ড্যাফোডিল ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ, অগ্নিস
Published: 27th, October 2025 GMT
সাভারের আশুলিয়ায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন দুই ইউনিভার্সিটির অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) রাত ১২টা থেকে ভোর সাড়ে চারটা পর্যন্ত দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর চালানো হয়। দেওয়া হয় আগুন। তবে এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো প্রকার সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যায় ব্যাচেলর প্যারাডাইস হোস্টেলর সামনে সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী মোটরসাইকেল থেকে থুথু ফেললে তা ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থীর শরীরে লাগে। এ নিয়ে উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। পরে রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় ৪০–৫০ জন শিক্ষার্থী দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। আগুন দেওয়া হয় তাদের হোস্টেলে।
এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে সিটি ইউনিভার্সিটির দিকে গেলে ব্যাপক সংঘর্ষ বাঁধে। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হন।
একপর্যায়ে রাত ১২টার পর ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটির ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে। এসময় তারা প্রশাসনিক ভবনেও হামলা করে। পুড়িয়ে ফেলা হয় তিনটি বাস ও একটি প্রাইভেটকার। ভাঙচুর চালানো হয় আরো পাঁচ যানবাহনে। ভোররাতে ফোটানো হয় ককটেল। এতে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।
ভোর সাড়ে ৪টার সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু জায়গায় আগুন দেখা গেছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটেছে। উত্তেজনার এক পর্যায়ে গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে।
সাভার থানার ডিউটি অফিসার এসআই হাবিবুর রহমান বলেন, “আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আছেন। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউন ভ র স ট র ব শ বব দ য
এছাড়াও পড়ুন:
নোয়াখালীতে ঘুমন্ত মাদ্রাসাছাত্রকে গলা কেটে হত্যা, সহপাঠী আটক
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার একটি মাদ্রাসা থেকে এক শিক্ষার্থীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত মাদ্রাসাশিক্ষার্থীর এক সহপাঠীকে পুলিশ আটক করেছে।
নিহত শিক্ষার্থীর নাম নাজিম উদ্দিন (১৩)। সে সোনাইমুড়ী উপজেলা উপজেলার চাষীরহাট ইউনিয়নের জাহানাবাদ গ্রামের মোহাম্মদ ওবায়েদ উল্লাহর ছেলে। সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাটরা আল মাদ্রাসাতুল ইসলামিয়া মাখছুদুল উলুম মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র ছিল সে।
খুনের ঘটনায় আটক শিক্ষার্থীর বয়স ১৬ বছর। ওই কিশোরও মাদ্রাসাটির হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী। তাঁর কাছ থেকে একটি ছুরি উদ্ধার হয়েছে। ছুরিটি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, নাজিম উদ্দিন মাদ্রাসায় থেকে হিফজ বিভাগে পড়ালেখা করে আসছিল। গতকাল রোববার রাতেও অন্যান্য দিনের মতো সে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মাদ্রাসার একটি কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। ওই কক্ষে ১৪ জন শিক্ষার্থী থাকে। দিবাগত রাত তিনটার দিকে কারও গোঙানোর শব্দ পেয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী জেগে ওঠে। পরে তারা কক্ষের বাতি জ্বালিয়ে দেখতে পায়, রক্তাক্ত অবস্থায় নাজিমের গলাকাটা লাশ পড়ে রয়েছে। মাদ্রাসাশিক্ষকদের বিষয়টি জানানো হয়। খবর পেয়ে সকালে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, রক্তাক্ত লাশটির পাশে হাতের একটি ছাপ দেখে সন্দেহ হয়। এ সময় কক্ষে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজনকে কাঁপতে দেখায় তাকে সন্দেহবশত আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে।
ওসি বলেন, আটক ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে টুপি পরা নিয়ে সপ্তাহ দুয়েক আগে নাজিম উদ্দিনের ঝগড়া হয়েছিল। মাদ্রাসাশিক্ষকেরা বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। এরপরও মনে ক্ষোভ পুষে রেখেছিল আটক কিশোর। এরই জেরে সে স্থানীয় বাজার থেকে ৩০০ টাকায় একটি ছুরি কিনে লুকিয়ে রাখে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গতকাল রাতে নাজিমকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলা কেটে হত্যা করে। হত্যার পর ছুরিটি লুকিয়ে রেখে কক্ষে শুয়ে ছিল সে।
ঘটনাস্থলে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) লোকজন রয়েছেন বলে জানিয়ে ওসি বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে। নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারের অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।