সিলেটে পর্যটনকেন্দ্র জাফলং পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভে নেতৃত্বে দেওয়ার ঘটনায় যুবদল নেতা জাহিদ খানকে বহিষ্কার করা হয়েছে। শোকজ করা হয়েছে ছাত্রদল নেতা আজির উদ্দিনকে। 

শনিবার রাতে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যুবদল নেতাকে বহিষ্কার ও আজ রোববার ছাত্রদল নেতাকে শোকজ করা হয়।

জাহিদ খানকে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া। জাহিদ খান গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

এদিকে আজ পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজির উদ্দিনকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে কারণ দর্শনোর নোটিশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দায়িত্বশীল পদে থেকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজির উদ্দিনের বিরুদ্ধে কেন স্থায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না- মর্মে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যার নির্দেশ দেওয়া হল।

শনিবার সিলেটের পর্যটনকেন্দ্র জাফলং পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও ফাওজুল কবির খানের গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ করেন পাথর শ্রমিকসহ  যুবদল, ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভকালে পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজির উদ্দিন, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খান, জেলা ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমদ, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইউসুফ আহমেদ, উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আবদুল জলিল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম ও ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রমজান মোল্লাসহ অনেক নেতাকর্মীকে দেখা যায়। 

প্রসঙ্গত, জাফলং পাথর কোয়ারি এলাকা থেকে সরকার পরিবর্তনের পর অবৈধভাবে পাথর ও বালু উত্তোলন শুরু হয়। লুটপাটের নেপথ্যে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নাম সামনে চলে আসে। এ সব ঘটনায় এরই মধ্যে পদ স্থগিত হয়েছে সিলেট জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শাহপরাণের। দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে জেলা যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেমকে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য বদল ন ত ছ ত রদল ন ত ছ ত রদল ন ত ছ ত রদল র গঠন ক উপজ ল য বদল

এছাড়াও পড়ুন:

লাখ লাখ মানুষের সমাগমে চাঙা সিলেটের পর্যটন ব্যবসা

সিলেটে বেড়ানোর উপযুক্ত সময় বর্ষা মৌসুম। কিন্তু এবার পঞ্জিকার হিসাবে বর্ষা ঋতু শুরু হওয়ার আগেই দফায় দফায় বৃষ্টি নামায় বর্ষার আমেজ এসে গেছে। নদ-নদী, হাওর-খাল–বিল সব জায়গা নতুন পানিতে ভরেছে। টইটম্বুর পানিতে পর্যটনকেন্দ্রগুলো মোহনীয় রূপ পেয়েছে। এ রকম অবস্থায় ঈদের লম্বা ছুটি মিলেছে। তাই বেড়ানোর মওকা পেয়ে অনেকেই দেশের শীর্ষস্থানীয় পর্যটন গন্তব্য সিলেটে ছুটে এসেছেন।

স্থানীয় প্রশাসন ও পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্ষার আমেজে সিলেটের পর্যটন ব্যবসা এবার চাঙা হয়ে উঠেছে। গত দেড় সপ্তাহে অন্তত সাড়ে ৮ লাখ পর্যটক এসেছেন এই জনপদে। হোটেল-রিসোর্ট, রেস্তোরাঁ ও পরিবহন খাতের পাশাপাশি চা-পাতা, মণিপুরি কাপড়, সাতকরা ও আচার কেনাবেচাসহ পর্যটনসংশ্লিষ্ট সব ব্যবসা বেশ জমে উঠেছে। এতে অন্তত আড়াই হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে তাঁরা ধারণা করছেন।

জানতে চাইলে সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ফয়েজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, গত কয়েক বছরের মধ্যে ঈদের ছুটি কিংবা পর্যটন মৌসুমের শুরুতে এবারই সবচেয়ে বিপুলসংখ্যক পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। সিলেটের সব কটি পর্যটনকেন্দ্রেই উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসা-বাণিজ্যও জমেছে। মৌসুমের শুরুতেই এমন রমরমা অবস্থায় খুশিতে আছেন এখানকার পর্যটন খাত–সংশ্লিষ্ট সবাই।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিলেট বিভাগের চার জেলায় শতাধিক পর্যটনকেন্দ্র আছে। আর ভ্রমণ পর্যটনকে ঘিরে গড়ে উঠেছে শতাধিক দৃষ্টিনন্দন রিসোর্ট। পর্যটনকেন্দ্র ছাড়াও সিলেট নগরে অবস্থিত হজরত শাহজালাল (রহ.) ও হজরত শাহপরান (রহ.)-এর মাজার এবং সিলেটের গোলাপগঞ্জের শ্রীশ্রী চৈতন্য দেবের পৈতৃক ভিটায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অনেক ধর্মপ্রাণ মানুষ সিলেটে আসেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকেন্দ্রিক ট্যুরিজমের পাশাপাশি ধর্মীয় ট্যুরিজম বিবেচনায় পারিবারিক ও ব্যক্তিগত ট্যুরের জন্য অনেকেরই এখন পছন্দের জায়গা সিলেট। সাধারণত সিলেটের চার জেলায় বছরে ২০ থেকে ২৫ লাখ পর্যটক আসেন। এর মধ্যে সিলেটে আসেন ১২ থেকে ১৩ লাখ। বাকি জেলাগুলোর মধ্যে মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জে প্রায় ৫ লাখ করে ১০ লাখ এবং হবিগঞ্জে প্রায় ২ লাখ পর্যটক আসেন। তবে এবার মৌসুমের শুরুতেই চার জেলায় পর্যটকের ঢল নেমেছে।

গত কয়েক বছরের মধ্যে ঈদের ছুটি কিংবা পর্যটন মৌসুমের শুরুতে এবারই সিলেটে সবচেয়ে বিপুলসংখ্যক পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। সব কটি পর্যটনকেন্দ্রেই উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসা-বাণিজ্যও জমেছেফয়েজ হাসান, সভাপতি, সিলেট চেম্বার

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিলেটে এবারের ঈদের ছুটিতে কমপক্ষে ৫ লাখ পর্যটক এসেছেন। এতে পর্যটন খাতে ১ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যবসা হয়েছে। যেহেতু পর্যটন মৌসুম কেবল শুরু হয়েছে, সেহেতু চলতি বছর বিপুল পর্যটকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করছি।’

সিলেট ছাড়া অন্য তিন জেলায় ঈদের ছুটিতে কী পরিমাণ পর্যটক এসেছেন কিংবা কেমন ব্যবসা-বাণিজ্য হয়েছে, তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান স্থানীয় প্রশাসনের কাছে পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক বছরের মধ্যে এবারই মৌসুমের শুরুতে সবচেয়ে বেশি পর্যটক এসেছেন। এর মধ্যে সিলেটে ৫ লাখ, মৌলভীবাজারে ২ লাখ এবং সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলায় দেড় লাখ পর্যটক এসেছেন। চার জেলায় পর্যটন খাতে কমপক্ষে আড়াই হাজার কোটি টাকার ব্যবসা-বাণিজ্য হয়েছে বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা।

ষড়্‌ঋতুর দেশ বাংলাদেশে আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসকে বর্ষাকাল বলা হয়। পঞ্জিকা অনুযায়ী আজ শনিবার পয়লা আষাঢ়। অর্থাৎ কাগজে–কলমে আজ থেকে শুরু হচ্ছে এ বছরের বর্ষাকাল।

এবারের ঈদের ছুটিতে সিলেটের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড় হয়েছে। এসব জায়গায় জল-পাথর আর পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করেন দেশের নানা এলাকা থেকে আসা পর্যটকেরা। সম্প্রতি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ: যুবদল নেতাকে বহিষ্কার, ছাত্রদল নেতাকে শোকজ 
  • লাখ লাখ মানুষের সমাগমে চাঙা সিলেটের পর্যটন ব্যবসা