রুমা ও থানচি যেতে পর্যটকদের বাড়তি আগ্রহ
Published: 9th, June 2025 GMT
ঈদুল আজহার ছুটিতে বান্দরবানে পর্যটকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। প্রতিবারের মতো এবারো ঈদের পরদিন থেকেই পর্যটকদের আগমন শুরু হয়েছে। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করে ছুটির বাকি দিনগুলো কাটাতে পার্বত্য এ জেলার দিকে আসছেন তারা।
দীর্ঘদিন পর রুমা ও থানচি থেকে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় এই দুই উপজেলায় যেতে বাড়তি আগ্রহ দেখাচ্ছেন ভ্রমণপিপাসুরা বলে জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে রুমা ও থানচির যেসব এলাকায় এখন পর্যন্ত ভ্রমণ নিষিদ্ধ রয়েছে; ওইসব এলাকায় না যেতে পর্যটকদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ঈদের তৃতীয় দিন কুয়াকাটা পর্যটকে মুখর
খাগড়াছড়ির বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে স্থানীয়দের ভিড়
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানান, বান্দরবানের আবাসিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টগুলোর রুম ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত আগাম বুকিং রয়েছে। কিছু কিছু হোটেল ও রিসোর্টের শতভাগ রুম বুক হয়ে গেছে। এই বুকিংয়ের হার আগামী ১০ জুন পর্যন্ত রয়েছে।
বান্দরবানের নীলাচল ও মেঘলা পর্যটনকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, পরিবার এবং বন্ধুদের নিয়ে পর্যটকরা ছুটে এসেছেন পাহাড়ি সৌন্দর্য উপভোগে। তারা নীলাচলের উঁচু থেকে নেমে আসা কুয়াশার চাদরের মাঝে দাঁড়িয়ে ক্যামেরাবন্দি করছিলেন প্রতিটি মুহূর্ত। অন্যদিকে, মেঘলার স্বচ্ছ লেকে প্যাডেল বোটে চড়ে অনেকে উপভোগ করছেন জলভ্রমণের আনন্দ। খুশিতে আত্মহারা শিশু ও তরুণ-তরুণীরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে আপনজনের সঙ্গে কাটাচ্ছেন সময়।
থানচি বাসস্ট্যান্ডে দেখা হয় ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা সাইফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, “গত রোজার ঈদে আমি বান্দরবানের নীলাচল, মেঘলা, চিম্বুক এবং নীলগিরি ভ্রমণ করেছি। এবার বন্ধুদের নিয়ে থানচির রাজা পাথর দেখতে এসেছি।”
তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা থাকায় আগে থানচি যেতে পারিনি। এবার যেহেতু, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে, তাই রাজা পাথর ঘুরতে যাচ্ছি।"
তানভীর ইসলামসহ নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা ২৬ জন বাইকার বগালেক যাচ্ছিলেন। মরুং বাজার এলাকায় কথা হয় তানভীরের সঙ্গে। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন বগালেক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ছিল। এখন যেহেতু প্রশাসন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে, এই সুযোগ মিস করতে চাই না।”
শফিকুল আলম নামে আরেক পর্যটক জানান, তারা ছয় বন্ধু মিলে চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান এসেছেন। বান্দরবান আশেপাশের নীলাচল, মেঘলা পর্যটনকেন্দ্র ঘুরে তারা রুমায় বগালেকে ঘুরতে যাবেন।
থানচি ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ জানান, থানচি উপজেলায় পর্যটকদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় ঈদের পরদিন থেকেই পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। তারা রাজা পাথর (বড় পাথর), তিন্দু এবং তমা তুঙ্গি পর্যটনকেন্দ্রে ভ্রমণ করছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, কিছু পর্যটক ট্যুর ইভেন্টের আড়ালে প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কিছু নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করছেন। কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে তার প্রভাব পুরো উপজেলায় পড়তে পারে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, রুমা ও থানচির নিষিদ্ধ বা সংবেদনশীল এলাকায় পর্যটকদের যাওয়া যেন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। কারণ, যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনার প্রভাব সরাসরি ওই এলাকার পর্যটন ব্যবসার ওপর পড়তে পারে। তাই পর্যটকদেরকেও নিষিদ্ধ এলাকায় ভ্রমণে যাওয়া থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.
তিনি আরো বলেন, “উপজেলায় বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। যে সব এলাকা ভ্রমণ নিষিদ্ধ রয়েছে ওইসব এলাকায় না যেতে পর্যটকদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।”
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, “বান্দরবান যেহেতু পর্যটন এলাকা, সেহেতু পর্যটকদের সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করে থাকি। পর্যটকদের নিরাপত্তা বিষয়ে আমরা দেখভাল করে থাকি। ঈদের ছুটিতে নিরাপত্তা জোড়দার করা হয়েছে। টুরিস্ট পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবসময় পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে সর্তক অবস্থানে আছেন।”
ঢাকা/চাইমং/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর যটক ব ন দরব ন র ভ রমণ ন ষ উপজ ল য় এল ক য় ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত ৩ জন পেহেলগামের হামলাকারী: পার্লামেন্টে অমিত শাহ
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত তিন বন্দুকধারী ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার অভিযানটি চালানো হয়।
আজ মঙ্গলবার ভারতের সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় দেওয়া বক্তব্যে অমিত শাহ এসব কথা বলেন।
তিন মাসেরও বেশি আগে গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা পেহেলগামের বৈসরানে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীরা হামলা চালান। ওই ঘটনায় ২৬ জন নিহত হন।
অমিত শাহ বলেন, ‘আমি পার্লামেন্টে জানাতে চাই, বৈসরানে যে তিন সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছিলেন, তাঁদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে।’ তাঁর দাবি, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবার সদস্য। জাতিসংঘ এটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে।
অমিত শাহ আরও বলেন, ‘হামলায় তাঁদের জড়িত থাকার ব্যাপারে আমাদের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর কাছে বিস্তারিত প্রমাণ আছে।’
ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, কাশ্মীরের দাচিগাম এলাকার পাহাড়ে গতকাল ওই অভিযান চালানো হয়েছে। শ্রীনগর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে দাচিগামের অবস্থান।
এপ্রিলে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গলের ভেতর লুকিয়ে থাকা বন্দুকধারীরা হঠাৎ বেরিয়ে এসে পর্যটকদের ওপর গুলি চালান। ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের প্রায় সবাই ভারতীয়। একজন নেপালি ছিলেন।
আরও পড়ুনকাশ্মীরে পর্যটকদের গুলি করার আগে কী হয়েছিল, জানালেন প্রত্যক্ষদর্শীরা২৫ এপ্রিল ২০২৫ভারতের অভিযোগ, এ হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদদ আছে। তবে ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে। পেহেলগামে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত মে মাসে পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে চার দিন ধরে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষে ৭০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকেই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীর অঞ্চলটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিভক্ত হয়ে আছে। উভয় দেশ পুরো কাশ্মীরকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে থাকে। কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়াকে কেন্দ্র করে তারা দুটি যুদ্ধসহ বেশ কয়েকবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে।
আরও পড়ুনপেহেলগামে হামলায় জড়িত সবাইকে এবার পাকিস্তানি নাগরিক বলে দাবি ভারতের২৪ জুন ২০২৫