বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নিজস্ব সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেশনের সদস্য সাখাওয়াত হোসেন ভুঁইয়া জাতীয় দলের হেড কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার পদত্যাগ চেয়েছেন। স্প্যানিশ এই কোচের পদত্যাগ ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

শনিবার বাফুফে রাজধানীর রাওয়া কমপ্লেক্সে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের নির্বাহী কমিটির ১৪ সদস্য। এর উদ্দেশ্য ছিল বাফুফের আগামী ছয় মাসের পরিকল্পনা ও কার্যক্রম সংবাদ মাধ্যমের সামনে তুলে ধরা।

সেখানে বাফুফের নির্বাহী সদস্য সাখাওয়াতকে ফেডারেশনেরন অভ্যন্তরীণ অডিট ও সরকারি সম্পর্ক বিষয়ে কথা বলার আহ্বান করা হয়। তবে তিনি ওই প্রসঙ্গে কোন কথা না বলে ক্যাবরেরার পদত্যাগ দাবি করে বসেন, ‘ অডিট নয়, আমার একমাত্র এজেন্ডা জাতীয় দল। কমিটির সদস্য হিসেবে স্পষ্ট করে বলছি, আমি ক্যাবরেরার পদত্যাগ চাই। এটা ১৮ কোটি মানুষের দাবি।’ 

বাংলাদেশ জাতীয় দলে বেশ কিছু ভালো প্রবাসী ফুটবলার যোগ দিয়েছেন। হামজা চৌধুরী, শমিত সোম, ফাহমিদুলরা দেশের জার্সিতে খেললেও ফলাফল আগের মতোই রয়ে গেছে। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ২-১ গোলে ঘরের মাঠে হেরেছে বাংলাদেশ। অভিযোগ উঠেছে, হামজা-শমিতকে ঠিক মতো ব্যবহার করতে পারেননি স্প্যানিশ কোচ ক্যাবরেরা। বরং গতবাধা সিস্টেমে ম্যাচ খেলিয়েছেন তিনি। 

সিঙ্গাপুর ম্যাচের পরই ভক্তদের মধ্যে ক্যাবরেরার পদত্যাগ দাবি করেন একদল ভক্ত। তিনি বছরের অধিকাংশ সময় ছুটিতে থাকেন, দেশের ঘরোয়া ফুটবলে নজর রাখেন না। বরং চেনা কিছু মুখ নিয়ে চেনা ফরমেশনে ম্যাচ খেলান বলেও অভিযোগ। ভালো ফর্মে না থাকলেও রাকিব ও সাদ উদ্দিনকে খেলানো নিয়েও আছে প্রশ্ন। 

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাফুফে সদস্য সাখাওয়াত হেড কোচ ক্যাবরেরার পদত্যাগ চেয়েছেন। বাফুফের সঙ্গে ক্যাবরেরার চুক্তি আছে এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্ব পর্যন্ত। যার অর্থ ২০২৬ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তি আছে তার। ফেডারেশন তাকে বরখাস্ত করলে জরিমানা দিতে হবে। যে কারণে চুক্তি শেষের দিকে চলে আসায় তাকে জরিমানা না করার পথে হাঁটতে পারে বাফুফে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত ব থ আওয় ল হ য ভ য় র ক য বর র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ