সাভারে ড্যাফোডিল ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ, বাসে আগুন
Published: 27th, October 2025 GMT
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় বেসরকারি দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে অন্তত দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
গতকাল রোববার রাত ৯টার দিকে আশুলিয়ার খাগান এলাকায় বেসরকারি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ শুরু হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, গতকাল সন্ধ্যার পর ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ভাড়া বাসা ‘ব্যাচেলর প্যারাডাইস হোস্টেল’ পাশে বসেছিলেন সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। এদের মধ্য এক শিক্ষার্থী থুতু ফেললে অসর্তকতাবশত সেখান দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে যাওয়া ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীর শরীরে লাগে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা– কাটাকাটি হয়। পরে রাত ৯ টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী দেশি অস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের ওই বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন।
এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন। একপর্যায়ে তাঁরা সিটি ইউনিভার্সিটির দিকে অগ্রসর হন। উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হন। তাঁরা সিটি ইউনিভার্সিটির প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়ে সমাধানের উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান।
এই উত্তেজনার মধ্যে সিটি ইউনিভার্সিটি সংলগ্ন এলাকায় পৃথক একটি স্থানে সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন। পরে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে ঢোকেন। তাঁরা ক্যাম্পাসে দাঁড় করিয়ে রাখা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩টি বাস, একটি প্রাইভেটকারে আগুন দেন। এ ছাড়া একটি বাস, দুইটি প্রাইভেটকার, একটি মোটরসাইকেল, প্রশাসনিক ভবনে ভাঙচুর করা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যেরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘অসর্তকতাবশতই সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ফেলা থুতু ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীর শরীরে লাগে। সেখানে ‘সরি’ বলার পর বিষয়টি সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু রাতে এসে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের মেসে ভাঙচুরের ঘটনাটি কাম্য নয়। উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তান। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি সমাধানের।’
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির প্রক্টর শেখ মুহাম্মদ আলিয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখনো আমাদের ৯ জন শিক্ষার্থীকে সিটি ইউনিভার্সিটিতে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি সমাধানের। এ ঘটনায় ড্যাফোডিলের প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।’
সিটি ইউনিভার্সিটির প্রক্টর অধ্যাপক আবু জায়েদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, সেটি এখনো আমরা নিশ্চিত নই। ছাত্রদের মারামারি থেকে ক্যাম্পাস পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা হতে পারে না। এটি পরিকল্পিত। আমাদের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউন ভ র স ট র শ ক ষ র থ দ র ড য ফ ড ল ইউন ভ র স ট র ইউন ভ র স ট র প র র ঘটন ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
নিহত কালামের দাফন, ‘দুই সন্তান নিয়ে কোথায় দাঁড়াব’—স্ত্রীর প্রশ্ন
ঈশ্বরকাঠি গ্রামটি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা সদর হতে ২ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। পদ্মা ও কীর্তিনাশা নদীর তীরঘেঁষা নির্মল ও শান্ত গ্রামটিতে চলছে শোক।
ঢাকায় মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে নিহত আবুল কালামের দ্বিতীয় জানাজা আজ সোমবার সকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রামটির পোরাগাছা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে। পরে সকাল ১০টার দিকে নড়িয়া পৌর কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী অশ্রুসিক্ত নয়নে তাঁকে শেষবিদায় জানিয়েছেন।
আরও পড়ুনশৈশবে বাবা-মা হারানো আবুল কালামের এমন মৃত্যু মানতে পারছেন না স্বজনেরা১৭ ঘণ্টা আগেআবুল কালামের বাড়ি উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামে। তাঁর এমন অকালমৃত্যু মানতে পারছেন না স্বজন ও গ্রামের মানুষেরা। তিনি ওই গ্রামের জলিল চোকদার ও হনুফা বেগম দম্পতির ছেলে। চার ভাই ও ছয় বোনের মধ্যে আবুল কালাম ভাইদের দিক থেকে সবার ছোট। ২০ বছর আগে তাঁর বাবা ও মা মারা যান। এরপর তিনি বেড়ে ওঠেন বড় ভাই ও বোনদের কাছে।
স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান নিয়ে আবুল কালাম নারায়ণগঞ্জের পাঠানটুলি এলাকায় বসবাস করতেন। আর কাজ করতেন রাজধানীর মতিঝিলের একটি ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে। ওই কাজের জন্যই প্রতিদিন তিনি নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা যাতায়াত করতেন।
আবুল কালামের দ্বিতীয় জানাজা আজ সোমবার সকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈশ্বরকাঠি গ্রামের পোরাগাছা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা মাঠে