বিদেশে উচ্চশিক্ষার নতুন বাস্তবতা: ‘বিগ ফোর’ দেশের পরিবর্তনে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের করণীয়
Published: 22nd, June 2025 GMT
বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় চারটি গন্তব্য অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৫ সালে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে এ চারটি দেশ। নতুন ভিসা নীতিমালা, আর্থিক সামর্থ্য প্রমাণের কড়াকড়ি এবং শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য যাচাইয়ের নিয়ম এসব দেশের উচ্চশিক্ষার পরিবেশে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।
তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে শুধু যোগ্য, সৎ ও সুপরিকল্পিত শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগের দরজা আরও প্রশস্ত হচ্ছে।
বিদেশে পড়া: এটি বিকল্প নয়, হোক অন্যতম লক্ষ্য—
বাংলাদেশে অনেক শিক্ষার্থী বিদেশে পড়ার সিদ্ধান্ত নেন যখন তাঁরা দেশে ক্যারিয়ার নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েন। কিন্তু এই মানসিকতা পরিবর্তন প্রয়োজন। বিদেশে পড়াশোনা ‘বিকল্প’ নয়, এটি হতে হবে একটি পরিকল্পিত ‘গ্লোবাল ক্যারিয়ার’ গঠনের প্রাথমিক ধাপ। এটি শুধু একটি সার্টিফিকেট অর্জনের বিষয় নয়, এটি একটি বিশ্বজনীন দক্ষতা অর্জনের যাত্রা, যা স্থায়ী কর্মসংস্থান, বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা এবং দেশীয় উন্নয়নে অবদান রাখার সুযোগ তৈরি করে।
আরও পড়ুনবেলজিয়ামে আইইএলটিএস ছাড়াই যেভাবে স্কলারশিপ নিয়ে পড়ার সুযোগ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীদের জন্য সতর্কবার্তা—
বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেক শিক্ষার্থী দ্রুত সফলতার আশায় ভুয়া ডকুমেন্ট, অতিরিক্ত খরচ এবং এজেন্টভিত্তিক প্রতারণার ফাঁদে পড়ার খবর আমরা প্রায়ই শুনি। এই শর্টকাট পথগুলো শুধু ভিসা বাতিলের ঝুঁকি বাড়ায় না বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীর রেকর্ড ক্ষতিগ্রস্ত করে।
দ্রুত সফলতা কখনোই টেকসই নয়—
এই যাত্রার জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক পরিকল্পনা এবং পরিবারের সচেতন অংশগ্রহণ। ধাপে ধাপে সঞ্চয়, বাস্তবসম্মত বাজেট এবং বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নিয়ে এগোলে এই ফাঁদ এড়ানো সম্ভব।
‘বিগ ফোর’ দেশের সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলোঅস্ট্রেলিয়া—
* অপ্রত্যক্ষভাবে শিক্ষার্থীসংখ্যা সীমিত করছে CoE নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে।
* নতুন Genuine Student (GS) নীতির আওতায় শিক্ষার্থীদের স্পষ্টভাবে তাঁদের ক্যারিয়ার ও শিক্ষা পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে হচ্ছে।
* আর্থিকভাবে দুর্বল শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ডকুমেন্ট চাওয়া হচ্ছে।
* স্বাস্থ্যসেবা, আইটি, প্রকৌশল ও শিক্ষকতা খাতে অস্ট্রেলিয়ার চাকরির বাজার এখনো উন্মুক্ত।
আরও পড়ুনযুক্তরাজ্যে স্টুডেন্ট ভিসা চাইলে যা জানা জরুরি২৭ অক্টোবর ২০২৪কানাডা—
* Provincial Attestation Letter (PAL) বাধ্যতামূলক, যা শিক্ষার্থীসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
* আর্থিক প্রমাণের পরিমাণ বেড়েছে।
* ভিসা প্রসেসিং সময় বেড়েছে।
* প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য, পরিবেশবিজ্ঞান খাতে দক্ষ শিক্ষার্থীদের জন্য চাকরি ও PR-এর সুযোগ যথেষ্ট।
যুক্তরাজ্য—
* ‘অথেনটিসিটি’ভিত্তিক শিক্ষার্থী নির্বাচন চালু হয়েছে।
* Graduate Route (PSW) সময়কাল কমানোর প্রস্তাব চলছে।
* ডিপেন্ডেন্ট ভিসা নিষিদ্ধ।
* ব্যবসা, ফাইন্যান্স, পাবলিক হেলথ এবং ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রিতে যুক্তরাজ্য এখনও শক্ত অবস্থানে।
যুক্তরাষ্ট্র—
* সাম্প্রতিক সময়ে কিছু শিক্ষার্থীকে ছোট আইন লঙ্ঘনের কারণে ডিপোর্ট করা হয়েছে, যদিও আদালত এই সিদ্ধান্ত বাতিল করেছেন।
* নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আছে।
* STEM, OPT, স্কলারশিপ ও গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্র অপ্রতিদ্বন্দ্বী। মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগ এখনো সীমাহীন।
নীতিমালার পরিবর্তন হলেও অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র—সব দেশই মেধাবী, সৎ এবং ক্যারিয়ারভিত্তিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশাল সম্ভাবনার দরজা খোলা রেখেছে। এ ক্ষেত্রে প্রস্তুতির পাঁচটি মূল ধাপ হলো—
১.
২. ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জন করুন ও প্রতিষ্ঠানিক ফলাফল ভালো রাখুন।
৩. প্রামাণিক (অথেনটিক) ডকুমেন্ট ব্যবহার করুন।
৪. লক্ষ্য নির্ধারণ করুন দীর্ঘ মেয়াদে।
৫. স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানের সহায়তা ও পরামর্শ নিন।
বিশ্বের উচ্চশিক্ষা নীতিমালা বদলাচ্ছে, কিন্তু সততা, প্রস্তুতি ও মেধা থাকলে সম্ভাবনা এখনো উজ্জ্বল। যাঁরা সময় নিয়ে সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁরা আগামী দিনেও বৈশ্বিক ক্যারিয়ারে সাফল্যের পথে এগিয়ে যাবেন।
*লেখক: আনোয়ার হোসেন, হেড অব সেলস অ্যান্ড অপারেশন, আইডিপি এডুকেশন বাংলাদেশ লিমিটেড
আরও পড়ুনমেধাবীরা যে ১০ পদ্ধতিতে পড়াশোনা করেন০৭ আগস্ট ২০২৩উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ক ষ র থ দ র জন য স য ক তর ষ ট র য ক তর জ য র পর ব আর থ ক প রস ত
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে শাকিব-বুবলীর অবকাশ যাপন, মুখ খুললেন অপু বিশ্বাস
ঢালিউডের প্রেম, বিয়েবিচ্ছেদ আর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু যেন বরাবরই ঘুরে ফিরে আসছে সুপারস্টার শাকিব খান ও তার দুই প্রাক্তন স্ত্রী অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলীকে ঘিরে। কখনো ক্যামেরার সামনে, কখনো ব্যক্তিজীবনের একান্ত মুহূর্তে। এই ত্রয়ীর সম্পর্ক নিয়ে দর্শকদেরও আগ্রহের শেষ নেই।
যুক্তরাষ্ট্রে শাকিব-বুবলীর একান্ত সময় কাটানোর খবর এবং তাদের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় নতুন করে আলোচনায় এসেছে তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক। এ পরিস্থিতিতে মুখ খুললেন শাকিবের প্রথম স্ত্রী ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস। জানালেন তার অনুভূতি, দৃষ্টিভঙ্গি আর মাতৃত্বের গভীর দায়িত্ববোধের কথা।
রবিবার (৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় ঢাকার বনানীর একটি রেস্তোরাঁয় লেখক সিফাত নুসরাতের নতুন বই ‘অগ্নিকন্যা’-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অপু বিশ্বাস। আরো উপস্থিত ছিলেন মডেল মারিয়া, সংগীতশিল্পী কোনাল, প্রযোজক আজিজসহ শোবিজ অঙ্গনের পরিচিত মুখেরা।
আরো পড়ুন:
দুই স্ত্রীকে খুশি রাখা অসম্ভব, শাকিব প্রসঙ্গে জয়
শাকিবের সিনেমা নিয়ে বিভ্রান্তি, মুখ খুললেন প্রযোজক
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শাকিব-বুবলীর প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে অপু বিশ্বাস বেশ দার্শনিক ভঙ্গিতে জবাব দেন। তিনি বলেন, “কী অনুভূতি বলব! মানুষ মানুষকে না-ও চিনতে পারে—এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। যেমন ধরুন, আপনি আমাকে ভালোবাসতে পারেন কিন্তু সেই মুহূর্তে সিফাতকে নাও ভালোবাসতে পারেন। আবার এমনো হতে পারে, আপনি সিফাতকে ভালোবাসেন, আমাকে নাও ভালোবাসতে পারেন। এটাই সত্যি।”
শাকিব খান প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নের জবাবে অপু বিশ্বাস স্মরণ করিয়ে দেন তার আগে দেওয়া এক ফেসবুক স্ট্যাটাসের কথা। “আমি ১৫ জুন একটা ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। যদি কেউ সেটা না পড়ে থাকেন, তাহলে আজই পড়ে নিতে পারেন। তাহলেই আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন,” বলেন অপু বিশ্বাস।
ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা হলেও অপু বিশ্বাস পেশাদারিত্ব নিয়েও স্পষ্ট বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “ব্যক্তিগত সম্পর্কের বাইরেও আমাদের পেশাগত সম্পর্ক রয়েছে। আমরা সবাই প্রফেশনাল শিল্পী, যাদের নাম বললেন তারাও প্রফেশনাল শিল্পী। সে দিক থেকে আমি সবার প্রতিই সম্মান রাখি।”
সন্তান আব্রাম খান জয় প্রসঙ্গেও কথা বলেন অপু বিশ্বাস। তার কণ্ঠে ফুটে ওঠে একজন মায়ের গভীর ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ। অপু বলেন, “অভিনেত্রী হিসেবে আমি সফলতা পেয়েছি, কিন্তু মা হিসেবে আমার জীবনের সফলতা সেদিনই আসবে, যেদিন আমি আমার ছেলেকে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে সবার সামনে উপস্থাপন করতে পারব। দর্শক ও ভক্তদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, তারা যেন সবসময় ভালোবাসা ও দোয়া দিয়ে আমাকে ভরিয়ে রাখেন।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত