অটোরিকশার জন্য বন্ধুকে হত্যা করে নিজেই হাসপাতালে নিয়ে যান এক তরুণ। এ ঘটনায় ওই তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ইয়াছিন (২২) নামের একজন হত্যার শিকার হয়েছেন। আর গ্রেপ্তার হয়েছেন সোহাগ (২২)।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে নিকড়া বিল এলাকার রাস্তার পাশ থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের একজনের লাশ উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি করে হাসপাতালে আনেন সোহাগ। তবে তাঁর কথায় অসংগতি পাওয়ায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সোহাগ ও ইয়াছিন রাজধানীর জুরাইনে একসঙ্গে থাকতেন। ইয়াছিনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে। জুরাইনে থাকার সময় তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। কিছুদিন আগে সোহাগ দোহার উপজেলার খাড়াকান্দা এলাকার একটি গ্যারেজে কাজ নেন।

গত রোববার সোহাগ জুরাইনে ইয়াছিনের বাসায় বেড়াতে গিয়ে রাত কাটান। পরে গতকাল দুপুরে ইয়াছিনের নতুন অটোরিকশা নিয়ে দুজন দোহারের উদ্দেশে রওনা হন। সন্ধ্যার দিকে নিকড়া এলাকার বিলে পৌঁছে রাস্তার পাশে রিকশা রেখে সোহাগ ইয়াছিনকে নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করান। এরপর গলা ও মুখে ছুরিকাঘাত করে তাঁকে হত্যা করেন। পরে নিহত বন্ধুকে অটোরিকশায় দোহার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইয়াছিনকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরে খবর পেয়ে দোহার থানা–পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে সোহাগের কাছে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, জয়পাড়া যাওয়ার পথে রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তবে তাঁর কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে হলে পুলিশ তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

দোহার থানা–পুলিশ জানায়, লাশের সুরতহাল শেষে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেন সোহাগ। বেলা দেড়টার দিকে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়। নিহত ইয়াছিনের বাবা বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে দোহার থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।

দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আলী বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া আসামি প্রাথমিক স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। জবানবন্দি নেওয়ার জন্য আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিলেন উপদেষ্টার এপিএস

সরকারি গাড়িতে এসে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) প্রভাষক পদের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন অন্তবর্তী সরকারের এক উপদেষ্টার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস)। তাঁর নাম আশিকুর রহমান। তিনি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার এপিএস হিসেবে কর্মরত আছেন।

নোবিপ্রবির সংস্থাপন শাখা সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। ওই বিজ্ঞপ্তির আলোকে পরীক্ষায় অংশ নিতে গতকাল শনিবার নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসে আসেন আশিকুর রহমান। পরীক্ষায় দুটি প্রভাষক পদের বিপরীতে আশিকুর রহমানসহ ২৭ জন পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। লিখিত পরীক্ষা শেষে একই দিন ১৪ জনকে মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আশিকুর রহমান সরকারি লোগো ও ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ডযুক্ত গাড়িতে করে ক্যাম্পাসে আসেন। পরীক্ষা শেষে একই গাড়িতে তিনি ঢাকায় ফিরে যান। ওই গাড়ির ছবি তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন। বিষয়টি নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনুসন্ধান করে জানা যায়, উপদেষ্টার এপিএস আশিকুর রহমানের ব্যবহৃত গাড়িটি বন অধিদপ্তরের সহকারী প্রধান বন সংরক্ষক, আগারগাঁও, ঢাকার ঠিকানায় নিবন্ধিত।

সরকারি গাড়ি নিয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে আসার বিষয়ে জানতে চাইলে আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ ছিলাম। আগের দিন রাত দুইটার সময় জানতে পেরেছি যে পরদিন পরীক্ষা। আমি নোয়াখালীতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে সকাল ১০টা বেজে যায়। আমাকে কেউ যদি সাহায্য করে, আপনি কীভাবে দেখবেন? আমি পদে এসে কোনো ধরনের নিয়োগ-বাণিজ্য, বদলির তদবির করিনি। আমি যতটুকু জানি, ওখানে একজন শিক্ষকের একজন চাকরিপ্রার্থী ছিলেন। তিনি আমার প্রোফাইল দেখে ভয় পেয়েছেন। তাই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। আমি দেশ-বিদেশে একজন বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিত।’

সরকারি গাড়ি ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে বন অধিদপ্তরের সহকারী প্রধান বন সংরক্ষক (অর্থ, বাজেট ও সাধারণ নির্দেশনা ইউনিট) হক মাহবুব মোরশেদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, অধিদপ্তরের গাড়িগুলো একজন রেঞ্জ কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে থাকে। তাঁকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে তাঁকে জানাতে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ তামজিদ হোছাইন প্রথম আলোকে বলেন, উপদেষ্টার এপিএসের সরকারি গাড়ি নিয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে আসার বিষয়টি সম্পর্কে তিনি জানেন না। তা ছাড়া তিনি শনিবার ছুটিতে ছিলেন। শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার বোর্ডে উপাচার্য, বিভাগের চেয়ারম্যানসহ অন্য সদস্যরা থাকেন। নিয়োগ পরীক্ষায় কে কীভাবে এলেন, সেটি দেখা নিয়োগ বোর্ডের কাজ নয়। বোর্ডের সামনে একজন করে প্রার্থী উপস্থিত হন।

সরকারি গাড়ি ব্যবহারের নীতিমালা সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ কে এম আবদুল আওয়াল মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, লিখিতভাবে এমন কোনো বিধির কথা তিনি জানেন না। তবে মন্ত্রী বা পিএসের জন্য সরকারি গাড়ি থাকে। ঢাকা থেকে সরকারি গাড়িতে নোয়াখালীতে এসে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া উপদেষ্টার এপিএসের ‘বাড়াবাড়ি’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সৌদি আরবে দুর্ঘটনার কবলে বাস: বেঁচে আছেন ভারতীয় ওমরাহযাত্রীদের একজন
  • টাইব্রেকারের ‘কালো জাদু’র অভিযোগ নাইজেরিয়ার, বিশ্বকাপ–স্বপ্ন ভেঙে চুরমার
  • ‘১৫ হাজার সেফটিপিন শাড়িতে লাগালেও, তারা খুঁত বের করবে’
  • এপস্টেইনের নথি প্রকাশের পক্ষে হঠাৎ কেন অবস্থান নিলেন ট্রাম্প
  • এশিয়ার প্রভাবশালী নারী ব্যবসায়ী কারা, কীসের ব্যবসা তাঁদের
  • করদাতা মারা গেলেও যে কারণে কর দিতে হয়, কীভাবে দেওয়া হয়
  • ৩ কোটি টাকা, ব্যক্তিগত উড়োজাহাজসহ আরও যা যা পান একজন মিস ইউনিভার্স
  • গায়িকা থেকে বিধায়ক, মৈথিলীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসারী চমকে ওঠার মতো
  • সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিলেন উপদেষ্টার এপিএস