নতুনভাবে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টাকারীদের প্রত্যাখ্যানের আহ্
Published: 5th, August 2025 GMT
নতুনভাবে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টায়রত দলগুলোকে প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানিয়ে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে নতুন করে সাজানোর ঘোষণা দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি উদযাপন’ উপলক্ষে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত গণমিছিলপূর্ব সমাবেশে তিনি এ ঘোষণা দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “আয়না ঘরের কারিগর, গুম-খুন, হত্যার দোসর খুনি হাসিনা ২৪-এর এই দিনে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছে। দেশের টাকা যারা বিদেশে পাচার করেছে, তাদের উৎখাতে ছাত্র-জনতা যখন দেশের সব অলিগলিতে আওয়াজ তুলেছিল, আবু সাঈদ দু’হাত উঠিয়ে বুক পেতে দিয়েছিল। এমনকি মা-বোনেরা পর্যন্ত রাস্তায় নেমেছিল, তখন মুগ্ধের ‘পানি লাগবে’ সেই আওয়াজ এখনো কানে ভাসে।”
তিনি বলেন, “এত ত্যাগ, এত রক্ত, এত জীবন দেওয়ার মূল লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ছিল আর কোনো স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট, টাকা পাচারকারী, আয়না ঘর তৈরির কারিগরের জন্ম যেন না হয়। আমরা ঘৃণাভরে ধিক্কার জানাই সেসব ক্ষমতা লোভীদের, যারা চাঁদাবাজির মাধ্যমে, স্ট্যান্ড দখল, জায়গা দখল করে নতুনভাবে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার চেষ্টায়রত। তাদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করতে হবে।”
“তারা কী শিশুদের আত্মচিৎকার শুনতে পায়নি? হাজার হাজার মায়ের কোল খালি হয়েছে, হাজারো মেধাবী ছাত্ররা শহীদ হয়েছে, পূর্বের বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার জন্য? যারা বিগত দিনে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে, তাদের দেশবাসী পুনরায় ক্ষমতায় দেখতে চায় না,” যুক্ত করেন আমির।
মুফতি রেজাউল করীম বলেন, “এদেশ আমার, এদেশকে সুন্দর করার দায়িত্বও আমার। আসুন সবাই মিলে সন্ত্রাস, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজদের উৎপাত করি। বিদেশি তাবেদারদের চিরতরে কবর রচনা করতে করি। সবাই একাকার হয়ে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে নতুন করে সাজাই।”
দলের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ।
এছাড়া বক্তব্য দেন, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম-মহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, মুফতী রেজাউল করীম আবরার, আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন, আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন, মাওলানা মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, আব্দুল আউয়াল মজুমদার, ছাত্রনেতা মুনতাসির আহমদ, মুফতী ফরিদুল ইসলাম, মুফতী মাছউদুর রহমান, যুবনেতা হাম্মাদ বিন মোশাররফ, শ্রমিকনেতা হাফেজ শাহাদাত হোসেন প্রধানিয়া।
মাওলানা কেএম শরীয়াতুল্লাহ ও ইঞ্জিনিয়ার মুরাদ হোসেনের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম, মুফতী কেফায়েতুল্লাহ কাশফী, আলহাজ্ব মনির হোসেন, আমিরুল হক, হাফেজ মাওলানা ইউনুছ ঢালী প্রমুখ।
অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ সেখ বলেন, “১ বছর পূর্বে শত শত মানুষ শহীদ হয়েছিল, মানুষের চোখের পানি ঝড়েছিল, স্বপ্ন ছিল একটি সুন্দর, স্বাধীন বাংলাদেশের। আমরাও আশাবাদী ছিলাম, যারা শাহাদাত বরণ করেছে, তাদের ক্ষমতার লোভ ছিল না, পদের লোভ ছিল না। তাদের চাওয়া ছিলো দেশের মানুষ যেন ভাল থাকে। আসুন সবাই মিলে দেশটাকে ভালভাবে গড়ি। কিছু মানুষ চাচ্ছে দ্রুত চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির বৈধতা। ফ্যাসিস্টদের প্রেতাত্মাদের মধ্যে পিআর-এর কোনো অনুভুতি জাগ্রত হয় না। সংস্কার ও গণহত্যার বিচার তারা চায় না।” তিনি পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের মাধ্যমেই কেবল দেশকে নতুনভাবে গড়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, “জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে জনআকাঙ্ক্ষার সঞ্চার হয়েছে। পীর সাহেব চরমোনাই’র নেতৃত্বে রাষ্ট্রের আমূল পরিবর্তন হবে। মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত হবে। সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়ার প্রতিফলন ঘটবে।”
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, “বিগত ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ব্যর্থতার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুতপ্ত হওয়া উচিত। সব রাজনৈতিক দল মিলেও ফ্যাসিবাদী ও খুনি হাসিনাকে পদচ্যুত করা যায়নি। কিন্তু ছোট ছোট ছাত্ররা তাদের জীবনের বিনিময়ে দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করেছে। সব কৃতিত্ব ছাত্র-জনতার। আজ যারা ছাত্রদের আন্দোলনকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে, তাদের উদ্দেশ্য কেবলই ক্ষমতা।”
প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, “জুলাই আন্দোলনের আমাদের মিছিলে সরাসরি গুলি করে আমাদের দমিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিল ফ্যাসিবাদী হাসিনা। আমরা জীবনের মায়া ত্যাগ করে ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশগড়ার আন্দোলন গড়ে তুলেছি পুনরায় ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য নয়।” তিনি ছাত্র-জনতার চাওয়া পাওয়া বৈষম্যহীন কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, “ভোট ও ভাতের অধিকারের জন্য এবং খাদ্য, বস্ত্র ও চিকিৎসার মৌলিক অধিকারের জন্য জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছে। যারা দুর্নীতিতে বারবার চ্যাম্পিয়ান হয়েছে, তারা পরীক্ষিত শোষক ও জালেম। তাদের আমলেও মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারেনি। এরশাদ, হাসিনা ও খালেদা সবাইকেই রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করতে হয়েছে।”
সমাবেশ শেষে একটি বিশাল গণমিছিল মুফতি রেজাউল করীরে নেতৃত্বে বায়তুল মোকাররম, পল্টন মোড়, প্রেসক্লাব কদম ফোয়ারা হয়ে শাহবাগ মোড়ে গিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ও মোনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।
দুপুর আড়াইটা থেকে জুলাই বিপ্লবের ডকুমেন্টরি প্রদর্শন এবং জাতীয় সাংষ্কৃতিক সংগঠন কলরব, মানযিল, সুরের তরীর বরেণ্য শিল্পীদের কণ্ঠে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সবশেষে সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত জুলাই যোদ্ধাদের স্মরণে বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে দেশবরেণ্য উলামায়ে কেরাম আলোচনা করেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত র জনত র জন য ক ষমত ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
শহিদনগর বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদ সংলগ্ন মাঠে বাবুলের উঠান বৈঠক
সোমবার বিকাল ৪টায় নারায়ণগঞ্জ শহিদনগর বায়তুল জান্নাত জামেমসজিদ (প্রাথমিক বিদ্যালয়) সংলগ্ন মাঠে নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও বিশিষ্ট শিল্পপতি সমাজসেবক আবু জাফর আহমেদ বাবুল এর পক্ষে শহিদনগর এলাকাবাসী এক উঠান বৈঠকের আয়োজন করে।
গোগনগর সমাজ কল্যাণ পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আমজাদুল ইসলাম'র সঞ্চালনায় ও শহিদনগর বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদের সহ- সভাপতি সুলতান আহমদ'র সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ–৫ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী শিল্পপতি আবু জাফর আহমেদ বাবুল।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, আপনারা যদি বিএনপির ধানের শীষকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে পারেন, তাহলে শুধু শহীদনগর নয় পুরো নারায়ণগঞ্জে উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যাবে, পরিবর্তন হবে নারায়ণগঞ্জে। আমাদের যে প্রত্যাশা, যে চাহিদা তা ছিনিয়ে নিয়ে আসবো।
দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার পক্ষেই আমি কাজ করবো। মিলেমিশে কাজ করার চেষ্টা করবো। আপনারা সকলে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্য, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ তার সুস্থতার জন্য দোয়া করবেন, তারেক রহমানের জন্য দোয়া করবেন।
তার সাথে আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডঃ মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ হল জিয়া ফোরামের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কে এম মজিবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক আক্তার হোসেন খোকন শাহ, মো. কবির হোসেন, মো. হৃদয়, জাহাঙ্গীর আলম, তোফাজ্জল হোসেন, সুলতান আহমদ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, শহীদ নগর এলাকা সব সময়ই বিএনপির ঘাঁটি। এখানে সব সময়ই ধানের শীষ প্রতীক জয়লাভ করে থাকে। আমরা বাবুল ভাইয়ের পক্ষে থেকে সবসময় ধানের শীষের পক্ষে কাজ করে যাব।