সৌদির ক্লাব আল-হিলালে আটকে গেল রিয়াল
Published: 19th, June 2025 GMT
রিয়াল মাদ্রিদ বনাম আল-হিলাল। নামের ভারে ইউরোপীয় দাপট স্পষ্ট। কিন্তু মাঠে দেখা গেল অন্য গল্প। এক উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে বিশ্ব ফুটবলের দুই প্রান্তের প্রতিনিধিত্বকারী দল দুটি ১-১ গোলে সমতায় থেমে গেল। আর ম্যাচের নাটকীয়তায় অন্যতম হাইলাইট হয়ে রইলো ফেদেরিকো ভালভার্দের মিস করা পেনাল্টি।
খেলাটি ছিল নতুন অধ্যায়ের সূচনা। দুই দলের কোচই ছিলেন প্রথমবারের মতো দায়িত্বে। রিয়ালের ডাগআউটে সাবেক বায়ার লেভারকুজেন গুরু জাভি আলোনসো। আর আল-হিলালের ছত্রছায়ায় ইন্টার মিলান-নির্মাতা সিমোনে ইনজাগি।
প্রথমার্ধে আল-হিলাল শুরু থেকেই রিয়ালকে চাপে রাখে। দ্বিতীয় মিনিটেই মিলিনকোভিচ-সাভিচের প্রচণ্ড শট থিবো কোর্তোয়া আটকে দিয়ে সমর্থকদের হৃদপিণ্ডে ধাক্কা দিয়ে জানান দেন সহজ জয় আজকের দিনে মিলবে না।
রক্ষণভাগে ইনজুরির ছোবল সামাল দিতে হিমশিম খাওয়া রিয়াল ম্যাচের ৩৩ মিনিটে গোলের দেখা পায় গন্সালো গার্সিয়ার নিখুঁত ফিনিশে। তবে সেই আনন্দের সময় সংক্ষিপ্ত ছিল। মাত্র চার মিনিটের মাথায় রাউল আসেন্সিওর ফাউলে পেনাল্টি পায় আল-হিলাল। আর পেনাল্টি থেকে রুবেন নেভেস সমতায় ফেরান দলকে।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচ রিয়ালের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও আল-হিলাল একের পর এক প্রতিরোধ গড়ে তোলে। বিশেষ করে ইয়াসিন বোনোর গোললাইনের দৃঢ়তা ছিল চোখে পড়ার মতো। ৮৭ মিনিটে ফ্রান গার্সিয়াকে ফাউল করে পেনাল্টি উপহার দেয় আল-হিলাল। কিন্তু সেখানেও ভাগ্যের বিপরীতে গিয়ে ভালভার্দের দুর্বল শট আটকে দেন বোনো।
এই ম্যাচে অভিষেক হয় রিয়ালের নতুন দুই তারকা ট্রেন্ট-আলেকজ্যান্ডার আর্নল্ড ও ডিন হাউসেনের। যদিও শুরুটা হয়নি প্রত্যাশামতো। অন্যদিকে, আল-হিলালের গতি ও গেমপ্লান দেখে বোঝা যাচ্ছে ইনজাগির অধীনে এই দলটি শুধুই নামেই এশিয়ান জায়ান্ট নয়, মাঠেও তারা ইউরোপীয় পরাশক্তিদের চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো প্রস্তুত।
পরের ম্যাচে ২২ জুন দিবাগত রাতে মেক্সিকান ক্লাব পাচুকা এফসির মুখোমুখি হবে রিয়াল। আর আল-হিলাল খেলবে অস্ট্রিয়ান ক্লাব আরবি সলসবুর্গের বিপক্ষে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চবির বিশেষ ভোজের টোকেনে অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা ‘অতিথি’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিভিন্ন আবাসিক হলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও বিশেষ ভোজের আয়োজন করা হয়েছে। এতে আবাসিকদের শিক্ষার্থী বলা হচ্ছে এবং অনাবাসিকদের অতিথি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া, আবাসিকদের জন্য টাকার পরিমাণ কম ধরলেও অনাবাসিকদের জন্য বেশি ধরা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ ফরহাদ হোসেন হলে উন্নত ভোজের টোকেন আবাসিকদের জন্য ১০০ টাকা ধরা হয়েছে। অপরদিকে, অতিথিদের জন্য ধরা হয়েছে ১৭০ টাকা; এই অতিথিরা হলেন হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থী। শামসুন নাহার হলে আবাসিকদের জন্য ৮০ টাকা, অনাবাসিকদের জন্য ১৭০ টাকা। মিল পদ্ধতি চালু থাকা আমানত হলে আবাসিকদের জন্য ফ্রি হলেও অনাবাসিকদের জন্য ৭০ টাকা। তবে সোহরাওয়ার্দী হলে আবাসিক-অনাবাসিক সবার জন্যই ১৫৫ টাকা ধরা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিল শাবিপ্রবি প্রশাসন
চবিতে বিপ্লবী ছাত্র ঐক্যের আত্মপ্রকাশ
এদিকে, বিজয়-২৪ হলের প্রথম বিজ্ঞপ্তিতে আবাসিক-অনাবাসিক সবার জন্য ৮০ টাকা উল্লেখ করলেও দ্বিতীয় বিজ্ঞপ্তিতে অনাবাসিকদের জন্য ১৭০ টাকা ধরা হয়েছে। এভাবে অন্যান্য হলগুলোতেও একই অবস্থার কথা জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী জারিফ মাহমুদ বলেন, “৫ আগস্টের ফিস্ট নিয়ে হলে হলে বিশেষ খাবারের আয়োজন করছে, সেখানে আবাসিক-অনাবাসিক আলাদা করেছে। আমার প্রশ্ন হলো, প্রশাসনদের ছাত্র বা সন্তান কি শুধু আবাসিকরা? আমরা যারা অনাবাসিক, তারা কি বিশ্ববিদ্যালয়ে উড়ে এসেছি?”
তিনি প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনারা আমাদের হলে সিট দিতে পারেননি, এটা আপনাদের ব্যর্থতা। এই আবাসিক-অনাবাসিক পরিচয় বন্ধ করুন। আয়োজন করলে সবার জন্য সমান করে আয়োজন করুন। আর সেটা না পারলে আয়োজন বন্ধ করুন।”
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম শাহ ফেসবুকে লেখেন, “কোনো একটা বিশেষ দিন এলেই দেখা যায়, হল প্রশাসনগুলোর আবাসিক শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে দাঁড় করানোর ভণ্ডামি। ৫ তারিখে আয়োজনকে ঘিরে তারা আবার সেই অতিথি টার্ম সামনে নিয়ে আসছে। ফরহাদ হলে অনুষ্ঠান শেষে বিশেষ ভোজের আয়োজনের টোকেন আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য ১০০ টাকা এবং অতিথিদের জন্য ১৭০ টাকা। বাকি হলগুলোতে বোধহয় তাই করেছে। কিন্তু এই অতিথিগুলোও তো বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী।”
তিনি বলেন, “বাহির থেকে যে কয়েকজন শিক্ষার্থী আসবে, তাদের থেকে ৭০ টাকা করে বেশি না নিলে তো হল প্রশাসন দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে না। আর আপনাদের যদি সামর্থ্য নাই থাকে, কাউকেই খাওয়ায়েন না। কিন্তু ৫ আগস্টের দিনকে কেন্দ্র করে করা অনুষ্ঠানে প্রিভিলেজড-আনপ্রিভিলেজড বিষয়টা জিইয়ে রাখাটা নিতান্ত নোংরামি লাগছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এটা নিয়ে ভাবা উচিত।”
এ বিষয়ে শহিদ মো. ফরহাদ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, “এ সিদ্ধান্তটি শুধু ফরহাদ হলের জন্য নয়, অন্যান্য হলেও এ সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। মূলত উন্নত ভোজের আয়োজনটি আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য করা হয়েছে। তারপরেও কোনো অনাবাসিক শিক্ষার্থী বা কারো বন্ধুবান্ধব অংশ নিতে চাইলে পারবে। সেক্ষেত্রে তাদের জন্য টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ে সব হল প্রাধ্যক্ষের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী