মধ্যযুগে মুসলিম নারী স্বাস্থ্যকর্মীরা
Published: 12th, June 2025 GMT
কায়রোর আল-মানসুরি হাসপাতালের প্রাঙ্গণে এক নারী দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর দৃষ্টি তীক্ষ্ণ, হাতে রোগীর চিকিৎসা নথি। তিনি শিহাবুদ্দিন আল-সায়িগের (মৃ. ১৬২৭ খ্রি.) মেয়ে, এই হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসক। তাঁর নির্দেশে চিকিৎসক ও ধাত্রীরা ব্যস্তভাবে রোগীদের সেবা করছেন।
উমাইয়া, আব্বাসীয় ও আন্দালুসের যুগে মুসলিম নারী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা শুধু রোগীদের সেবাই করেননি, বরং চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতিতে অবদান রেখেছেন। এই পর্বে আমরা দেখব মধ্যযুগে মুসলিমবিশ্বে নারীদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে ভূমিকা এবং সমাজে তাঁদের প্রভাব।
নারীরা শুধু চিকিৎসা দিতেন না, বরং ওষুধ তৈরি ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় অংশ নিতেন।মুসলিম চিকিৎসাবিজ্ঞানের স্বর্ণযুগমধ্যযুগে মুসলিম বিশ্ব ছিল চিকিৎসাবিজ্ঞানের স্বর্ণযুগ। আব্বাসীয় খলিফারা গ্রিক, পারসিক ও ভারতীয় চিকিৎসা গ্রন্থ আরবিতে অনুবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেন। বাগদাদের বায়তুল হিকমা এই জ্ঞানের কেন্দ্র ছিল।
এই সময়ে নারীরাও চিকিৎসা গবেষণা ও সেবায় অংশ নেন। ইমাম তাবারি (৮৩৮-৯২৩ খ্রি.
নারীরা শুধু চিকিৎসা দিতেন না, বরং ওষুধ তৈরি ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় অংশ নিতেন।
ইসলামি শিক্ষা নারীদের জন্য উন্মুক্ত ছিল। কোরআনের আহ্বান, ‘আমার প্রভু, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন।’ (সুরা তাহা: ১১৪) এবং মহানবী (সা.)-এর বাণী, ‘জ্ঞান অন্বেষণ প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ফরজ’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ২২৪) নারীদের চিকিৎসা শিক্ষায় উৎসাহিত করেছিল।
আন্দালুসে আল-জাহরাভির (৯৩৬-১০১৩ খ্রি.) কন্যারা তাঁর কাছ থেকে চিকিৎসা শিখে প্রসূতি ও শিশু চিকিৎসায় কাজ করেন। (আল-জাহরাভি, আত-তাসরিফ, ৩০/৪৫৬, কায়রো: দারুল কুতুব, ১৯০৮)
আরও পড়ুনপ্রথম মুসলিম নৌ-যোদ্ধা নারী২৯ মার্চ ২০২৫নারীদের বৈচিত্র্যময় অবদানমধ্যযুগে মুসলিম নারীরা চিকিৎসার বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করেছেন। এখানে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব ও তাঁদের কাজ তুলে ধরা হলো:
আল-হাফিদ ইবনে জুহরের বোন ও কন্যারা (১০৯৪-১১৬২ খ্রি.): আন্দালুসে তাঁরা প্রসূতি ও শিশু চিকিৎসায় দক্ষতা অর্জন করেন। তাঁরা শাসক আল-মানসুরের স্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছিলেন। ইবনে জুহরের পরিবার পাঁচ প্রজন্ম ধরে চিকিৎসায় নেতৃত্ব দেয়। (আল-শাত্তি, তারিখুল তিব ওয়া আখলাকিয়াতুহু, পৃ. ২৫৬, দামেস্ক: দারুল ফিকর, ১৯৬০)
মধ্যযুগে মুসলিম নারীরা চিকিৎসার বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করেছেনউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
টেকনাফে নিখোঁজের ৩২ ঘণ্টা পর জেলের লাশ উদ্ধার
কক্সবাজারের টেকনাফে নাফ নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার ৩২ ঘণ্টা পর এক জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর নাম মোহাম্মদ ইসমাইল (২৪)। আজ শুক্রবার বেলা দুইটার দিকে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের বাহারছড়া সমুদ্র উপকূল থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
মোহাম্মদ ইসমাইল টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ বাজারপাড়া এলাকার মৃত আবুল হাশেমের ছেলে।
সাবরাং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুস সালাম জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে নাফ নদীর শাহপরীর দ্বীপ গোলারচর এলাকায় মাছ শিকারে যান ইসমাইল। এ সময় ভেসে যান তিনি। আশপাশের লোকজন ও জেলেরা নাফ নদী ও আশপাশের এলাকায় খোঁজাখুঁজি করলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। আজ দুপরে সাবরাং ইউনিয়নের বাহারছড়া ঘাট এলাকায় লাশ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয় লোকজন। পরবর্তী সময়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশটি উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া জেলে ইসমাইলের পরিবারের সদস্যরা লাশটি শনাক্ত করেছেন। তাঁদের কাছে লাশটি হস্তান্তর করা হয়েছে।