চার কিশোরীর ধর্ষণ, হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়নি ৩৩ বছরেও
Published: 16th, August 2025 GMT
১৯৯১ সালের ৬ ডিসেম্বরের রাত। টেক্সাসের অস্টিন শহরের ব্যস্ত এক বাণিজ্যিক এলাকায় ছোট্ট এক দইয়ের দোকান। সেখানেই ঘটে গেল যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড। দোকান থেকে উদ্ধার হলো চার কিশোরীর ক্ষতবিক্ষত মরদেহ। ১৩ বছরের অ্যামি এয়ারস, ১৫ বছরের সারা হারবিসন, ১৭ বছরের জেনিফার হারবিসন ও এলিজা থমাসকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছিল নির্মমভাবে। তাদের গলা টিপে ধরা হয়েছিল, শরীর বেঁধে রাখা হয়েছিল দড়ি দিয়ে, মাথায় গুলি করা হয়েছিল—এরপর প্রমাণ নষ্ট করতে দোকানেই আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
তিন দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এই হত্যাকাণ্ড আজও অস্টিনবাসীর মনে এক দুঃসহ স্মৃতি। এইচবিও তাই চার পর্বের তথ্যচিত্র ‘দ্য ইয়োগার্ট শপ মার্ডারস’ নির্মাণ করেছে, যেখানে আর্কাইভ ফুটেজ, তদন্তকারীদের বক্তব্য, আর নিহত ব্যক্তিদের পরিবার-বন্ধুদের সাক্ষাৎকারে ফুটে উঠেছে শোক, ক্ষোভ আর অসহায়তার চিত্র।প্রথম পর্বেই নিহত অ্যামি এয়ারসের বাবা বব এয়ারস বলেন, ‘৩০ বছর, ৭ মাস, ৫ দিন হয়ে গেল—তবু আজও বিশ্বাস করতে পারি না।’ প্রতি রবিবার রাত ১০টায় এইচবিওতে সম্প্রচারিত হচ্ছে এই তথ্যচিত্র সিরিজ। যারা ‘ট্রু ক্রাইম’ ধরনের তথ্যচিত্রে আগ্রহী, তাঁদের কাছে এটি দেখা, নিঃসন্দেহে এক ভয়ংকর আর হৃদয়স্পর্শী অভিজ্ঞতা।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভানোর পর ভেতরে যা দেখেছিলেন, তা বর্ণনা করতে গিয়ে সেই সময়ের একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন—‘চারদিকে ধোঁয়া, ভেজা সিলিং, গলে যাওয়া আসবাবের মধ্যেই দেখা যাচ্ছিল লাশগুলো। তিনটি একসঙ্গে, আরেকটি একটু আলাদা।’
এই হত্যাকাণ্ডে অস্টিন শহর শোকে স্তব্ধ হয়ে যায়। নিহত কিশোরীদের পরিবার ও স্থানীয় ব্যক্তিরা ন্যায়বিচারের দাবিতে মিছিল করেছিলেন, শহরের রাস্তায় টাঙানো হয়েছিল পোস্টার ও বিলবোর্ড, স্থানীয় সংগীতশিল্পীরা গান লিখেছিলেন তাঁদের স্মরণে। তবু ৩৩ বছর পরেও রহস্যের জট খোলেনি।
আলোচিত এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে এইচবিওর নতুন তথ্যচিত্র ‘দ্য ইয়োগার্ট শপ মার্ডারস’। গত ৩ আগস্ট মুক্তি পেয়েছে চার পর্বের তথ্যচিত্রটি। মুক্তির পর থেকে সমালোচকদের ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে তথ্যচিত্রটি।
তদন্ত ও ভেঙে পড়া বিচারপ্রক্রিয়া
ঘটনার অল্প কিছুদিন পরই মেক্সিকোয় দুজনকে আটক করা হলেও তাঁরা জোর করে স্বীকারোক্তি নেওয়ার অভিযোগ করলে মামলা এগোয়নি। ১৯৯৯ সালে অস্টিন পুলিশ আবারও চার তরুণকে গ্রেপ্তার করে—রবার্ট স্প্রিংস্টিন জুনিয়র, মাইকেল স্কট, মরিস পিয়ার্স ও ফরেস্ট ওয়েলবর্ন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হত য ক ণ ড র পর ব র হয় ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
‘মোটা জেনারেলদের’ কড়া সমালোচনা করলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা হেগসেথ
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ‘মোটা জেনারেল’ এবং বৈচিত্র্য আনার উদ্যোগের কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, এর ফলে কয়েক দশক ধরে সামরিক বাহিনীর অধঃপতন হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার কমান্ডারদের এক বিরল সমাবেশে তিনি বলেন, যাঁরা তাঁর কর্মসূচিকে সমর্থন করেন না, তাঁদের পদত্যাগ করা উচিত।
হেগসেথের সঙ্গে মার্কিন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের সমাবেশে যোগ দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনিও ভার্জিনিয়ার কোয়ান্টিকোতে সমবেত অ্যাডমিরাল এবং জেনারেলদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি মার্কিন শহরগুলোতে সেনা মোতায়েনকে ‘আমাদের সামরিক বাহিনীর জন্য প্রশিক্ষণ ক্ষেত্র’ হিসেবে ব্যবহার করার ধারণা দেন।
ফক্স নিউজের সাবেক গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব হেগসেথ এবং সাবেক রিয়েলিটি টিভি তারকা ট্রাম্পের এ মন্তব্য একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানের মতো মনে হয়েছে। কারণ, গত সপ্তাহে হঠাৎই এই সমাবেশের জন্য মার্কিন সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের তলব করা হয়েছিল।
হেগসেথ অনুষ্ঠান শুরু করে বলেন, ‘নির্বোধ ও বেপরোয়া রাজনৈতিক নেতারা ভুল পথে পরিচালনা করায় আমরা পথ হারিয়ে ফেলেছি। আমরা ‘ওউক ডিপার্টমেন্ট’ (অতিমাত্রায় প্রগতিশীল বিভাগ) হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু আর নয়।’
সারা বিশ্ব থেকে উড়ে আসা শীর্ষ কর্মকর্তায় ভরা মিলনায়তনে ভাষণ দেওয়ার সময় হেগসেথ তাঁর মাধ্যমে ফ্ল্যাগ কর্মকর্তাদের যাঁরা বরখাস্ত হয়েছেন, সেই সেটিকে সমর্থন করেন। বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে ছিলেন একজন কৃষ্ণাঙ্গ শীর্ষ মার্কিন জেনারেল এবং নৌবাহিনীর শীর্ষ অ্যাডমিরাল, যিনি একজন নারী। তিনি বলেন, যেসব কর্মকর্তাকে তিনি অব্যাহতি দিয়েছেন, তাঁরা একটি ভেঙে পড়া সংস্কৃতির অংশ ছিলেন।
হেগসেথ পেন্টাগন যেভাবে বৈষম্যের অভিযোগ ও অন্যায়ের তদন্ত পরিচালনা করছে, তাতে ব্যাপক পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, বর্তমান ব্যবস্থায় শীর্ষ কর্মকর্তাদের ‘ডিমের খোসার ওপর দিয়ে হাঁটার মতো’ সতর্ক থাকতে হয়।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথের ডাকে সমাবেশে যোগ দেওয়া মার্কিন শীর্ষ জেনারেলরা। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ভার্জিনিয়া