ছোট পর্দার নির্মাতা আবু হায়াত মাহমুদ প্রথমবারের মতো পা রাখছেন বড় পর্দায়। তার পরিচালনায় তৈরি হতে যাচ্ছে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ঢাকা’। সিনেমার ট্যাগলাইন – ‘আমি কালা’। কাহিনির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে নব্বই দশকের ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড, যার বেশিরভাগ ঘটনাই বাস্তব। 

এই চলচ্চিত্রের গল্প, ভাবনা ও নির্মাণে আবু হায়াত মাহমুদের সঙ্গী হয়েছেন লেখক ও চিত্রনাট্যকার মেজবাউদ্দিন সুমন, যিনি সিনেমাটির চিত্রনাট্য লিখেছেন।

প্রথমদিকে শোনা গিয়েছিল, সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করবেন শরিফুল রাজ অথবা মোশাররফ করিম। তবে পরিচালক তখন সে গুঞ্জন পুরোপুরি নাকচ করেননি। বছর না ঘুরতেই নির্মাতা আনলেন বড়সড় চমক।

সিনেমার মূল চরিত্র ‘কালা জাহাঙ্গীর’-এর ভূমিকায় থাকছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের শীর্ষ তারকা শাকিব খান। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শাকিব খানের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা, স্ক্রিপ্ট পাঠ, পারিশ্রমিক চূড়ান্তসহ অধিকাংশ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরের অপেক্ষা।

প্রতীক্ষিত সিনেমাটি ২০২৬ সালের ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সে অনুযায়ী সময় ধরেই শাকিব খানকে যুক্ত করা হয়েছে প্রজেক্টে।

সিনেমায় শাকিব খানের স্ত্রীর চরিত্রে থাকছেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মধুমিতা সরকার। তার সঙ্গেও প্রাথমিক কথা চূড়ান্ত হয়েছে এবং সিডিউল নিশ্চিত বলে জানিয়েছে প্রযোজনা সংশ্লিষ্ট সূত্র।

সিনেমাটিতে আরও অভিনয় করবেন অভিনেতা তারিক আনাম খান, দিলারা জামান এবং শহীদুজ্জামান সেলিম। চলচ্চিত্রের গল্পে তুলে ধরা হবে ১৯৯০-এর দশকের ঢাকার অপরাধজগত, যেখানে কালো টাকা, গ্যাং রাজনীতি, প্রভাবশালী মাফিয়া চরিত্র এবং শহরের উল্টো পিঠের এক ভয়ঙ্কর বাস্তবতা। আর এর কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে রহস্যময় ও আলোচিত সন্ত্রাসী চরিত্র– কালা জাহাঙ্গীর।

ঢাকা/রাহাত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র চর ত র

এছাড়াও পড়ুন:

ওসমানী উদ্যানে আবার স্থাপনার পেছনে লক্ষ্য ‘টাকা কামানো’: বাপা

রাজধানীর ঐতিহাসিক ওসমানী উদ্যান উন্নয়নের নামে ধ্বংস করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) নেতারা। তাঁদের ভাষায়, পুরান ঢাকার ফুসফুসখ্যাত এই উদ্যানকে ঘিরে চলছে ‘অর্থ কামাইয়ের উন্নয়ন’, যার সঙ্গে জুলাইয়ের গণ–অভ্যুত্থানের ইতিহাস বা চেতনার কোনো সম্পর্ক নেই।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ওসমানী উদ্যান পরিদর্শন করেন বাপার নেতারা। পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এ কথাগুলো বলেন সংগঠনটির নেতারা।

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের নেতৃত্বে উদ্যান পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন বাপার সহসভাপতি মহিদুল হক খান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতা রুহিন হোসেন, বাপার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর, ফরিদুল ইসলাম ও হুমায়ুন কবির, নির্বাহী কমিটির সদস্য জাভেদ জাহান, জাতীয় কমিটির সদস্য শেখ আনছার আলী প্রমুখ। তাঁদের সঙ্গে গ্রীন ভয়েসের নেতা–কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।

২০১৮ সাল থেকে ওসমানী উদ্যান সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ। এই সময়ে উদ্যান উন্নয়নের নামে ব্যয় হয়েছে প্রায় শতকোটি টাকা। এখন সেখানে ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’ নির্মাণে আরও প্রায় ৪৭ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। পরিবেশবিদদের অভিযোগ, এই উদ্যানের আইনগত মর্যাদা উপেক্ষা করে বারবার অবকাঠামো নির্মাণই এখন মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘উন্নয়ন’ নামে উদ্যানের ভেতরে নতুন স্থাপনা নির্মাণ করে আসলে জনগণের সম্পদ ধ্বংস করা হচ্ছে।

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, ‘এখানে যেটা করা হইতেছে, এটা টাকা বানানো। এর সঙ্গে জুলাই ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। প্রমাণটা হলো, এখানে যে ওয়াটার বডিজ আছে, ওখানে গেলেই দেখা যায়, ওখান থেকেই ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব হচ্ছে। এই স্মৃতি করে লাভটা কী? এই প্ল্যানটা আমি স্মৃতিস্তম্ভ বলি না, এটা স্রেফ মানি মেকিং প্রজেক্ট। আজকে যারা এগুলা (জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ) করছে, এগুলো কিছু মানি মেকিংয়ের জন্য করছে। এর মধ্যে আমি কোনো সঠিক প্ল্যানও দেখছি।’

ওসমানী উদ্যানকে তথাকথিত উন্নয়নের নামে ধ্বংস করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘যেই সরকারই আসুক, তাদের মাথায় থাকে শুধু উন্নয়নের নামে টাকা কামানোর চিন্তা। বহুদিন ধরে উদ্যানটা ব্যারিকেড দিয়ে ঘেরা, জনগণ ঢুকতেই পারে না। এই প্রকল্পে জনগণের টাকা লুটপাট ছাড়া অন্য কোনো কর্মকাণ্ড আমি দেখি না। ওসমানী উদ্যান জনগণের সম্পদ। এই উদ্যান উন্মুক্ত থাকা দরকার। বিশেষ করে মেহনতি, সাধারণ মানুষের হাঁটাচলার ও বিশ্রামের জায়গা হিসেবে। অথচ আজ সেটাকে দখল করে তথাকথিত উন্নয়ন দেখানো হচ্ছে। আসলে এটা পরিবেশ ধ্বংসেরই আরেক নাম।’

ওসমানী উদ্যান পরিদর্শন শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনে গিয়ে সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ক্ষোভের কথা জানান বাপার নেতারা। এ সময় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম বাপা নেতাদের বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তে ওসমানী উদ্যানে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না।

আরও পড়ুনওসমানী উদ্যান: ঢাকার ‘ফুসফুসে’ আবার স্থাপনা ১১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ