পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা ও অজুর ফজিলত
Published: 17th, October 2025 GMT
আল্লাহ তাআলা পবিত্র। তিনি পবিত্র ব্যক্তিদের ভালোবাসেন। কোরআন মাজিদে বলা হয়েছে, ‘তাদের মধ্যে এমন কিছু মানুষ রয়েছে, যারা পবিত্রতাকে ভালোবাসে, আর আল্লাহ তাআলা পবিত্রদের ভালোবাসেন।’ (সুরা-৯ তাওবাহ, আয়াত: ১০৮) ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা-২ আল-বাকারা, আয়াত: ২২২)
প্রিয় নবীজি (সা.
পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের জন্য অজু করা সুন্নত। পাঁচ ওয়াক্ত নফল নামাজ, যেমন তাহাজ্জুদ, ইশরাক, চাশত (বা দোহা), জাওয়াল ও আউয়াবিনের জন্যও অজু করা সুন্নত। খাবার খাওয়ার আগে অজু করা সুন্নত। অজুর সঙ্গে ঘুমানোও একটি সুন্নত আমল। এতে ঘুমের মধ্যে শয়তান প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। ঘুম থেকে উঠে অজু করাও একটি সুন্নত কাজ। ফলে ঘুমে যদি কোনো শয়তানি প্রভাব এসে থাকে, তা দূর হয়ে যায়। প্রাকৃতিক কর্ম, অর্থাৎ মলমূত্র ত্যাগের পরও অজু করা সুন্নত। অজু করার পর যদি নামাজের নিষিদ্ধ বা মাকরুহ সময় না থাকে, তবে দুই রাকাত নামাজ পড়া সুন্নত। এ নামাজকে বলা হয় ‘তাহিয়্যাতুল অজু’ নামাজ।
সর্বোপরি সর্বদা অজুর সঙ্গে থাকা একটি বিশেষ সুন্নত আমল। যে ব্যক্তি সব সময় অজুর সঙ্গে থাকবেন, তিনি শয়তানের প্রতারণা থেকে নিরাপদ থাকবেন এবং ইমানের সঙ্গে মৃত্যুবরণ করবেন, ইনশা আল্লাহ।সর্বোপরি সর্বদা অজুর সঙ্গে থাকা একটি বিশেষ সুন্নত আমল। যে ব্যক্তি সব সময় অজুর সঙ্গে থাকবেন, তিনি শয়তানের প্রতারণা থেকে নিরাপদ থাকবেন এবং ইমানের সঙ্গে মৃত্যুবরণ করবেন, ইনশা আল্লাহ।
নবী করিম (সা.) সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করতেন। তিনি বিশেষ বস্ত্রকে বিশেষ পদ্ধতিতে পরিষ্কার করতেন। নবীজি (সা.)-এর একটি চাদর ও দস্তরখান ছিল, যা তিনি মাঝেমধ্যে আগুনে সেঁকে পরিষ্কার করতেন। (তিরমিজি ও মুসলিম) তিনি জুতা ও মোজা পরার আগে এবং খোলার পর ঝেড়েমুছে পরিষ্কার রাখতেন। (বায়হাকি)
আল্লাহ তাআলা মসজিদ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়ে বলেছেন, ‘আর আমি ইব্রাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.)-এর কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলাম যে তারা যেন আমার গৃহকে পবিত্র রাখে—তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী, রুকুকারী ও সিজদাকারীদের জন্য।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১২৫)
অজুর ফরজ চারটি—মুখ ধোয়া, হাত ধোয়া, মাথা মোছা ও পা ধোয়া। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! যখন তোমরা সালাতের জন্য প্রস্তুত হবে, তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও কনুই পর্যন্ত হাত ধুবে, মাথা মুছবে এবং পা গোড়ালি পর্যন্ত ধোবে।’ (সুরা-৫ মায়িদাহ, আয়াত: ৬)
অজুর সুন্নত ১২টি—নিয়ত করা, শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ পড়া, উভয় হাত কবজিসহ তিনবার ধোয়া, মিসওয়াক করা, তিনবার কুলি করা, তিনবার নাকে পানি দেওয়া, পুরো মুখ তিনবার ধোয়া, ঘন দাড়ি খিলাল করা, উভয় হাত কনুইসহ তিনবার ধোয়া, আঙুলের খিলাল করা, পুরো মাথা একবার মোছা, উভয় কান মোছা, গর্দান মোছা, দুই পা টাকনুসহ তিনবার ধোয়া, পায়ের আঙুল খিলাল করা এবং অজুর শেষে কালিমা শাহাদাত পাঠ করা।
অজু ভঙ্গ হওয়ার সাতটি কারণ—পায়ুপথ বা মূত্রনালি দিয়ে কোনো কিছু নির্গত হওয়া; মুখভরে বমি হওয়া; শরীরের যেকোনো স্থান থেকে রক্ত, পুঁজ বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া; থুতুর সঙ্গে সমপরিমাণ বা বেশি পরিমাণ রক্ত বের হওয়া; চিত হয়ে, কাত হয়ে বা হেলান দিয়ে ঘুমানো; পাগল, মাতাল বা অচেতন হওয়া ও নামাজে উচ্চ স্বরে হাসা।
একবার অজু করার পর উপরিউক্ত কোনো কারণ ঘটলে আবার অজু করতে হবে। একবার অজু করে নামাজ, তাওয়াফ বা কোরআন তিলাওয়াতের পর ইচ্ছা করলে আবার অজু করা যেতে পারে। এক অজুতে যত ইবাদত সম্ভব করা যায়, তবে নতুন ইবাদতের আগে নতুন অজু করা উত্তম। হাশরের দিনে মুমিনের অজুর অঙ্গগুলো নূরে উদ্ভাসিত থাকবে। সেই আলো দেখেই প্রিয় নবী (সা.) তাঁর উম্মতকে চিনতে পারবেন।
মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী
যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
[email protected]
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আল ল হ ত আল ত নব র ধ য় পর ষ ক র র জন য স ন নত শয়ত ন ক রআন
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শুরু
জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান মঞ্চে এসেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
উপস্থিত হয়েছেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা। যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা।
বিস্তারিত আসছে..
ঢাকা/আসাদ/নঈমুদ্দীন/সাইফ