ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় বেসরকারি দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে অন্তত দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

গতকাল রোববার রাত ৯টার দিকে আশুলিয়ার খাগান এলাকায় বেসরকারি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ শুরু হয়।

শিক্ষার্থীরা জানান, গতকাল সন্ধ্যার পর ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ভাড়া বাসা ‘ব্যাচেলর প্যারাডাইস হোস্টেল’ পাশে বসেছিলেন সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। এদের মধ্য এক শিক্ষার্থী থুতু ফেললে অসর্তকতাবশত সেখান দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে যাওয়া ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীর শরীরে লাগে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা– কাটাকাটি হয়। পরে রাত ৯ টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী দেশি অস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের ওই বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন।

এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন। একপর্যায়ে তাঁরা সিটি ইউনিভার্সিটির দিকে অগ্রসর হন। উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হন। তাঁরা সিটি ইউনিভার্সিটির প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়ে সমাধানের উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান।

এই উত্তেজনার মধ্যে সিটি ইউনিভার্সিটি সংলগ্ন এলাকায় পৃথক একটি স্থানে সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেন। পরে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে ঢোকেন। তাঁরা ক্যাম্পাসে দাঁড় করিয়ে রাখা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩টি বাস, একটি প্রাইভেটকারে আগুন দেন। এ ছাড়া একটি বাস, দুইটি প্রাইভেটকার, একটি মোটরসাইকেল, প্রশাসনিক ভবনে ভাঙচুর করা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যেরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘অসর্তকতাবশতই সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ফেলা থুতু ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীর শরীরে লাগে। সেখানে ‘সরি’ বলার পর বিষয়টি সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু রাতে এসে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের মেসে ভাঙচুরের ঘটনাটি কাম্য নয়। উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তান। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি সমাধানের।’  

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির প্রক্টর শেখ মুহাম্মদ আলিয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখনো আমাদের ৯ জন শিক্ষার্থীকে সিটি ইউনিভার্সিটিতে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি সমাধানের। এ ঘটনায় ড্যাফোডিলের প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।’

সিটি ইউনিভার্সিটির প্রক্টর অধ্যাপক আবু জায়েদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, সেটি এখনো আমরা নিশ্চিত নই। ছাত্রদের মারামারি থেকে ক্যাম্পাস পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা হতে পারে না। এটি পরিকল্পিত। আমাদের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউন ভ র স ট র শ ক ষ র থ দ র ড য ফ ড ল ইউন ভ র স ট র ইউন ভ র স ট র প র র ঘটন ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

বাড়িতে থাকা টাকা হাতিয়ে নিতে মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীকে হত্যা: পুলিশ

রংপুরের তারাগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় (৭০) এবং তার স্ত্রী সুবর্ণা রায়কে (৬০) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মোরসালিন ইসলাম (২৫) নামে এক টাইলস মিস্ত্রিকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। 

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাত ১টার দিকে উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের ফাজিলপুর শেরমস্ত গ্রামের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার মোরসালিন একই গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে।

আরো পড়ুন:

লালবাগে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন

সালিশ বৈঠকে ভ্যানচালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

আরো পড়ুন: স্বামী-স্ত্রী হত্যা: যোগেশ চন্দ্রকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায়

ডিবি পুলিশ জানায়, কয়েকদিন আগে মোরসালিন বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্রের বাড়িতে টাইলস লাগানোর কাজ করেন। ওই বাড়িতে প্রচুর টাকা আছে এমন ধারণা থেকে তার মনে লোভ জন্মে। এ থেকেই তিনি হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন।

গত শনিবার রাত ১০টার দিকে নিজের বাড়ির একটি চায়নিজ কুড়াল নিয়ে মোরসালিন যোগেশ চন্দ্রের বাড়ির পেছনে যান। কাঁঠাল গাছ বেয়ে দেয়াল টপকে তিনি বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেন। প্রথমে তিনি সুবর্ণা রায়কে ও পরে যোগেশ চন্দ্র রায়কে কুপিয়ে হত্যা করেন। এরপর আলমারির তালা ভাঙ্গেন মোরসালিন। সেখানে কোনো টাকা না পেয়ে তিনি বাড়িটি থেকে বের হন। হত্যায় ব্যবহৃত কুড়ালটি পাশের পুকুরে ফেলে দেন।

আরো পড়ুন: চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ ও সুবর্ণাকে

ডিবি পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোরসালিন হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। পরিবারের আর্থিক অবস্থার সংকট এবং ৮ হাজার টাকার ঋণ তাকে এই পথ বেছে নিতে প্ররোচিত করেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

রংপুরের পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন মারুফ বলেন, “গত ৬ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তার স্ত্রীকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন মোরসালিন। টাইলসের কাজ করার সময় বাড়িটিতে অনেক টাকা রয়েছে এমন ভুল ধারণা তৈরি হয় তার মধ্যে। ঋণের চাপ থেকেই তিনি হত্যার পরিকল্পনা করেন।”

আরো পড়ুন: রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীকে হত্যা

তিনি আরো বলেন, “হত্যার পর আলমারির তালা ভাঙ্গেন মোরসালিন। সেখানে কোনো টাকা না পেয়ে খালি হাতে পালিয়ে যেতে হয় তাকে। ঘটনাস্থল থেকে পুকুরে ফেলা কুড়ালটিও উদ্ধার করা হয়েছে।”

ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ