জাহাজ আমদানিতে ভ্যাট অব্যাহতি, মানতে হবে ৭টি শর্ত
Published: 21st, September 2025 GMT
সমুদ্রগামী বড় জাহাজ আমদানির ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট দিতে হবে না। ২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এই অব্যাহতি–সুবিধা থাকবে। এই ভ্যাট অব্যাহতিতে আমদানিকারককে ৭টি শর্ত পূরণ করতে হবে। ৫ হাজার ডিডব্লিউটি ধারণক্ষমতার বেশি জাহাজ আমদানি করতে হবে।
সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ–সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে। এতে সই করেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
এনবিআরের প্রজ্ঞাপন অনুসারে ৭টি শর্ত হলো—১.
২. আমদানি করা জাহাজ ২৫ বছরের বেশি পুরোনো হতে পারবে না।
৩. আমদানি করা জাহাজ কমপক্ষে ৩ বছর বাংলাদেশের পতাকাবাহী সমুদ্রগামী জাহাজ হিসেবে পণ্য পরিবহনে ব্যবহার করতে হবে। এর আগে বিক্রি বা হস্তান্তর করা যাবে না। তবে ব্যবসায়িক মন্দা বা এমন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৩ বছরের আগে বিক্রির করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে কিংবা দৈব-দুর্বিপাক, দুর্ঘটনা বা অন্য যেকোনো কারণে স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রি করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে আমদানিকালে প্রযোজ্য ভ্যাট শোধ করবে—এমন অঙ্গীকারনামা দিতে হবে।
৪. আমদানি করা জাহাজের যাবতীয় আয় এবং জাহাজ পরিচালনাসংক্রান্ত যাবতীয় ব্যয় বাংলাদেশের কোনো তফসিলি ব্যাংক রক্ষিত ফরেন কারেন্সি (এফসি) হিসাবের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। প্রতি এক বছর অন্তর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সপক্ষে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃক ইস্যুকৃত প্রসিড রিয়েলাইজেশন সার্টিফিকেট (পিআরসি) বা প্রত্যয়নপত্র স্থানীয় মূল্য সংযোজন কর কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।
৫. অয়েল ট্যাংকার আমদানির ক্ষেত্রে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা থেকে সামুদ্রিক দূষণ রোধকল্পে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।
৬. জাহাজে কর্মরত সব পর্যায়ের জনবলের কমপক্ষে ৭০ শতাংশ বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রাধান্য দিতে হবে।
৭. যাবতীয় শর্ত পালন করা হবে—এই মর্মে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা দিতে হবে। পাশাপাশি আমদানি করা জাহাজের ধারণক্ষমতা, তৈরির দেশ ও সাল উল্লেখ করে আমদানিকারককে এনবিআরে আবেদন করতে হবে এবং তা গৃহীত হতে হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিশাল ব্ল্যাকহোলে বিস্ময়কর আলোকচ্ছটার খোঁজ
প্রায় ১০ লাখ কোটি সূর্যের আলোর সমান শক্তিশালী এক ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ার বা কৃষ্ণগহ্বর আলোকচ্ছটার সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ধারণা করা হচ্ছে, এটি সবচেয়ে বড় আলোকচ্ছটা। নতুন পর্যবেক্ষণ করা ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ারকে এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে বৃহৎ ও সবচেয়ে দূরবর্তী বলা হচ্ছে। এর অবস্থান পৃথিবী থেকে এক হাজার কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। আলোকচ্ছটার শক্তি প্রায় ১০ লাখ কোটি সূর্যের সমান।
একটি অতিভারী ব্ল্যাকহোল বৃহৎ কোনো নক্ষত্রকে গিলে ফেলছে বলে এই আলোকচ্ছটা তৈরি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির জ্যোতির্বিজ্ঞানী ম্যাথিউ গ্রাহাম বলেন, ‘এই ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ারটি এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে বড় ও সবচেয়ে দূরবর্তী। আমাদের সূর্যের ভরের চেয়ে কমপক্ষে ৩০ গুণ বেশি ভরের একটি বিশাল নক্ষত্র অতিভারী ব্ল্যাকহোলের খুব কাছাকাছি চলে আসছে বলে এমন ফ্লেয়ার তৈরি হয়েছে। ব্ল্যাকহোল নক্ষত্রকে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে বলে বিশাল পরিমাণ শক্তি নির্গত হচ্ছে।’ বিজ্ঞানী গ্রাহামের মতে, সেখানে বিশাল বিস্ফোরণের তীব্রতা ও স্থায়িত্বের কারণে এত বিশাল ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ার তৈরি হয়েছে। ব্ল্যাকহোল নিয়মিতভাবে নিকটবর্তী পদার্থকে গ্রাস করে থাকলেও এমন বিশাল মাত্রার ঘটনা অত্যন্ত বিরল। এমন বিশাল ফ্লেয়ার আগে যা দেখা গেছে, তার তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী। ফ্লেয়ারটি সর্বোচ্চ শিখরে থাকার সময় এখন পর্যন্ত দেখা যেকোনো ব্ল্যাকহোল ফ্লেয়ারের চেয়ে ৩০ গুণ বেশি উজ্জ্বল। দুটি মহাজাগতিক বস্তুর বিশাল আকারের কারণে এমনটা হচ্ছে। সূর্য থেকে কমপক্ষে ৩০ গুণ বেশি ভরের নক্ষত্রকে অতিভারী ব্ল্যাকহোল গ্রাস করেছে। ব্ল্যাকহোলের ভর সূর্যের ভরের ৫০০ মিলিয়ন গুণ বেশি বলা যায়। সাত বছরের বেশি আগে শুরু হওয়া এই বিস্ফোরণ সম্ভবত এখনো চলমান।
প্রাথমিকভাবে ২০১৮ সালে তিনটি স্থলভিত্তিক টেলিস্কোপ ব্যবহার করে জরিপের সময় ফ্লেয়ারের খোঁজ মেলে। তখন এটিকে ব্যতিক্রমী উজ্জ্বল বস্তু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ২০২৩ সালে হাওয়াইয়ের ডব্লিউ এম কেক অবজারভেটরি পর্যবেক্ষণ শুরু করে। বিজ্ঞানী গ্রাহাম বলেন, ‘এই আবিষ্কার ব্ল্যাকহোলের আচরণ সম্পর্কে নতুন তথ্য দিচ্ছে। প্রচলিত ধারণা অনুসারে মহাবিশ্বের বেশির ভাগ গ্যালাক্সির মাঝখানে একটি অতিভারী ব্ল্যাকহোল রয়েছে। এখন আমরা আরও গতিশীল পরিবেশ দেখছি। সুপারম্যাসিভ ধরনের ব্ল্যাকহোলকে অ্যাকটিভ গ্যালাকটিক নিউক্লিয়াস বলা হচ্ছে। এটিকে জে২২৪৫+৩৭৪৩ নামে নামকরণ করা হয়েছে।’
সূত্র: এনডিটিভি