দলীয় পদ স্থগিত থাকা বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের ‘অবমাননাকর মন্তব্যের’ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।

ডাকসু বলেছে, ফজলুর রহমানকে তাঁর এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন ও নিন্দনীয় বক্তব্যের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী–সমাজের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের বিভেদমূলক ও বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য থেকে বিরত থাকতেও তাঁর প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।

আজ রোববার রাতে ডাকসুর জিএস (সাধারণ সম্পাদক) এস এম ফরহাদের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে। গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে ২৮ পদের ২৩টিতে জিতেছে ইসলামী ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট। ডাকসু নির্বাচনের এমন ফলাফল নিয়ে সম্প্রতি একটি টক শোতে অংশ নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন ফজলুর রহমান৷

ফজলুর রহমানের সেই মন্তব্যগুলো প্রসঙ্গে ডাকসুর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান কর্তৃক অবমাননাকর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে ডাকসু। ডাকসু নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে বিএনপির নেতৃত্বস্থানীয় পর্যায় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘বিক্রি হয়ে যাওয়া মস্তিষ্ক’, ‘ট্রেন্ডে গা ভাসানো’, ‘দাসী’, ‘পশ্চাৎপদ’ ইত্যাদি ঘৃণিত বিশেষণে আখ্যায়িত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ফজলুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হাটহাজারী মাদ্রাসায় রূপান্তরিত হয়েছে বলে যে ঘৃণ্য মন্তব্য করেছেন, ডাকসু মনে করে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মর্যাদাহানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করার শামিল।

ডাকসু বলেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি অসাম্প্রদায়িক, মুক্তবুদ্ধি চর্চার কেন্দ্র এবং দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার। ধর্ম, জাতি, বর্ণ ও মতাদর্শ নির্বিশেষে সব শিক্ষার্থীর সমান মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে একটি মাল্টিকালচারাল (বহুসংস্কৃতির) প্রতিষ্ঠান হিসেবে শতবর্ষ পার করেছে। এমন পটভূমিতে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যে প্রকাশিত ঘৃণ্য ও বর্ণবাদী বক্তব্য শুধু শিক্ষার্থীদের জন্যই নয়, বরং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংগ্রামের অবমাননা।

ডাকসুর বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ডাকসু দৃঢ়ভাবে জানাচ্ছে—এ ধরনের অবমাননাকর বক্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ফজলুর রহমানকে তাঁর এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন ও নিন্দনীয় বক্তব্যের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী–সমাজের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের বিভেদমূলক ও বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে। ডাকসু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এর শিক্ষার্থীদের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখার বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফজল র রহম ন ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রাথমিকে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাল উদীচী

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা–বিষয়ক শিক্ষক নিয়োগে সরকারের প্রজ্ঞাপনকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। একই সঙ্গে যাঁরা সংগীত শিক্ষক নিয়োগের বিরোধিতা করছেন, তাঁদের প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাঁদের রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে উদীচী।

আজ রোববার এক বিবৃতিতে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদ সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে উদীচীর নেতারা বলেন, যারা শৈশব থেকেই সুর ও সংগীতচর্চার মধ্য দিয়ে বড় হয়, তাদের মধ্যে শুভবোধ সদাজাগ্রত থাকে। তারা মন্দ কোনো কাজের দিকে ধাবিত হয় না। আবহমানকাল ধরে বাংলার পথে–প্রান্তরে অনেক বৈচিত্র্যময় সংগীতের চর্চা হয়ে আসছে। সংগীতের চর্চা বাংলাদেশের জাতীয় সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ। তাই শিশুদের সংগীত শিক্ষা দেওয়ার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা অবশ্যই প্রশংসনীয়।

বিবৃতিতে উদীচীর নেতারা আরও বলেন, যাঁরা সংগীত শিক্ষক নিয়োগের বিরোধিতা করছেন, তাঁরা শিশুদের মানসিক বিকাশ, নৈতিক শিক্ষা, সৃজনশীলতা ও সহনশীলতা বৃদ্ধির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চাইছেন। দেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন থেকে চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানসহ সামাজিক আন্দোলনে সংগীত ও শিল্প-সংস্কৃতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সংগীত শিক্ষাকে শুধু বিনোদনের বিষয় হিসেবে দেখা যাবে না।

গত ২৮ আগস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০২৫ প্রজ্ঞাপণ আকারে প্রকাশিত হয়। সেখানে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা–বিষয়ক শিক্ষক নিয়োগের বিধান রাখা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ