ঢাকা ছাড়লেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী
Published: 24th, November 2025 GMT
দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে ঢাকা ছাড়লেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তাকে বহনকারী ফ্লাইটটি ভুটানের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করে।
বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। এ সময় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন এবং পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা ছাড়ার প্রাক্কালে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় প্রটোকল অনুযায়ী ‘স্ট্যাটিক গার্ড অব অনার’ প্রদান করা হয়।
সফরকালে বাংলাদেশ ও ভুটান দুটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করে— একটি স্বাস্থ্যসেবা সহযোগিতার বিষয়ে এবং আরেকটি ইন্টারনেট সংযোগ জোরদার করার লক্ষ্যে।
সফরের অংশ হিসেবে শেরিং তোবগে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ছাড়াও প্রধান উপদেষ্টা, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
সফরকালে বাংলাদেশ ও ভুটান দুটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করে— একটি স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে এবং আরেকটি ইন্টারনেট সংযোগ সহযোগিতায়। সফরের অংশ হিসেবে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নেন। বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের সঙ্গে। এছাড়া, তিনি সরকারের অন্যান্য উপদেষ্টা, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতাদের সাথেও সাক্ষাৎ করেন।
গত ২২ নভেম্বর রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় পৌঁছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। সেদিন সকাল ৮টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টা বিমানবন্দরে তাকে লালগালিচা অভ্যর্থনা জানান। এ সময় তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
ঢাকা/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যাম্ফারের ‘যন্ত্রণা’ পাশ কাটিয়ে স্বস্তির হাসি বাংলাদেশের
হাসান মুরাদের বলে বোল্ড হলেন ম্যাথু হ্যামফ্রিস। সঙ্গে সঙ্গেই জয়ের উচ্ছ্বাসে ভাসতে শুরু করল পুরো বাংলাদেশ দল। এর মধ্যেই কার্টিস ক্যাম্ফারের কাছে গিয়ে পিঠ চাপড়ে দিলেন লিটন দাস, সামনে এগিয়ে কথা বললেন মুশফিকুর রহিমও। কী বলেছেন, সেটা অনুমান করা খুব কঠিন নয়। ধৈর্য ও দক্ষতার যে অপূর্ব মেলবন্ধন দেখিয়েছেন, সেটির জন্য সাধুবাদ যে তাঁর প্রাপ্যই।
গত পাঁচ দিনের বেশির ভাগজুড়ে ম্যাচের ফল যে দিকে হাঁটছিল, শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তাই। আয়ারল্যান্ডকে ২১৭ রানে হারিয়ে ম্যাচের সঙ্গে সিরিজও জিতেছে বাংলাদেশ। তবে হ্যামফ্রিসের বোল্ডের মধ্য দিয়ে আসা এই জয়ের আগে বাংলাদেশকে অনেকটা সময় অস্বস্তিতে ভুগিয়ে গেছেন ওই ক্যাম্ফারই।
হাতে শেষ ৪ উইকেট নিয়েও আজ পঞ্চম দিনে ৫৯.৩ ওভার ব্যাট করেছে আয়ারল্যান্ড। এক ক্যাম্ফারই খেলেছেন ১৬৬ বল। শেষ পর্যন্ত থেকেছেন অপরাজিতও।
লেজের সারির ব্যাটসম্যানদের নিয়ে আয়ারল্যান্ড কতটা লড়াই করেছে, সেটা বুঝতে সাহায্য করতে পারে এই পরিসংখ্যানটা— মিরপুরে চতুর্থ ইনিংসে সফরকারী দল হিসেবে সর্বোচ্চ রান আর বল খেলার দুটি রেকর্ডই গড়েছে তারা। সব মিলিয়েও তাঁদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১১৩.৩ ওভারে করা ২৯১ রান দ্বিতীয়। ২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশই শুধু এর চেয়ে বেশি (৪১৩ রান) করতে পেরেছিল।
এমন কীর্তি গড়ার পেছনে মুখ্য ভূমিকা রেখেছেন আয়ারল্যান্ডের দুই ব্যাটসম্যান কার্টিস ক্যাম্ফার ও গ্যাভিন হোয়ে। ৬ উইকেটে ১৭৬ রান নিয়ে আজ শেষদিনে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল আয়ারল্যান্ড। ৯৩ বল খেলে ৩৪ রান করা ক্যাম্ফারের সঙ্গী তখন ১৩ বলে ১১ রান করা অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন।
কত দ্রুত তাঁদের ফিরিয়ে বাংলাদেশ জয়টা নিশ্চিত করতে পারবে, দিনের সেটাই ছিল কৌতূহল। ২১ রানে ম্যাকব্রাইনকে এলবিডব্লিউ করে সেই পথের ভালো শুরু এনে দেন তাইজুল ইসলাম। গতকাল টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ডে সাকিব আল হাসানকে ছাড়িয়ে যাওয়া এই স্পিনারের এটি ২৫০তম উইকেট।
সপ্তম উইকেটের পতনের ক্যাম্ফারের সঙ্গী হন জর্ডান নেইল। তাঁদের জুটিও জমে গিয়েছিল, তবে তা ভাঙতে খুব বেশি সময় লাগেনি বাংলাদেশের। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে বোল্ড হন ৩০ রান করা নেইল।
আইরিশদের আট উইকেট চলে যাওয়ার পর প্রথম সেশনেই ম্যাচটা শেষ হয়ে যাবে কি না, এমন অনুমানই তখন স্বাভাবিক। এ জন্য আম্পায়াররা প্রথম সেশনের দৈর্ঘ্য ২০ মিনিট বাড়িয়েও দেন। কিন্তু ওইটুকু সময়ে আর কোনো উইকেট হারায়নি সফরকারীরা। এমনকি লাঞ্চ বিরতির পর এসেও উইকেটে বেশ জমে যান ক্যাম্ফার-হোয়ে।
পেস, স্পিন, আক্রমণাত্মক কিংবা রক্ষণাত্মক ফিল্ডিং— কোনো কিছুতেই জুটি ভাঙা যাচ্ছিল না। নাজমুল হোসেনদের মধ্যে তখন হয়তো ড্রর শঙ্কাও উঁকি দিচ্ছিল। আর যা-ই হোক, এমন ম্যাচে ড্র মানে প্রায় হারই।
খেলতে খেলতে হোয়ে-ক্যাম্ফারের জুটি পেরিয়ে যায় দেড় শ বলের মাইলফলকও। ফিল্ডারদের শরীরী ভাষায় ফুটে ওঠে হতাশার ছাপও। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ আনন্দে মেতে ওঠার মুহূর্ত পায় ক্যাম্ফার-হোয়ে জুটির ১৯১তম বলে। বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদের বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন হোয়ে। ১০৪ বলের ইনিংসে ৩৪ রান করেন দশ নম্বরে নামা এই ব্যাটসম্যান।
তাঁকে ফেরানোর পর জয়ের জন্য বাংলাদেশকে তেমন অপেক্ষাই করতে হয়নি। এগারো নম্বর ব্যাটসম্যান হ্যামফ্রিস প্রথম বলেই বোল্ড। বাংলাদেশ মেতে ওঠে জয়ের উল্লাসে। একপ্রান্তে ২৫৯ বলের ইনিংসে ৭১ রানে অপরাজিত থাকেন ক্যাম্ফার। আইরিশদের ১২ টেস্টের ইতিহাসে এটিই কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ বল খেলার রেকর্ড। মিরপুরে চতুর্থ ইনিংসেও এই প্রথম কোনো ব্যাটসম্যান খেলেছেন আড়াই শর বেশি বল।
নিশ্চিত জয়ের দিকে হাঁটতে থাকা বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত তা পেয়েছে ঠিকই। কিন্তু তাঁর আগে কিছুটা রোমাঞ্চ তৈরি করে গেছেন ক্যাম্ফার। আর সে জন্যই ম্যাচশেষে তিনি পেলেন মুশফিক, লিটন দাসদের অভিনন্দন।