব প্রকার উগ্রতা, গুপ্তচর রাজনীতি ও গণতন্ত্রবিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার এখনই সময়।
আরও পড়ুনছাত্রজোটের কর্মসূচিতে নারীসহ দুজনকে লাথি মারার অভিযোগ ‘শিবির ক্যাডারের’ বিরুদ্ধে২৯ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত র র জন ত ক স গঠন র
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত
ভোলায় গ্যাস ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে চলমান ছয় দফা আন্দোলন স্থগিত করেছে ‘আমরা ভোলাবাসী’। সরকারি আশ্বাসের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নেতারা।
সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও আমরা ভোলাবাসীর জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সদস্য রাইসুল আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোতাসিন বিল্লাহ, ভোলা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী, ভোলা আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, ইসলামী আন্দোলনের ভোলা উত্তর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, ভোলা সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. কামাল হোসেন ও আমরা ভোলাবাসীর সদস্যসচিব মীর মোশাররফ হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভোলার গ্যাস স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের দাবিসহ ছয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে দাবি আদায়ে অগ্রগতি হয়েছে।
আমরা ভোলাবাসীর দাবির মধ্যে রয়েছে, ভোলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন, বিদ্যমান ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুবিধা নিশ্চিত করা, ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণ, ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ, গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপন ও নদীভাঙন প্রতিরোধ।
সংগঠনটি জানায়, আন্দোলনের আগে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে মাত্র আট চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ জন। আরও চিকিৎসক, নার্স ও যন্ত্রপাতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। মেডিকেল কলেজ স্থাপনের বিষয়ে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন মেডিকেল কলেজ হলে, সেটি ভোলায় হবে। ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রেও ফিজিবিলিটি স্টাডি ও নকশা সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সার কারখানা ও ইপিজেড স্থাপনের জন্য জমি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছেন নেতারা। গ্যাস–সংযোগের বিষয়ে জানানো হয়, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানিকে ডিমান্ড নোট জমা দেওয়া ২ হাজার ১৪৫ গ্রাহককে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হবে এবং ন্যায্যমূল্যে ২০ হাজার সিলিন্ডার বিতরণ করা হবে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আবার কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।