যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে আট দিনে ইসরায়েল ৪৭ বার হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। ইসরায়েলের হামলায় গত আট দিনে ৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১৪৩ জন আহত হয়েছে।

গাজার মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, “এই লঙ্ঘনের মধ্যে রয়েছে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সরাসরি গুলি চালানো, ইচ্ছাকৃতভাবে গোলাবর্ষণ ও লক্ষ্যবস্তুতে হামলা এবং বেশ কয়েকজন বেসামরিক নাগরিককে গ্রেপ্তার করা, যা যুদ্ধের ঘোষণার সমাপ্তি ঘোষণা করা সত্ত্বেও দখলদারদের অব্যাহত আগ্রাসন নীতির প্রতিফলন।”

বিবৃতিতে গাজার কর্তৃপক্ষ “দখলদারদের তাদের চলমান আগ্রাসন বন্ধ করতে এবং নিরস্ত্র বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে রক্ষায় জাতিসংঘ এবং চুক্তির জামিনদার পক্ষগুলোকে জরুরিভাবে হস্তক্ষেপ করার জন্য” আহ্বান জানিয়েছে।

শুক্রবার গাজায় একটি বাসে হামলা চালিয়ে ইসরায়েলি সেনারা একই পরিবারের ১১ সদস্যকে হত্যা করেছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সাত শিশু ও তিনজন নারী ছিলেন। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরে এটি ছিল ফিলিস্তিনিদের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা। নিহত ব্যক্তিরা আবু শাবান গোত্রের সদস্য। জেইতুন এলাকায় নিজেদের বাড়ি দেখার চেষ্টা করার সময় তাঁদের হত্যা করা হয়।

এদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, গাজায় আটক থাকা সব নিহত জিম্মির মৃতদেহ হস্তান্তর করার পরেই আন্তর্জাতিক ত্রাণ প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ রুট রাফাহ ক্রসিং পুনরায় খোলা হবে।

শনিবার তার কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু নির্দেশ দিয়েছেন যে রাফাহ ক্রসিং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। হামাস জিম্মি ও নিহতদের মৃতদেহ ফেরত দেওয়ার এবং সম্মত শর্তাবলী বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তাদের বাধ্যবাধকতা কীভাবে পূরণ করে তার উপর ভিত্তি করে এর পুনরায় খোলার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।”

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে দুটি প্রস্তাব পাস

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ গোলান মালভূমি, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলি দখলদারিত্বকে অবৈধ ঘোষণা ও এসব অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে দুটি প্রস্তাব পাস করেছে।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। 

আরো পড়ুন:

সিরিয়ায় ‘হস্তক্ষেপ’ না করতে ইসরায়েলকে সতর্ক করলেন ট্রাম্প

আইএসবিরোধী মার্কিন নেতৃত্বধীন জোটে যোগ দিচ্ছে সিরিয়া

প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম থেকে ইসরায়েলকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে উত্থাপিত প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়েছে ১৫১টি দেশ, বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ১১টি দেশ এবং ১১টি দেশের ভোটদানে বিরত থেকে পাস হয়। ফিলিস্তিন, জর্ডান, জিবুতি, সেনেগাল, কাতার ও মৌরিতানিয়া প্রস্তাবটি জমা দেয়। 

একই দিনে সাধারণ পরিষদ গোলার মালভূমিতে ইসরায়েলি দখলদায়িত্বে বিরুদ্ধে মিশরের জমা দেওয়া প্রস্তাবটিও গ্রহণ করেছে। এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে ১২৩টি দেশ, বিপক্ষে ভোট দিয়েছে সাতটি দেশ এবং ভোটদানে অংশ নেয়নি ৪১টি দেশ।

উভয় ক্ষেত্রেই, ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে।

টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, গোলান মালভূমি সংক্রান্ত প্রস্তাবটি এমন এক সময়ে এলো, যখন ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যে একটি নিরাপত্তা চুক্তির দিকে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন প্রস্তাবটির সমালোচনা করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে ড্যানন বলেন,  “জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ আবারো প্রমাণ করে যে তারা বাস্তবতা থেকে কতটা বিচ্ছিন্ন। ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো অপরাধ এবং সিরিয়ায় মিলিশিয়াদের বিপজ্জনক কার্যকলাপের বিষয়ে আলোচনা করার পরিবর্তে, তারা ইসরায়েলকে গোলান মালভূমি থেকে সরে যাওয়ার দাবি করেছে- যা আমাদের নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা লাইন।”

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের গৃহীত এই প্রস্তাবগুলো আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক নয়। ইসরায়েল ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধের পর সিরিয়ার কাছ থেকে গোলান মালভূমি দখল করে এবং ১৯৮১ সালে এটিকে নিজের অংশ বলে ঘোষণা করে, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়নি।

গোলান মালভূমিতে ৩০টিরও বেশি অবৈধ বসতি স্থাপন করে যেখানে ২৫ হাজারেরও বেশি ইহুদি ইসরায়েলি বসবাস করছে। গত বছর ইসরায়েল সিরিয়ার অভ্যন্তরে তাদের সেনা উপস্থিতি আরো বাড়িয়েছে এবং অধিকৃত অঞ্চল ও সিরিয়ার বাকি অংশের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত জাতিসংঘের বাফার জোন দখল করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে দুটি প্রস্তাব পাস