পরাজয় খেলার-ই তো অংশ। বিজয়ী দল ভালো খেলে জিতবে তা যেমন লেখা থাকে, পরাজিত দল হারবে সেটাও লেখা থাকে। এই সমীকরণের ভেতরেই শুধু খেলা নয়, পুরো পৃথিবী চলছে।
বিজয়ীরা জিতছে, হাসছে, উল্লাসে মেতে উঠছে। আর পরাজিত দল খুঁজে পাচ্ছে সান্ত্বনা। বের করছে পরাজয়ের কারণ। জয় আর পরাজয়ের ভেতরে বেশ সূক্ষ্ম একটি রেখা থাকে। লড়াই, নিবেদন, প্রতিজ্ঞা, প্রত্যাশা, নেশা, প্রতিশ্রুতি, পরিশ্রম সবকিছু ওই একটি রেখার মধ্যেই থাকে। যা বিজিত ও পরাজিতের মধ্যে পার্থক্য তৈরি করে দেয়। ভাগ্য এক বা দুইবার প্রভাব ফেলে। বাকিটা সময় কেবলই সামর্থ্য পার্থক্য করে দেয়।
আরো পড়ুন:
বিপিএলে দল কেনা যাবে নোয়াখালী-ময়মনসিংহ নামে
যাচ্ছেতাই ব্যাটিংয়ে করুণ পরাজয়
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল বর্তমান সময়ে যে সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, যে মানের ক্রিকেট খেলছে তাতে একটি বিষয়ে স্পষ্ট, দলটি নিবেদনে প্রবল ঘাটতি, লড়াইয়ের ন্যূনতম চেষ্টাও নেই, নেই প্রতিশ্রুতি রাখার অঙ্গীকার, প্রত্যাশা সূচক নিম্নমুখী আর পরিশ্রম সবটাই যাচ্ছে বৃথা! উপভোগের মন্ত্রে যেখানে এগিয়ে যাওয়ার কথা সেখানে হারার আগেই হার বরণ করে নিজেদের সর্বনাশ নিজেরাই ডেকে আনছেন ক্রিকেটাররা।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে টানা তিন ওয়ানডে সিরিজ হার। এ যেন কল্পনাকেও হার মানিয়ে দিচ্ছে। রূপকথার আশ্চর্য প্রদীপ জয়ের শিখা জ্বালিয়ে বাংলাদেশকে দেদীপ্যমান করে তুলেছিল, হাতবদলে সেই প্রদীপ এখন আফগানিস্তানের ড্রেসিংরুমে। বলতে দ্বিধা নেই আফগানিস্তান বলে কয়ে হারাতে পারছে বাংলাদেশকে৷ যা রীতিমতো বাংলাদেশের জন্য সর্বনাশ। আর এই সর্বনাশটা বাংলাদেশ নিজেরাই নিজে ডেকে এনেছে।
পরাজয়েরও ধরন থাকে। হারের থেকে নির্দিষ্ট কারণ৷ বাংলাদেশ গতকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে যেভাবে হেরেছে তার কোন ব্যাখ্যা থাকতে পারে না। এক প্রকার নিজেরাই পরাজয়কে নিমন্ত্রণ করে এনে ভরপেট খেয়ে চুপচাপ সয়ে নিয়েছে। অথচ এই বিষ বয়ে বেড়াচ্ছেন সমর্থকরা।
সিরিজ বাঁচানোর মিশনে ছিল বাংলাদেশ। জয়ের তীব্র নেশা, জেদ, দলবদ্ধ প্রতিজ্ঞা থাকার কথা ছিল। কিন্তু লাল সবুজের ড্রেসিংরুমে কেবলই হাহাকার আর হাহাকার। ১৯০ রানে আফগানিস্তানকে আটকে রাখার পর ১০৯ রানে অলআউট বাংলাদেশ!
ব্যাটিং-এ সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ খারাপ অবস্থায় যাচ্ছে। তাই বলে আফগানিস্তানের কাছে ১০৯ রানে অলআউট হতে হবে। ব্যাখ্যাতিত ব্যাটিং, ম্যাচ পড়তে না পারার ভুল, পরিস্থিতি বুঝতে না পারার অক্ষমতা, শট নির্বাচনে খামখেয়ালিপনা সবকিছু ঘুরেফিরে দলের প্রত্যেক ব্যাটসম্যানের ব্যাটিংয়ে ফুটে উঠেছে। নিজেদের উইকেট গুলো স্রেফ উপহার দিয়ে এসেছেন আজমতউল্লাহ ও রশিদ খানকে।
সবশেষ ১১ ওয়ানডের ১০টি হার। টানা চারটি সিরিজ হার। আফগানদের কাছে হ্যাটট্রিক ওয়ানডে সিরিজ হার। ব্যর্থতার ঝুলি ভারি হচ্ছে। যেই ওয়ানডে ক্রিকেট ছিল গৌরবের, তা-ই এখন মাথা ব্যথার কারণ। প্রশ্ন একটাই, বেকায়দায় থাকা দল কি আর সুদিন ফিরে পাবে?
আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ হারের কারণে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ নাও পেতে পারে দল। সামনের পথটা মিরাজদের জন্যে তাই কাঁটা বিছানো। এই পথ পেরিয়ে যাওয়ার জন্য নিজেদের খোলনলচে বদলাতে হবে। নয়তো.
ঢাকা/ইয়াসিন
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আফগ ন স ত ন র
এছাড়াও পড়ুন:
শেষ কবে টেস্ট ক্রিকেটে ফলো-অন করেছিল ভারত?
গোয়াহাটিতে দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনে ভারতের ব্যাটিং ধসে পড়ে মাঝপথেই। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসের ৪৮৯ রানের জবাবে মাত্র ২০১ রানে অলআউট হয়ে যায় ঋষভ পন্তের দল। ২৮৮ রানের বিশাল লিড নিয়ে ফলো-অন করানোর সুযোগ ছিল টেম্বা বাভুমার সামনে। কিন্তু প্রোটিয়া অধিনায়ক তার দলকেই আবার ব্যাটিংয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন।
ম্যাচে তখনো বাকি দু’দিনের বেশি। তাই ভারতের সামনে এখন দু’টি চ্যালেঞ্জ। প্রথমে দক্ষিণ আফ্রিকাকে যত দ্রুত সম্ভব অলআউট করা, এরপর তারা যা লক্ষ্য দেবে, সেটি তাড়া করতে নামা। আগের দিনের ব্যাটিং বিপর্যয় দেখে লক্ষ্য তাড়ার লড়াই যে কঠিন হতে যাচ্ছে, তা পরিষ্কার।
আরো পড়ুন:
১৫ বছর পর ঘরের মাঠে ফলোঅনে ভারত
থমকে গেছে ক্রিকেটার-গায়কের বিয়ে: বাবার পর স্মৃতির হবু বর হাসপাতালে
যদি ভারতকে ফলো-অনে পাঠানো হতো, তবে সেটা হতো ১৪ বছরের মধ্যে ভারতের প্রথম ফলো-অন, আর ঘরের মাঠে ১৫ বছরের মধ্যে প্রথম। শেষবার ভারত টেস্ট ক্রিকেটে ফলো-অন খেলেছিল ২০১১ সালে, ইংল্যান্ড সফরে দ্য ওভালে। সেই ম্যাচে তারা হেরেছিল ইনিংস ও ৮ রানে।
তারপর থেকে ভারত ১০০টিরও বেশি টেস্ট খেলেছে। কিন্তু আর কখনো ফলো-অন খেলতে হয়নি। ঘরের মাঠে ভারতের শেষ ফলো-অন ছিল ২০১০ সালে, নাগপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। সেই ম্যাচেও পরিণতি একই- ইনিংস ও ৬ রানের হার।
ভারতে মোট তিনবার ফলো-অন খেলেছে ভারতীয় দল-
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে (২০০১),
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে (২০০৩),
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে (২০১০)।
এ পর্যন্ত ভারত মোট ৩৩টি ম্যাচে ফলো-অন করেছে। এর মধ্যে ভারতের জয় এসেছে মাত্র একবার। ২০০১ সালের সেই ঐতিহাসিক ইডেন টেস্টে, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে।
টেস্ট ক্রিকেটে ফলো-অন কী?
টেস্ট ম্যাচে প্রথম ইনিংসে কমপক্ষে ২০০ রানের লিড নেওয়ার পর কোনো দলের অধিনায়ক চাইলে প্রতিপক্ষকে আবারও ব্যাট করতে পাঠাতে পারেন। এটাই ফলো-অন। এতে পিছিয়ে থাকা দলকে পরপর দুই ইনিংস ব্যাট করতে হয়। এটা মূলত নেতৃত্বে থাকা দলের কৌশলগত সিদ্ধান্ত। সময় বাঁচিয়ে ম্যাচে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার লক্ষ্যেই ফলো-অন করানো হয়।
ঢাকা/আমিনুল