পাবনার ৫টি আসন: বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে হবে ভোটযুদ্ধ
Published: 20th, November 2025 GMT
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বেশ সরব পাবনার পাঁচটি আসন। এর মধ্যে সবার নজর পাবনা-৩ ও পাবনা-৪ আসনে। কারণ, বিএনপির প্রার্থী ঘোষণার পর এই দুটি আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি উঠেছে। এরইমধ্যে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন দুটি আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নেতাকর্মী সমর্থকরা।
প্রার্থী পরিবর্তন না হলে নিজ দলের বিদ্রোহী/স্বতন্ত্র প্রার্থীর সাথে ভোটযুদ্ধ হবে বিএনপি প্রার্থীর। তবে জামায়াতের প্রার্থী অনেক আগেই ঘোষণা করায় তাদের মধ্যে তেমন বিভেদ দেখা যাচ্ছে না। অন্যান্য আসনে বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে প্রতদ্বন্দ্বিতার আভাস মিলেছে।
পাবনা-১
১৯৯১ ও ২০০১ সালে এ আসনটি জামায়াতে ইসলামীর দখলে ছিল। মানবতাবিরোধী অপরাধে হাসিনার ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত জামায়াতের সাবেক আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী দুই মেয়াদে এ আসনটিতে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর আর জামায়াত এ আসনটি দখলে নিতে পারেনি। এছাড়া ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির ও ১৯৯৬ সালে অসম্পূর্ণ মেয়াদে এ আসনে বিএনপির এমপি ছিল। ১৯৯৬ সালের জুন থেকে ২০০১ সাল এবং ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এ আসনটি দখলে ছিল আওয়ামী লীগের। ফলে এই আসনটিতে বিএনপির অতীত রেকর্ড খুব একটা সুখকর নয়।
আগে সাঁথিয়া উপজেলা ও বেড়া উপজেলার একাংশ নিয়ে পাবনা-১ আসন থাকলেও এবার সংশোধিত আসন বিন্যাস অনুযায়ী শুধু সাঁথিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত হয়েছে এই আসন। এখানে বিএনপি এখনও কোনো প্রার্থীকে মনোনীত করেনি। জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী প্রয়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমান মোমেন।
এখানে জামায়াতের ভোট ব্যাংক রয়েছে বরাবরই। তাই লড়াই হবে দাঁড়ি পাল্লার সাথে ধানের শীষের। সেক্ষেত্রে জামায়াতের ভোট ব্যাংক ও বিএনপির শক্তিশালী প্রার্থী না দিতে পারলে এগিয়ে থাকবেন জামায়াতের প্রার্থী। দেখার বিষয় ২৯ বছর ধরে হাতছাড়া আসনটি পুনরূদ্ধারে কাকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি।
এই আসনে এখানে এনসিপি এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি বা কেউ প্রার্থী হননি। এছাড়া অন্যান্য দলের প্রার্থীদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মনোনীত প্রার্থী মাওলানা আব্দুল গণি। তিনি সংগঠনটির পাবনা জেলা পূর্ব শাখার সেক্রেটারি। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস এর মনোনীত প্রার্থী মাওলানা আমজাদ হোসেন। তিনি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক।
পাবনা-২
১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত এ আসনে বিএনপির প্রভাবই বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে। কেননা ১৯৯১ এবং ২০০১ সালে বিএনপির প্রার্থীরা এ আসনে দলীয় মনোনয়নে নির্বাচিত হন। এর আগে ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত এ আসনের সংসদ সদস্য ছিল বিএনপির। পরে ১৯৯৬ সালের জুনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হয়। এরপর ২০০৮ সালে ও ২০১৪ সালেও আওয়ামী লীগের দখলে চলে যায় আসনি। সবশেষ ২০১৮ ও ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচিত হন। সেই অর্থে ২৯ বছর ধরে আসনটি বিএনপির হাতছাড়া।
এবার সুজানগর ও বেড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে বিএনপি দলীয় মনোনীত সম্ভাব্য প্রার্থী দুইবারের সাবেক এমপি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কে এম সেলিম রেজা হাবিব। জামায়াতের ইসলামী দলীয় মনোনীত প্রার্থী সুজানগর উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক মাওলানা হেসাব উদ্দিন। এই আসনে বিএনপির অবস্থান বেশ শক্ত। তবে নিজেদের অবস্থানও বেশ এগিয়ে নিয়েছে জামায়াত। তাই এবার লড়াই হবে বিএনপি ও জামায়াতের ইসলামীর প্রার্থীর মধ্যে। মাঠের চিত্র হিসেবে এগিয়ে বিএনপি। তবে তাদের জয় সহজ হবে না। এই আসনে বিএনপির বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তেমন কারো নাম শোনা যাচ্ছে না।
অন্যান্য দলের মধ্যে এই আসনে প্রার্থী হচ্ছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র মনোনীত জাতীয় যুব শক্তির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী সংগঠনটির সদস্য মাওলানা আফজাল হোসেন ও খেলাফত মজলিসের মনোনীত প্রার্থী জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা আলতাব হোসেন, গণঅধিকার পরিষদের মনোনীত প্রার্থী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি গোলাম সরওয়ার খান জুয়েল।
পাবনা-৩
এ আসনে বরাবরই আওয়ামী লীগের দাপট ছিল বেশি। ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি ছিলেন মকবুল হোসেন। যদিও অধিকাংশ নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এর আগে ১৯৯১ সালে বিএনপির সাইফুল আযম ও ২০০১ সালে বিএনপির কে এম আনোয়ারুল ইসলাম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মাঝে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ওয়াজি উদ্দিন খান নির্বাচিত হন। দুই যুগ ধরে হাতছাড়া আসনটি পুনরুদ্ধারে এবার জোরেশোরে মাঠে নেমেছে বিএনপি।
এ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনীত সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন এর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তার জন্মস্থান জেলার সুজানগর উপজেলায়। তিনি বর্তমানে সপরিবারে চাটমোহর উপজেলার ভোটার হয়েছেন। এ দলের আরো মনোনয়ন প্রত্যাশী চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি কে এম আনোয়ারুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসাদুল ইসলাম হীরা এবং জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা হাসানুল ইসলাম রাজা।
সম্ভাব্য প্রার্থী পরিবর্তন এবং স্থানীয় প্রার্থীর দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন আনোয়ারুল ইসলাম এবং হাসাদুল ইসলাম হীরা ও তার সমর্থিত নেতাকর্মীরা। হাল ছাড়ছেন না তারা। শেষ পর্যন্ত দেখতে চান কী করে কেন্দ্র। প্রার্থী পরিবর্তন না হলে নিজেদের মধ্যে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে।
চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া এবং ফরিদপুর উপজেলার নিয়ে গঠিত পাবনা-৩ আসন। এ আসনে গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা চাটমোহর। কারণ ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার ভোটার মিলিয়ে যে ভোটার তার চেয়ে বেশি ভোটার শুধু চাটমোহর উপজেলায়। তাই চাটমোহর উপজেলার প্রার্থীর দিকে চোখ সাধারণ মানুষের। এ আসনে একক প্রার্থী হলে ধানের শীষ ও দাঁড়ি পাল্লার মধ্যে হবে ভোট যুদ্ধ।
তবে বিএনপির মনোনয়ন বঞ্ছিত হয়ে যদি চাটমোহরের কোনো প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী হন সেক্ষেত্রে ভোটযুদ্ধ হবে বিএনপি বনাম একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে। মাঠের চিত্র বলছে সেক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবে স্বতন্ত্রী প্রার্থী। কারণ অন্য আসনের প্রার্থীকে এই আসনে যুক্ত করেছে বিএনপি।
অন্যান্য দলের প্রার্থীদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক মাওলানা মো.
পাবনা-৪
এ আসনে ১৯৯১ সালে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম সরদার জয়লাভ করেন। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের নির্বাচনে সিরাজুল ইসলাম সরদার পুনরায় নির্বাচিত হন। তবে একই সালের জুন মাসের নির্বাচন থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এ আসনে টানা বিজয়ী হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা।
এর মধ্যে ১৯৯৬ থেকে ২০১৮ সাল পযন্ত টানা পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন প্রয়াত ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলু। তার মৃত্যুর পর ২০২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর উপ-নির্বাচনে এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়ী হন। দলীয় কোন্দল আর গ্রুপিংয়ের কারণে ২৯ বছর ধরে আসনটিতে জিততে পারছে না বিএনপি।
ঈশ্বরদী ও আটঘরিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বিএনপির অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং সবচেয়ে বেশি এখানে। এই আসনে বিএনপির দলীয় মনোনীত সম্ভাব্য প্রার্থী করা হয়েছে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিবকে।
এখানে শক্তিশালী একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু। যিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে হামলা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে দীর্ঘ বছর কারাভোগ করেছেন। তিনি ও তার সমর্থক নেতাকর্মীরা দলীয় প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছেন। প্রার্থী পরিবর্তন করা না হলে তিনি জাকারিয়া পিন্টু স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন বলে ধারণা স্থানীয় বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীদের। সেক্ষেত্রে লড়াই হবে সেয়ানে সেয়ানে।
এই আসনে জামায়াত ইসলামী মনোনীত প্রার্থী হলেন- জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবু তালেব মণ্ডল। আটঘরিয়া উপজেলায় জামায়াতের ভোট ব্যাংক রয়েছে। আর ঈশ্বরদীতে বাড়ি হওয়ার সুবাদে সেখানেও আলাদা অবস্থান তৈরি করেছেন তিনি। সবমিলিয়ে জামায়াতের অবস্থানও বেশ শক্ত। বিএনপির কেউ স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহী প্রার্থী না হলে এই আসনে বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে লড়াই জমে উঠবে বলে আভাস মিলেছে।
এছাড়া অন্যান্য দলের প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী ইসলামী যুব আন্দোলন পাবনা জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আনোয়ার হোসেন, খেলাফত মজলিসের মনোনীত প্রার্থী সংগঠনটির জেলা কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব মাওলানা আল আমিন, জাতীয় নাগরিক কমিটি (এনসিপি)’র মনোনীত প্রার্থী বিএফ শাহীন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ।
পাবনা-৫
পাবনার অন্যতম আসন পাবনা-৫ আসন। সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনটি বরাবরই থাকে আলোচনায়। জেলার কেন্দ্র হিসেবে সবার নজর থাকে এখানে। ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এ আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। এর আগে ২০০১ ও ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর মাওলানা আব্দুস সোবহান নির্বাচিত সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল ছাড়া এ আসনে বিএনপির কেউ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে পারেননি। ১৯৯৬ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর সংসদের পূর্ণ মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেলে ২০০০ সালের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে মাজহার আলী কাদেরী নির্বাচিত হন।
এই আসনটিও দুই যুগের অধিক সময় ধরে হাতছাড়া বিএনপির। তাই এবার পুনরুদ্ধারের পালা। এরইমধ্যে এই আসনে বিএনপির দলীয় মনোনীত সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের নাম ঘোষণা করেছে। তার নাম ঘোষণার পর বিএনপি অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশী কাউকে মাঠে তেমন দেখা যাচ্ছে না।
এক সময় জামায়াতের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই আসনে জামায়াত ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী করা হয়েছে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির প্রিন্সিপাল মাওলানা ইকবাল হুসাইনকে।
দলীয় ও প্রার্থীর সমীকরণ হিসেবে অনেকটাই এগিয়ে শিমুল বিশ্বাস। তার অন্যতম কারণ দলমত নির্বিশেষ সাধারণ মানুষের কাছে তিনি ভরসার প্রতিক। তার মাধ্যমে জেলার হাজারো মানুষ উপকৃত হয়েছেন। চাকরি থেকে শুরু করে অসহায় দরিদ্র মানুষদের তিনি নানাভাবে সহযোগিতা করে আসছেন। তার প্রতিষ্ঠিত ট্রাস্টের মাধ্যমে তিনি গরিব দুঃস্থ মানুষকে সেলাই মেশিন, গরু, ছাগল, শীতবস্ত্র বিতরণ, ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুদান প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে থাকছেন সবসময়। যে কারণে নির্বাচনের বৈতরণী পার হতে তার খুব একটা বেগ পেতে হবে না বলে মনে করছেন নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ।
অন্যদিকে দীর্ঘ বছর ধরে জামায়াতের হাতছাড়া আসনটি। জামায়াতের আলাদা ভোট ব্যাংক থাকায় শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার আশা করছেন দলটির সমর্থকরা। তবে এবার জামায়াতের দলীয় মনোনয়নের বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা আব্দুস সোবাহানের ছেলে নেছার আহমেদ নান্নু। তারও আলাদা পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। ফলে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী ইকবালকে বিজয়ী হতে হলে বিএনপির প্রার্থীর পাশাপাশি ও সোবহান পুত্র হবেন বড় বাধা। সে হিসেবে সব দিক দিয়ে এগিয়ে আছেন বিএনপির প্রার্থী শিমুল বিশ্বাস।
এই আসনে অন্যান্য দলের প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী জেলা কমিটির উপদেষ্টা মুফতী নাজমুল হাসান, খেলাফত মজলিসের মনোনীত প্রার্থী জেলা কমিটির আহ্বায়ক মুফতী ওয়ালী উল্লাহ এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি (এনসিপি)’র মনোনীত প্রার্থী সংগঠনটির মালয়েশিয়া ডাস্পোরা এলায়েন্স শাখার সদস্য সচিব রওশন আলম।
ঢাকা/শাহীন/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বতন ত র প র র থ র মন ন ত প র র থ ব এনপ র প র র থ ন র ব চ ত হন কম ট র য গ ম ১৯৯৬ স ল র দ বন দ ব ত র উপজ ল র ব এনপ র ক ইসল ম র ম স গঠনট র ত এই আসন ২০০১ স ল ন ত কর ম ল ইসল ম র রহম ন অবস থ ন এ আসনট কর ছ ন আওয় ম এনস প সমর থ
এছাড়াও পড়ুন:
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা: ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের বিরুদ্ধে আপিলের রায় আজ
ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৯৬ সালে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত হয়। এই সংশোধনী বাতিল করে ১৪ বছর আগে (২০১১ সাল) রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ। সেই রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল এবং এ-সংক্রান্ত আবেদনের ওপর আজ বৃহস্পতিবার রায়ের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ এই রায় দেবেন। আপিল বিভাগের অপর ছয় সদস্য হলেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক, বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।
ত্রয়োদশ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৯ সালে একটি রিট করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ রায় দেন।
সেই রায়ে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীকে বৈধ ঘোষণা করা হয়। অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহাল থাকে। এই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারীপক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগ রায় ঘোষণা করেন। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে (৪: ৩) ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেন।
এই রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী (২০১১ সাল) আনা হয়।
এর আগে ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে দেশে সংবিধান অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার অধীন জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। আর ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলোর সমঝোতার ভিত্তিতে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে। সেই সরকারের প্রধান ছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ। তখন তিনি প্রধান বিচারপতির পদ ছেড়ে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন।