বান্দরবানের রুমা উপজেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কেওক্রাডং পাহাড়ে যাওয়ার পথে চাঁদের গাড়ি উল্টে ১১ জন পর্যটক আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কেওক্রাডং সড়কের পেঁপে বাগান নামক এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- সিদ্দিকুর রহমান (৫৫), হাশমত (৪৫), রাশেদুল (৪৪), আফিকুল ইসলাম (৪৪), মো.

সোহেল রানা (৪৫), মো. ফারুক আহমেদ (৪২), আকরাম আলী (৩৭), জুমা (২৬), রুমি আক্তার (২৮) এবং বেলায়েত (৩৩)। তারা সবাই কুষ্টিয়া জেলার বাসিন্দা। তাদের সঙ্গে থাকা গাইড স্বপন বড়ুয়া (৩৪) রুমা সদর ইউনিয়নের বড়ুয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভোরে বগালেক থেকে চাঁদের গাড়িতে করে ১৩ জনের একটি দল কেওক্রাডংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সড়কের পেঁপে বাগান এলাকায় পৌঁছে চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে গাড়িটি উল্টে যায়। এতে ১১ জন পর্যটক গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় দ্রুত তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বগালেক থেকে কেওক্রাডং যাওয়ার পথে যাত্রীবাহী চাঁদের গাড়িটি হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। এতে গাড়িতে থাকা ১১ পর্যটক গুরুতর আহত হন। স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করে রুমা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। তবে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী বলেন, “দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আহত সবাইকে চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।”

ঢাকা/চাইমং/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর যটক

এছাড়াও পড়ুন:

হাজী দানেশ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন ঘিরে ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ

‘দোস্ত, আমি হবিগঞ্জ থেকে আসতে পারলাম, দুই দিন আগে। তুমি নীলফামারী থেকেও এখনো ক্যাম্পাসে পৌঁছালে না।’ গতকাল বুধবার বিকেলে বন্ধুর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলছিলেন সোয়াদুজ্জামান। আলাপচারিতায় তিনি জানালেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকৌশল বিভাগের ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত বছর কর্মজীবন শুরু করেছেন হবিগঞ্জে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। সমাবর্তন উপলক্ষে দুদিন আগেই দিনাজপুরে এসেছেন; উঠেছেন শহরে সুইহারিতে এক আত্মীয়ের বাসায়।

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তন আগামী শনিবার অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ ও প্রকাশনা শাখা সূত্র জানায়, এবার সমাবর্তনে অংশ নিতে ফরম পূরণ করেছেন আট হাজার ৩৩ জন শিক্ষার্থী। ২০১০ সালের পর থেকে অর্থাৎ সপ্তম ব্যাচ থেকে ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই আয়োজন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার।

২০১০ সালের ৯ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর কেটে গেছে দেড় দশক। দীর্ঘ বিরতির পর সমাবর্তন আয়োজন ঘিরে ক্যাম্পাসে চলছে ব্যাপক সাজসজ্জার কাজ। কয়েকজন শিক্ষক বলেন, দীর্ঘ সময় পরে সমাবর্তনের আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশকে আরও গতিশীল করবে। গবেষণা, উদ্ভাবন ও সমসাময়িক জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

গতকাল ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থানে আগাছা পরিষ্কারসহ বিশ্ববিদ্যালয় অভ্যন্তরীণ সড়ক পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় বিজয়-২৪ হলের মাঠে করা হচ্ছে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চ। কেন্দ্রীয় মাঠ-১ এ থাকছে শিক্ষার্থী বন্ধুদের খাবারের আয়োজন। প্রশাসনিক ভবন, একাডেমিক ভবন, আবাসিক হলসহ বিভিন্ন ভবনে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। তোরণ নির্মাণ, ব্যানার-ফেস্টুনসহ সৌন্দর্যবর্ধনকারী পতাকায় পুরো ক্যাম্পাসে চলছে উৎসবের আমেজ।

এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের অনেকেই এসে উপস্থিত হয়েছেন দিনাজপুরে। ক্যাম্পাস ঘুরে রেখে যাওয়া স্মৃতি হাতড়াচ্ছেন। যাঁদের কেউ সরকারি-বেসরকারি অফিসে কর্মরত আছেন, কেউ–বা গবেষণাকাজে যুক্ত, কেউ হয়তো কোন পথে যাবেন, এখন ঠিক করতে পারেননি। কয়েকজন সাবেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয়। সবার মুখে প্রিয় শিক্ষাঙ্গনে ফের একসঙ্গে হওয়া, স্মৃতি ছুঁয়ে যাওয়ার গল্প।

বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক এম এনামুল্লাহ বলেন, ‘বেশ লম্বা সময় পরে আমরা সমাবর্তন অনুষ্ঠান আয়োজন করতে যাচ্ছি। এরই মধ্যে আয়োজনের প্রায় চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এটি কেবল ডিগ্রি প্রদান অনুষ্ঠান নয়, বরং উচ্চশিক্ষাব্যবস্থায় সমাবর্তন একটি কাঠামোবদ্ধ প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক অর্জন রাষ্ট্রীয়ভাবে ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়। এ ধরনের আয়োজন করতে পারা প্রশাসনিক সক্ষমতা, একাডেমিক স্থিতিশীলতা ও সাংগঠনিক প্রস্তুতির সূচকও বটে।’

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মানতে হবে যেসব নির্দেশনা

সমাবর্তনের পূর্ব প্রস্তুতি ও আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার সুষ্ঠু বিধান সম্পন্ন করতে বেশ কিছু নিয়ম বেঁধে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ১৭ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবু হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয় এসব তথ্য।

নির্দেশনার মধ্যে আছে, কনভোকেশন কার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে এবং এটি হস্তান্তরযোগ্য নয়। কনভোকেশন কার্ড এবং সাময়িক সনদ/মূল সনদ/ক্লিয়ারেন্স প্রদর্শন করে বিভাগ/অনুষদ/নির্বাচিত কেন্দ্র থেকে গাউন, ক্যাপ, হুড ও গিফট বক্স সংগ্রহ করতে হবে। গাউন, ক্যাপ, হুড ছাড়া সমাবর্তনের মূল প্যান্ডেলে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।

যেসব গ্র্যাজুয়েট ইতিমধ্যে সাময়িক সনদ/মূল সনদ উত্তোলন করেছেন তাঁদের অবশ্যই এর মূল কপি একটি খামে করে (খামের ওপর নাম, আইডি, বিভাগ/কলেজের নাম লিখতে হবে) নিয়ে আসতে হবে। গাউন, ক্যাপ, হুড নেওয়ার সময় তা অবশ্যই জমা দিতে হবে। জমা দেওয়া ছাড়া গাউন সংগ্রহ করা যাবে না।

অংশগ্রহণকারী গ্র্যাজুয়েটগণ ২১ নভেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এবং ২২ নভেম্বর সকাল ৭টা হতে সকাল ১০টা পর্যন্ত গাউন, ক্যাপ, হুড ও গিফট বক্স সংগ্রহ করতে পারবেন। ২২ নভেম্বর বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সমাবর্তনের মধ্যাহ্নভোজের খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হবে। সমাবর্তন কার্ড প্রদর্শন করে নির্ধারিত বিভাগ/অনুষদ/কেন্দ্র হতে খাবারের প্যাকেট সংগ্রহ করতে হবে।

এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নির্ধারিত স্থান থেকে মূল সনদ গ্রহণের জন্য অংশগ্রহণকারীদের গাউন ও হুডসহ কনভোকেশন কার্ড নিয়ে উপস্থিত থাকতে হবে। অনুষ্ঠান শেষে বিকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে রাত সাড় আটটা পর্যন্ত সব বিভাগ/অনুষদ/নির্ধারিত বুথে গাউন ফেরত দিয়ে কনভোকেশন কার্ড প্রদর্শন কর মূল সনদ গ্রহণ করতে হবে। গাউন ফেরত না দিলে ৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। অংশগ্রহণকারীদের জন্য পরিবহনব্যবস্থা ২১ নভেম্বর সকাল ৮টা হতে ২২ নভেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত চলমান থাকবে।

২২ নভেম্বর মূল সমাবর্তন স্থল বেলা ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে শুধু অনুমোদিত সনদধারী/অতিথিদের জন্য সীমাবদ্ধ থাকবে। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ব্যাগ, ছাতা, ক্যামেরা ও কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস আনা যাবে না। শুধু মুঠোফোন সঙ্গে রাখা যাবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ