বার্সেলোনার সাবেক কিংবদন্তি ফুটবলার ও কোচ জাভি হার্নান্দেজ, যিনি স্প্যানিশ ফুটবলের স্টাইল আর দর্শনের অন্যতম আধুনিক প্রতীক। এবার বিস্ময়করভাবে ভারতের জাতীয় ফুটবল দলের কোচ হতে চেয়েছিলেন! কিন্তু সেই সম্ভাবনা শেষ পর্যন্ত ধাক্কা খেয়েছে কিছু ‘প্রযুক্তিগত ভুল’ আর বাস্তব ‘বাজেট সীমাবদ্ধতার’ কারণে।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, জাভি নিজে ভারতের ফুটবল ফেডারেশনের (এআইএফএফ) কোচের পদে আগ্রহ প্রকাশ করে আবেদন পাঠান। আবেদনটি ছিল সরাসরি একটি ব্যক্তিগত ইমেইলের মাধ্যমে। তবে সেই আবেদনপত্রে ছিল কিছু ঘাটতি। যোগাযোগের নম্বর ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য অনুপস্থিত ছিল।

এআইএফএফ-এর জাতীয় দলের ডিরেক্টর সুব্রত পাল এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, “জাভির নাম তালিকায় ছিল, এটা সত্যি।”

আরো পড়ুন:

গোল বাতিলের ক্ষোভে দর্শকের সঙ্গে তর্কে জড়ালেন নেইমার

বার্সায় রাশফোর্ড খেলবেন ১৪ নম্বর জার্সিতে

কিন্তু সবকিছুর পরও স্প্যানিশ মহাতারকার সেই আগ্রহ ফলপ্রসূ হয়নি। একাধিক বোর্ড সদস্যদের মতে, ফেডারেশনের বর্তমান বাজেট পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে জাভির প্রোফাইলটি আর এগিয়ে নেওয়া হয়নি। সরাসরি বলা না হলেও ইঙ্গিত পরিষ্কার, জাভির মত হাই-প্রোফাইল কোচের পারিশ্রমিক সামাল দেওয়াটা কঠিন হয়ে যেত এআইএফএফ এর জন্য।

২০২৪ সালের মে মাসে বার্সেলোনার ডাগআউট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন জাভি। কোচিংয়ে তার স্পর্শে কাতালান ক্লাব পেয়েছে শৃঙ্খলা ও নতুন প্রজন্মের বিকাশের দিশা। আগেই তিনি ভারতীয় ফুটবলে স্প্যানিশ কোচ ও দর্শনের উপস্থিতি দেখে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। সম্ভবত সেই আবেগ থেকেই ভারতের জাতীয় দলের দায়িত্ব নিতে চাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ।

ভারতের ফুটবল বর্তমানে পুনর্গঠনের পথে। জাতীয় দলের পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে, আর কোচিংয়ে নতুন দিশার খোঁজে আছে ফেডারেশন। এমন সময়ে যদি জাভির মতো বিশ্বমানের এক কোচ দল পরিচালনায় আসতেন, তাহলে সেটা হতে পারত ঐতিহাসিক মোড়।

কিন্তু যেটা হতে পারত, সেটা হলো না শুধু বাজেট ও অস্পষ্ট যোগাযোগের কারণে। এমনকি পুরোপুরি সঠিকভাবে যোগাযোগ করলেই হয়তো আলোচনা আরও এগিয়ে যেতে পারত।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ