বিশ্ববাজারে আবার কমেছে সোনার দাম, আগামী এক মাস কেমন থাকবে দাম
Published: 24th, November 2025 GMT
বিশ্ববাজারে সোনার দাম আরও কিছুটা কমেছে। গোল্ড প্রাইস ডট অর্গের তথ্যানুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের সময় আজ সোমবার আউন্সপ্রতি সোনার দাম ৩৩ ডলার কমেছে। বিভিন্ন বৈশ্বিক সংস্থা বলছে, আগামী কিছুদিন সোনার দাম নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে ওঠানামা করবে। দাম একেবারে কমে যাবে না, আবার অনেকটা বেড়েও যাবে না।
চলতি বছর সোনার দাম একটানা অনেক দিন বাড়ার পর সম্প্রতি কিছুটা কমেছে। তা সত্ত্বেও সোনার দাম এখন পর্যন্ত আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ডলারের ওপরে। নিউইয়র্কের সময় অনুযায়ী, আজ রাত ১১টার সময় সোনার দাম ছিল আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৫০ ডলার ৪৩ সেন্ট।
বেশ কিছু কারণে সোনার দাম সীমিত পরিসরের মধ্যে থাকবে বলে মনে করছেন বাজার–বিশ্লেষকেরা। তাঁরা বেশ কিছু অর্থনৈতিক সূচকের দিকে তাকিয়ে আছেন। প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন শাটডাউন থাকার কারণে কী পরিস্থিতি হয়, সেদিকে নজর রাখছেন তাঁরা। দেশটির মূল্যস্ফীতি ও জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার কী দাঁড়ায়, সেদিকে বিনিয়োগকারীদের তীক্ষ্ণ নজর। সেই সঙ্গে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়, অর্থাৎ ফেডারেল রিজার্ভ নীতি সুদহার হ্রাস-বৃদ্ধি করে কি না, সেদিকেও বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আছে। ডিসেম্বর মাসে ফেডের মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠক। ফলে এই সময়ে মধ্যে, অর্থাৎ আগামী এক মাস সোনার দাম খুব বেশি ওঠানামা করবে না।
ফেডারেল রিজার্ভ নীতি সুদহারের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়, তার জন্য আরও কিছু সূচক গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলোর মধ্যে আছে সাপ্তাহিক কর্মসংস্থানের হার, ভোক্তাদের আত্মবিশ্বাস, উৎপাদনবহির্ভূত খাতের পিএমআই। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ডিসেম্বর মাসে ফেডের নীতি সুদহার ঘোষণার আগে সোনার দাম স্থিতিশীল থাকবে।
সোনার দাম হ্রাস-বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আরেকটি যে বিষয় গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, ডলারের বিনিময় হার। সোনার দাম আপাতত স্থিতিশীল থাকার সম্ভাবনা বেশি হলেও একটি কারণে দাম হঠাৎ কমে যেতে পারে। সেটা হলো, ডলারের বিনিময় হার বেড়ে যাওয়া। দ্য অ্যালয় মার্কেটের প্রধান নির্বাহী ব্র্যান্ডন অ্যাভেরসানো বলেন, সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো মার্কিন ডলারের আবার শক্তিশালী হয়ে ওঠা। এতে সোনার চাহিদা কমে যেতে পারে। বিনিয়োগকারীরা তখন মার্কিন ডলারভিত্তিক বন্ডের দিকে ঝুঁকে পড়তে পারেন। সেটা হলে সোনার দাম আবার কমে যেতে পারে। খবর ইনভেস্টোপিডিয়ার
এ বছর সোনার দাম ৪০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ইতিহাসে এই প্রথম আউন্সপ্রতি দাম ৪ হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেছে। অ্যাভেরসানোর মতে, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণেই মূলত সোনার দামের এই উল্লম্ফন। পাশাপাশি মার্কিন ডলারের বিনিময় হার নিয়ে উদ্বেগ এবং অন্যান্য মুদ্রার দুর্বলতার কারণেও সোনার এই দাম বৃদ্ধি বলে তিনি মনে করেন। বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের সরকার—সবাই মনে করে, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়লে অন্তত সোনার দাম অক্ষুণ্ন থাকবে। উদাহরণ হিসেবে ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের কথা বলা যায়, যখন প্রায় সব সম্পদের দাম কমলেও (সরকারি বন্ড ছাড়া) সোনার দাম বরং ৪ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছিল।
সোনার বাড়তি চাহিদাও দাম বাড়ার আরেকটি বড় কারণ। অ্যাভেরসানো বলেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময়ে শুধু সাধারণ মানুষই নিশ্চিত সম্পদ হিসেবে সোনা কেনে না, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোও একই কাজ করে। তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন রেকর্ড পরিমাণ সোনা কিনছে। উদাহরণ হিসেবে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি কয়েক বছরে নজিরবিহীন পরিমাণে সোনা কিনেছে। ফলে বাজারে সোনার সরবরাহ কমে যাচ্ছে। সে কারণে দাম বেড়ে যাচ্ছে।
বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়লে দেশের বাজারে বাড়ানো হয়। আবার বিশ্ববাজারে দাম কমলে দেশের বাজারে কমানো হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ বব জ র র সময়
এছাড়াও পড়ুন:
মিসরের গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে হামাসের শীর্ষ প্রতিনিধিদলের বৈঠক
ইসরায়েল ও হামাস বারবার একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছে। এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ও গাজার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে হামাসের শীর্ষ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল রোববার কায়রোতে মিসরের গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতার দায়িত্ব পালন করছে মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র। তারা গত মাসে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেছিল।
আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় নিহত ৬৯ হাজার ছাড়াল ০৯ নভেম্বর ২০২৫এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, তারা মিসরের গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। তবে অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল বারবার চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করায় এটি হুমকির মুখে পড়েছে।
হামাসের ওই প্রতিনিধিদলে ছিলেন নির্বাসনে থাকা হামাস নেতা খলিল আল-হায়া। তিনি মধ্যস্থতাকারীদের তত্ত্বাবধানে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো বন্ধ এবং এসব ঘটনা নথিবদ্ধ করতে একটি ‘স্পষ্ট ও নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া’ ঠিক করার আহ্বান জানান।
হামাস আরও জানায়, গাজার দক্ষিণের রাফাহ অঞ্চলের সুড়ঙ্গগুলোয় অবস্থানরত হামাস যোদ্ধাদের বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সমাধান খুঁজে বের করতে মিসরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এসব যোদ্ধার সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলেও জানিয়েছে সংগঠনটি।
আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতির এক মাস পরও গাজার সুড়ঙ্গগুলোয় কেন আটকে আছেন হামাস যোদ্ধারা১৭ নভেম্বর ২০২৫চলতি মাসের শুরুতে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছিল, গাজার ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিভিন্ন সুড়ঙ্গে আটকা পড়া হামাস যোদ্ধাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সমাধান খুঁজছেন মধ্যস্থতাকারীরা।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসের এক যোদ্ধা গাজায় ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করে ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামলার চেষ্টার পর গত শনিবার ইসরায়েলি বাহিনী হামাসের পাঁচ জ্যেষ্ঠ সদস্যকে হত্যা করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, শনিবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছেন।
গতকাল ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, শনিবারের হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে হামাসের এক স্থানীয় কমান্ডারও ছিলেন।
আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতি শুরুর পর গাজায় দেড় হাজারের বেশি ভবন ধ্বংস ইসরায়েলের১২ নভেম্বর ২০২৫