অনলাইন সনদ জটিলতায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মাছ রপ্তানি বন্ধ
Published: 20th, November 2025 GMT
মৎস্য বিভাগের সনদ জটিলতার কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মাছ রপ্তানি বন্ধ আছে। সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে অনলাইনে সনদ নিতে না পারায় আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে স্থলবন্দরটিতে মাছ রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ।
বিষয়টির সমাধান না হলে প্রতিদিন অন্তত দেড় কোটি টাকার রপ্তানি আয় কমার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। কবে মাছ রপ্তানি চালু হবে, সে বিষয়েও নিশ্চিত নন তাঁরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ৫০ থেকে ৭০ টন হিমায়িত মাছ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় রপ্তানি হয়। প্রতি কেজি ২ দশমিক ৫ মার্কিন ডলারের রুই, কাতল, পাঙাশ, তেলাপিয়া ও পাবদাসহ দেশীয় নানা প্রজাতির মাছ রপ্তানি হয়। এসব মাছ ও শুঁটকি রপ্তানির সনদ দেয় মৎস্য বিভাগ। এত দিন ধরে মৎস্য কার্যালয় সেই সনদ ম্যানুয়ালভাবে (সনাতন পদ্ধতি) দিয়ে আসছিল। ১৩ নভেম্বর এ সনদ অনলাইন করার নির্দেশনা দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে মৎস্য অধিদপ্তর এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করায় আজ থেকে বিল অব এন্ট্রি করতে পারছেন না রপ্তানিকারকেরা। এতে বন্ধ আছে মাছ রপ্তানি কার্যক্রম।
আখাউড়া স্থলবন্দর মৎস্য রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ বলেন, মাছ পাঠানোর জন্য একটি বিশেষ সার্টিফিকেট উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে নিতে বলা হয়। কিন্তু অনলাইনে সনদটি করার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এনবিআর এ চিঠি কাস্টমস ও মৎস্য মন্ত্রণালয়কে দেয়নি।
ফারুক আহমেদ আরও বলেন, গতকাল বুধবার প্রায় দুই কোটি টাকার মাছ রপ্তানির প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। তখন মৎস্য কার্যালয়ের মাধ্যমে সার্টিফিকেট আনতে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এক কর্মকর্তার বিশেষ অনুমতি নিয়ে নানান প্রক্রিয়া শেষে ভারতে মাছ পাঠানো হয়। তবে আজ সকাল থেকে অনলাইন সার্টিফিকেট ছাড়া মাছ পাঠানো যাবে না বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
আখাউড়া উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ‘বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো (বিএসডব্লিউ) থেকে আমরা অনলাইন রেজিস্ট্রেশন পেয়েছি। এখন মাছ পাঠানোর বিষয়ে ব্যবসায়ীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে। এতে মাছ রপ্তানি বন্ধ থাকবে না, শুধু কাজটি অনলাইনের মাধ্যমে করতে হবে। ব্যবসায়ীরাসহ আমরা রপ্তানি সচলের চেষ্টা করছি।’
বিষয়টি নিয়ে কোয়ালিটি কন্ট্রোলের সঙ্গে সম্পর্কিত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘এনবিআর ১৯ নভেম্বর থেকে অনলাইন সার্টিফিকেটের মাধ্যমে মাছ রপ্তানির বিষয়ে চিঠি দিয়েছে। বিষয়টি আগে আমাদের জানায়নি এবং চিঠিও দেয়নি।’
এ বিষয়ে বর্তমানে করণীয় সম্পর্কে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের একটি আইডি খুলতে হবে। এ বিষয়ে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বর্তমানে সব প্রক্রিয়া চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত মৎস য ক ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, ট্রাকচালকসহ ৪ জন কারাগারে
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর এলাকায় ২৮ বছর বয়সী (আনুমানিক) এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার সকালে এক ট্রাকচালকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রাতে তাঁদের আদালতে নেওয়া হয় এবং বিচারক তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
প্রায় ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ওই নারী বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ঘোরাফেরা করতেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তিনি কথা বলতে পারলেও নাম-পরিচয়ের বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে গতকাল ভোরে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের প্রধান ফটকের বিপরীত দিকের একটি দোকানঘরের পেছনে ওই নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ সময় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীসহ স্থানীয় লোকজন চারজনকে আটক করে প্রথমে গ্রাম পুলিশ ও পরে তেঁতুলিয়া মডেল থানা-পুলিশের হাতে তুলে দেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার চাদিনা-শিবগঞ্জ দক্ষিণ পাড়া এলাকার ট্রাকচালক সোহেল শেখ (৩২) ও ভাগদহ এলাকার বাসিন্দা ও চালকের সহকারী মোস্তফা হানিফ (২১); বগুড়া সদর উপজেলার মানিকচক-উত্তরপাড়া এলাকার মো. হাসান (২০) ও একই উপজেলার নামুজা-ভান্ডারিপাড়া এলাকার রাজিবুল ইসলাম (১৯)।
এ ঘটনার পর গতকাল বিকেলে বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) গ্রাম পুলিশ মো. হাবিবুল্লা বাদী হয়ে ওই চারজনের বিরুদ্ধে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় একটি ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। পরে সন্ধ্যায় তাঁদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় ওই নারীকেও আদালতে নেওয়া হয়।
বাংলাবান্ধা ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. বুলবুল বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী কথা বলতে পারলেও নিজের নাম-পরিচয় বলতে পারেন না। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে এলাকাটির পথঘাটে বসবাস করতেন। গতকাল রাতে বন্দরে ট্রাক নিয়ে আসা চালক ও তাঁর সহযোগীরা ওই নারীকে ধর্ষণ করছিলেন বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
ওই নারীর পরিচয় শনাক্তে সিআইডি ও পিবিআইয়ের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তেঁতুলিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান। তিনি আজ বৃহস্পতিবার সকালে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার চার ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে ধর্ষণের শিকার ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে।