উন্নত মানের চায়ের কথা মনে পড়তেই যেকটি জেলার নাম চোখের সামনে ভেসে ওঠে, তারমধ্যে হবিগঞ্জ অন্যতম। এ জেলার উত্তরে সুনামগঞ্জ ও সিলেট, পূর্বে মৌলভীবাজার, দক্ষিণে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য এবং পশ্চিমে কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা।  ৯টি উপজেলা নিয়ে গঠিত হবিগঞ্জ জেলার এক পাশে হাওর। অন্যপাশে পাহার। এখানে চারটি সংসদীয় আসন রয়েছে।

ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থীদের পদচারণায় মুখর হবিগঞ্জের সবকটি সংসদীয় আসন। আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা। বিএনপি থেকে তিনটি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

‘বেগম খালেদা জিয়ার হার্ট ও চেস্টে ইনফেকশন হয়েছে’

রাতে হাসপাতালে ভর্তি হলেন খালেদা জিয়া

এর মধ্যে হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা.

সাখাওয়াত হাসান জীবন, হবিগঞ্জ-৩ (সদর, লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জ) আসনে দলটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ ও হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সৈয়দ মো. ফয়সাল দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। ফাঁকা রাখা হয়েছে হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ ও বাহুবল) আসনটি। গুঞ্জন রয়েছে, এ আসনে ড. রেজা কিবরিয়া বিএনপির হয়ে লড়তে পারেন।

জামায়াত থেকে চার আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হয়েছে। তারা হলেন- হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে দলটির সিলেট মহানগরের সেক্রেটারি মো. শাহজাহান আলী, হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি শেখ জিল্লুর রহমান আযমী, হবিগঞ্জ-৩ (সদর-লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জ) আসনে হবিগঞ্জ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ কাজী মহসিন আহমদ ও হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে হবিগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির কাজী মাওলানা মুখলিছুর রহমান। একইভাবে গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা মাঠে রয়েছেন।

প্রচারণা জমে উঠেছে। প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন গণসংযোগে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময়, স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সভা-সমাবেশ এবং নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণে। শহর থেকে গ্রাম, শিল্পাঞ্চল থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সর্বত্রই নির্বাচনী প্রচারের ছোঁয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শহর ও গ্রামে টানানো হয়েছে রঙিন ফেস্টুন, পোস্টার ও চোখ ধাঁধানো ব্যানার। ফেস্টুনের উজ্জ্বল রঙ আর ব্যানারের দৃষ্টিনন্দন ডিজাইন ভোটারদের নজর কাড়ছে। 

এই জেলার চারটি আসনে সবচেয়ে বেশি তৎপর বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। বিএনপির টার্গেট সব আসন নিজেদের দখলে নেওয়া। আর ন্যূনতম ছাড় দিতে নারাজ জামায়াত। তারাও আসনগুলোতে জয়ী হতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এই দুই দলের মধ্যে নির্বাচনে লড়াইয়ের সম্ভাবনা ক্রমেই দৃশ্যমান হচ্ছে। 

ভোটাররা মনে করেন, চারটি আসনে বিএনপি প্রার্থীদের সঙ্গে লড়াই হবে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীদের। এখানে প্রতিটি আসনে বিএনপির অবস্থান শক্তিশালী।  তবে জাতীয় পার্টি অংশগ্রহণ করলে ভোটের হিসাব-নিকাশে পরিবর্তন আসতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) প্রবাসী অধ্যুষিত আসন। নির্বাচন এলেই বিভিন্ন দেশ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দেশে আসেন। নিজ নিজ গ্রাম, তাদের নিজস্ব বলয়, পঞ্চায়েত নিয়ে বৈঠক করেন। মনোনয়ন না পেলে আবারো ফিরে যান প্রবাসে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। নির্বাচনের আওয়াজ উঠতেই দেশে আসতে শুরু করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। 

১৯৮৪ সালে হবিগঞ্জ-১ নির্বাচনী এলাকা গঠিত হয়। ওই বছর বৃহত্তর সিলেট জেলাকে বিভক্ত করে সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলা গঠন করা হয়। জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠার পর ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে হবিগঞ্জ-১ আসনে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ইসমত আহমেদ চৌধুরী নির্বাচিত হন। 

১৯৮৮ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের আব্দুল মোছাব্বির ও ১৯৯১ সালে জাতীয় পার্টির খলিলুর রহমান চৌধুরী জয়ী হন। এরপর ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির শেখ সুজাত মিয়া জয় পান। ১৯৯৬ সালের জুন, ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দেওয়ান ফরিদ গাজী এই আসনে নির্বাচিত হন। ২০১০ সালে দেওয়ান ফরিদ গাজীর মৃত্যু হলে ২০১১ সালের উপ-নির্বাচনে বিএনপির শেখ সুজাত মিয়া জয়ী হন। 

২০১৪ সালে জাতীয় পার্টির (এরশাদ) মোহাম্মদ আব্দুল মুনিম চৌধুরী, ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের গাজী মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

হবিগঞ্জের চারটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আলোচনা শুরু হয় দেশজুড়ে। দিন অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই আলোচনা আরো জোরালো হচ্ছে।

স্থানীয় ভোটাররা বলছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কিছু প্রবাসী নেতা নির্বাচনের সময় দেশে আসেন। তারা প্রচার-প্রচারণা চালান। প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন। মাঠে সরব হয়ে ওঠেন। দল থেকে মনোনয়ন না পেলে তারা ফের বিদেশে চলে যান। এরপর পরবর্তী নির্বাচনের আগে পর্যন্ত তাদের তেমন কোনো কার্যক্রম দেখা যায় না।

এদিকে, জামায়াতে ইসলামী এই আসনে দলটির সিলেট মহানগরের সেক্রেটারি শাহজাহান আলীকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত এ আসনে বিএনপি প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়নি। এখানে বিএনপির রয়েছে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী। এর মধ্যে আছেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য (যুক্তরাজ্য প্রবাসী) আলহাজ শেখ সুজাত মিয়া। তিনি এই আসনের হেভিওয়েট প্রার্থী। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে উপ-নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে চমক সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। বিষয়টি তখন সারাদেশে তুমুল আলোচনার জন্ম দেয়।

সুজাত মিয়াকে টপকে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিএনপির সভাপতি শাহ মোজাম্মেল আলী নান্টু এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুখলেছুর রহমান মুখলিস। এছাড়া দলে নিজের বলয় তৈরি করে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন সাবেক পৌর মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরী।

লন্ডন থেকে শেখ সুজাত মিয়া ও শিকাগো থেকে শাহ মোজাম্মেল আলী নান্টু দেশে এসেছেন। ৫ আগস্টের পরই দেশে এসেছিলেন মুখলেছুর রহমান মুখলিস। তারা দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার পাশাপাশি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন, গণসংযোগ করছেন।

এছাড়া গুঞ্জন রয়েছে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়াও প্রার্থী হতে পারেন। তবে, তিনি কোন দল থেকে নির্বাচন করবেন তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন জীবনও প্রার্থী।

বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া বলেন, “আমি দীর্ঘদিন ধরে নবীগঞ্জ-বাহুবলের মানুষের সঙ্গে কাজ করছি। দলমত সবার সঙ্গে আমার একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। এখানে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে। দলের ক্রান্তিকালে আমি কর্মীদের পাশে থেকে কাজ করেছি। তাছাড়া ২০১১ সালের উপ-নির্বাচনে এ আসনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হই। তাই দল যদি আমাকে মূল্যায়ন করে. ইনশাআল্লাহ তারেক রহমানকে এ আসন উপহার দেব।”

নবীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ছাবির আহমদ চৌধুরী বলেন, “আমি নবীগঞ্জ পৌরসভার দুইবারের সাবেক মেয়র। তিনবার প্যানেল মেয়র ছিলাম। সে হিসেবে জনগণের সঙ্গে আমার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। আমি বিগত দুটি নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েছিলাম। এবারও চেয়েছি। আশা করি দল আমাকে বিবেচনা করবে।”

শিকাগো বিএনপির সভাপতি শাহ মোজাম্মেল আলী নান্টু বলেন, “যদি দল আমাকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে আমি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছি। আমি জনগণের সেবা করতে চাই। তাই জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।”

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুখলেছুর রহমান মুখলিস বলেন, “আমি আগামী দিনে বাহুবল-নবীগঞ্জ আসনে ধানের শীষের কান্ডারি। বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে নেতাকর্মীদের পাশে থেকেছি। আন্দোলন করতে গিয়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের রোষানলে পড়ে আমাকে দেশ ছাড়তে হয়। লন্ডনে অবস্থান করেও আমি এলাকায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছি। আমি বিশ্বাস করি, মনোনয়ন দিলে আমি আসনটি দলকে উপহার দিতে পারব।” 

এ বিষয়ে জানতে ড. রেজা কিবরিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা  করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী শাহজাহান আলী বলেন, “দল দুই বছর আগেই আমার মনোনয়ন নিশ্চিত করেছে। আমি দীর্ঘদিন ধরে জনগণের সমস্যা লাঘবে কাজ করছি। দলমত নির্বিশেষে সবার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করছি। সুযোগ পেলে জনগণের খেদমতে কাজ করতে চাই। আমার বিশ্বাস জনগণ আমাকে মূল্যায়ন করবে।”

গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন জীবন বলেন, “অধিকাংশ নেতাকর্মী চাচ্ছেন, যেন কোনো জোটে না গিয়ে একক নির্বাচন করি। এতে যদি আমরা বিরোধী দলও হতে পারি, তাও ভালো।”

হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনটি জেলার সবচেয়ে ভাটি এলাকা। ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৩৪ জন ভোটারের মধ্যে এ আসনে হিন্দু ভোটার রয়েছেন প্রায় এক লাখ। জয়-পরাজয় মূলত নির্ভর করে তাদের ভোটের ওপরই। ফলে বিগত নির্বাচনে আসনটি আওয়ামী লীগের দখলেই ছিল।

১৯৮৪ সালে জেলা ঘোষণার পর থেকে এই আসনে বিএনপি একবার ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী দুইবার জয়ী হয়েছেন। বাকি সব নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।

বিগত ১৬ বছরের স্বৈরশাসনের কারণে এবার নির্বাচনে ভোটের মাঠ থেকে হারিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ। এ সুযোগে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে বিএনপি। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন শক্ত অবস্থান নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ফলে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন নেতাকর্মীরা। 

ইউনিয়ন, ওয়ার্ড, গ্রাম সর্বত্রই নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য এসেছে। প্রায় প্রতিদিনই চলছে সভা-সমাবেশ, ৩১ দফা বাস্তবায়নের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করছেন তারা। অপরদিকে আশা ছাড়ছে না জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও খেলাফত মজলিস।

হবিগঞ্জ-২ আসন থেকে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী তৎকালীন মন্ত্রী সিরাজুল হোসেন খান, ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগ থেকে শরিফ উদ্দিন আহমেদ, ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি থেকে জাকারিয়া খান চৌধুরী ও ১৯৯৬ সালের জুনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে শরিফ উদ্দিন আহমেদ নির্বাচিত হন। তার মৃত্যুর পর ১৯৯৭ সালের উপ-নির্বাচনে এ আসনে সংসদ সদস্য হন আওয়ামী লীগ থেকে সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ থেকে নাজমুল হাসান জাহেদ, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে আব্দুল মজিদ খান এবং ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ থেকে ময়েজ উদ্দিন শরীফ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বিএনপি প্রার্থী ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন পেশায় চিকিৎসক। ২০০৬ সালে বিএনপিতে যোগ দিয়েই তিনি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পান। ২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। 

দীর্ঘদিন তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদে দায়িত্ব পালন করছেন। চিকিৎসক হিসেবেও তার যথেষ্ট সুখ্যাতি রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, সভা-সমাবেশ করে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন। এলাকার রোগীদের ঢাকায় চিকিৎসা করাতেও ভূমিকা রাখেন তিনি।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বিরামহীনভাবে সভা-সমাবেশ, বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচির লিফলেট বিতরণ, শীতবস্ত্র বিতরণ ও গণসংযোগ করে চলেছেন।

অপরদিকে ১৭ বছর মাঠের রাজনীতিতে অনেকটা অনুপস্থিত জামায়াত এখন অনেকটা নির্বিঘ্নে দল গোছাচ্ছে। তারা উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড কমিটি নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। এ আসনে জামায়াত প্রার্থী হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি শেখ জিল্লুর রহমান আযমী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ এলাকায় ‘বড় হুজুর’ হিসেবে পরিচিত। হিন্দু, মুসলিম সব ধর্মের মানুষই তার ভক্ত। ধর্মীয় শিক্ষক হিসেবেও তার যথেষ্ট সুখ্যাতি রয়েছে। তাই তাকে পুঁজি করেই এগিয়ে যেতে চায় দলটি।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন বলেন, “ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে একটি চ্যালেঞ্জের নির্বাচন। মানুষ ১৬ বছর নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেনি। কাজেই আগামী নির্বাচনে জনগণের ভালোবাসা ছাড়া জয়ী হওয়া সম্ভব না। আমি ১৮ বছর ধরে মাঠে ছিলাম, আছি এবং থাকব। দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। আমি তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।”

জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান আযমী বলেন, “বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ১২ বছর আগে জামায়াতে ইসলামীর দুইজন ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১২ বছরে আমাদের দলীয় কার্যক্রম শতগুণ বেড়েছে। সার্বিক মূল্যায়নে জনপ্রিয়তার দিক থেকে জামায়াতে ইসলামী এগিয়ে আছে। ইনশাআল্লাহ এ আসনে আমরা বিপুল ভোটে নির্বাচিত হব।”

খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ (বড় হুজুর) বলেন, “খেলাফত মজলিস কাউকে আগে থেকে মনোনয়ন দেয় না। দলের শুরা কমিটি যাকে মনোনয়ন দেন তিনি নির্বাচন করবেন। শুরা কমিটি যদি আমাকে মনোনয়ন দেন তাহলে আমি নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুত আছি। আশা করি, জনগণ খেলাফত মজলিসকে বিজয়ী করবে।”

হবিগঞ্জ-৩ (শায়েস্তাগঞ্জ-হবিগঞ্জ সদর- লাখাই) আসনেও চলছে নির্বাচনি ডামাডোল। সদর আসন হওয়ায় জেলার গুরুত্বপূর্ণ আসন এটি। এখান থেকেই নিয়ন্ত্রণ হয় পুরো জেলা। এর ওপরই নির্ভর করে জেলার রাজনীতি। বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে টানা চারবার এ আসনটি দখলে রেখেছিল আওয়ামী লীগ। 

এখানে ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ জি কে গউছ। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, ২০১৮ সালের নির্বাচনে জি কে গউছকে প্রচারণা পর্যন্ত চালাতে দেয়নি আওয়ামী লীগ। একের পর এক হামলা চালানো হয়েছে। মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। বর্তমানে এ আসনে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন আলহাজ জি কে গউছ। দীর্ঘদিন ধরেই মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় থেকে নিজের অবস্থান গড়ে তুলেছেন এ নেতা। হবিগঞ্জ পৌরসভায় টানা তিনবার মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। এমনকি কারাগারে বন্দি থেকেও একবার বিজয়ী হয়েছেন।

জি কে গউছ গত বছর থেকেই নির্বাচনী কার্যক্রমে নামেন। বিভিন্ন স্থানে শীতবস্ত্র বিতরণ, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, ক্রীড়াসামগ্রী, ঢেউটিন, খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন। সভা-সমাবেশ, মতবিনিময় করছেন। এলাকায় এলাকায় কেন্দ্রভিত্তিক নির্বাচনি কমিটিও গঠন করেছেন।

এ আসনে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ কাজী মহসিন আহমদকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। গণঅধিকার পরিষদ দলটির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট চৌধুরী আশরাফুল বারী নোমানকে মনোনয়ন দিয়েছে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মাহবুবুর রহমান চৌধুরী হেলাল ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আলহাজ মহিব উদ্দিন আহমদ সোহেল ভোট চেয়ে বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ এবং লিফলেট বিতরণ করছেন।

স্থানীয়রা জানান, হবিগঞ্জ-৩ আসনে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছয়বার, জাতীয় পার্টির তিনবার, বিএনপির দুবার ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপের প্রার্থী একবার নির্বাচিত হয়েছেন।

১৯৮৬ সালে এ আসনে ন্যাপের চৌধুরী আব্দুল হাই, ১৯৮৮ ও ১৯৯১ সালে জাতীয় পার্টির আবু লেইছ মো. মুবিন চৌধুরী এবং ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট আতিক উল্লাহ জয়লাভ করেন। ১৯৯৬ সালের জুনের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির আবু লেইছ মো. মুবিন চৌধুরী জয় পান। ২০০১ সালে বিএনপিতে যোগ দিয়ে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের শাহ এএমএস কিবরিয়ার কাছে হেরে যান মুবিন চৌধুরী।

২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন কিবরিয়া। একই বছরের উপ-নির্বাচনে বিএনপি থেকে জয়ী হন মুবিন চৌধুরী। এরপর ২০০৮ সাল থেকে এই আসন দখলে রাখেন আওয়ামী লীগের আবু জাহির। ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি।

বিএনপি প্রার্থী আলহাজ্ব জি কে গউছ বলেন, “২০০৮ সালে একটি ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচন ছিল। ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়, ২০১৮ সালে রাতের ভোট এবং ২০২৪ সালে হয়েছে আমি আর ডামির নির্বাচন। ২০১৮ সালে দলীয় সিদ্ধান্তে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। এক ঘণ্টায় আমি পেয়েছিলাম ৭০ হাজার ভোট।”

তিনি বলেন, “কয়েক দফায় ১ হাজার ৫১৭ দিন আমি কারাগারে ছিলাম। ছাত্রদল ও যুবদলের সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। টানা তিনবার হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। ২০১৮ সালের নভেম্বরে মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। প্রত্যেক নেতাকর্মীরই আকাঙক্ষা থাকে। আমারও আছে। দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। আমি তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। মাঠে আমার পক্ষে গণজোয়ার তৈরি হয়েছে।”

হবিগঞ্জ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি কাজী মহসিন আহমেদ বলেন, “নির্বাচন সামনে রেখে আমরা সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। নির্বাচনী প্রচারণা অব্যাহত আছে।”

হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট ও মাধবপুর) আসনেও নির্বাচনের হাওয়া বইছে। বিএনপি, জামায়াত ও ইসলামি দলগুলো মাঠে রয়েছে পুরোদমে। নির্বাচনকে ঘিরে দলগুলো শীতবস্ত্র বিতরণ, বিভিন্ন দিবস পালনসহ সভা-সমাবেশ করছে। নির্বাচনী কার্যক্রমও চলছে পুরোদমে।

চা বাগান অধ্যুষিত চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলার ভোট বরাবরই নৌকার পক্ষে যায়। তবে, এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন থাকায় চা শ্রমিক ও সনাতন ভোটাররা কোনদিকে ভোট দিবেন এটাই দেখার বিষয়। তাদের ৪৫ হাজারের বেশি ভোটের ওপর নির্ভর করে এ আসনের জয়-পরাজয়।

১৯৮৬ সাল থেকে এ আসনে একবার বিএনপি, দুইবার জাতীয় পার্টি ও একবার স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হন। বাকি সবগুলো নির্বাচনে জয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত হবিগঞ্জ-৪ আসন। এ আসনে মোট ভোটার ৫ লাখ ১০ হাজার। এর মধ্যে চুনারুঘাট উপজেলায় ২ লাখ ৫৭ হাজার এবং মাধবপুর উপজেলায় ২ লাখ ৫৩ হাজার ভোটার আছেন।

১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে এই আসনে জাতীয় পার্টির সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার এবং ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের এনামুল হক মোস্তফা শহীদ জয়লাভ করেন। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সল জয়ী হলেও ১৯৯৬ সালের জুন আওয়ামী লীগের এনামুল হক মোস্তফা শহীদ জয় পান। ২০০১ ও ২০০৮ সালেও আওয়ামী লীগের এনামুল হক মোস্তফা শহীদ এই আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। এরপর ২০১৪ ও ২০১৮ সালে এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মাহবুব আলী নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

নির্বাচনকে ঘিরে এই আসনে মাঠে আছেন বিএনপি প্রার্থী সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সল ও জামায়াত ইসলামীর প্রার্থী জেলা জামায়াতের আমির কাজী মাওলানা মুখলিছুর রহমান। জাতীয় পার্টির কোনো প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণা নেই। খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী ঘোষণা করেছে।

নির্বাচনী পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছেন সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সল। তিনি নির্বাচনী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পরিবর্তিত পরিস্থিতির পর থেকেই চুনারুঘাট ও মাধবপুরে মাঠ গোছানোর কাজ শুরু করেছিল। তারা বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে শুরু করে ইউনিয়ন ও উপজেলা এবং পৌর কমিটি গঠনের কাজ শেষ করেছে। জেলা আমির কাজী মাওলানা মোখলিছুর রহমান নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রচারণা করছেন।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব অধ্যাপক আহমদ আব্দুল কাদের এ আসন থেকে নির্বাচন করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে জোটবদ্ধ হয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তিনি এ আসন থেকে অংশ নেন। সেবার মাত্র এক ঘণ্টায় ৪৫ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছিলেন তিনি। এছাড়া ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরাও মাঠে রয়েছেন।

বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সল বলেন, “আমিনুল ইসলাম ও শাম্মী আক্তারের দলীয় আনুগত্য বিরল দৃষ্টান্ত।” তিনি বলেন, “জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা মুখলিছুর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বী থাকবেন, আমরা সহনশীলতার সঙ্গে নির্বাচন করব। কোনো প্রতিহিংসা নয়, গণতন্ত্র ও ন্যায়ের পক্ষে কাজ করব।” 

তিনি বলেন, “দল আমাকে মূল্যায়ন করেছে। আমি কৃতজ্ঞ। মাঠে প্রচারণা চালাচ্ছি। বিএনপির পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।”

জেলা জামায়াতের আমির কাজী মাওলানা মুখলিছুর রহমান বলেন, “বিভিন্ন ইউনিটের কমিটিগুলো করা হচ্ছে। নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে মাঠে কাজ করে যাচ্ছি। চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলা ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন, চা বাগান অধ্যুষিত এলাকা। আমরা যদি সুযোগ পাই, তাহলে এখানে মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনার চেষ্টা করবো। মালিকপক্ষ যেন ন্যায্য মুনাফা পায় এবং শ্রমিকরাও যেন তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক পান- সেই চেষ্টা থাকবে।”

খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় শ্রমবিষয়ক সম্পাদক প্রভাষক আব্দুল করিম বলেন, “আমাদের প্রার্থী আহম্মদ আব্দুল কাদের মাঠে রয়েছেন। আগামী নির্বাচনে তিনিই আমাদের প্রার্থী। নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে কিংবা ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে জোটবদ্ধ হলে আমরা এ আসন চাইব।”

ঢাকা/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ চ ন র ঘ ট ও ম ধবপ র ন ত কর ম দ র ন য় ইসল ম র প র র থ ১৯৯৬ স ল র জ ন ম ধবপ র উপজ ল ন র ব চ ত হন ন র ব চ ত হয় ল ল র রহম ন ২০২৪ স ল র ব এনপ র স ২০০৮ স ল ২০১৮ স ল ১৯৯১ স ল র পর থ ক র জন ত ক আম র ক জ ন আওয় ম গণস য গ আসন থ ক অবস থ ন সরক র র এই আসন জনগণ র ক দল র প রব স ন র জন র আম র দল র স ম ল আল ত নব র হয় ছ ন ব হ বল ক বর য় এল ক য় উদ দ ন য গ কর র র জন ক জ কর ই আসন এ আসন দলট র একব র ব তরণ ন আহম আহম দ আসন র করছ ন আলহ জ

এছাড়াও পড়ুন:

বাইসাইকেল কিকে রোনালদোর অবিশ্বাস্য গোল

ফুটবলে বাইসাইকেল কিকে গোল করা নৈমিত্তিক কোনো ঘটনা নয়। এই দৃশ্য তাই নিয়মিত দেখাও যায় না। কিছু দিন বিরতি দিয়েই এই গোল করে কেউ কেউ আলোচনায় আসেন। কদিন আগে যেমন নেপালের বিপক্ষে বাইসাইকেল কিকে গোল করে আলোচনায় এসেছিলেন বাংলাদেশের হামজা চৌধুরী।

কিন্তু অন্যদের জন্য বাইসাইকেল গোল বিরল হলেও ৪০ পেরোনো এক ফুটবলারের জন্য এটি মোটেও কঠিন কিছু নয়। সেই ফুটবলারের নাম যে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো সেটি বোধহয় আলাদা করে বললেও হয়।

গতকাল রাতে আরও একবার সবাইকে বিস্মিত করে বাইসাইকেল কিকে গোল করেছেন পর্তুগিজ মহাতারকা। যে বয়সে ফুটবল ছেড়ে বেশির ভাগ খেলোয়াড় অবসর–যাপন করেন, রোনালদো সেই বয়সে শরীরকে শূন্যে তুলে পিঠ মাটির দিকে রেখে আকস্মিক লাফিয়ে কাচির ফলার মতো পা বাড়িয়ে শট নিয়ে গোল করছেন। অবিশ্বাস্যই বটে!

আরও পড়ুনপর্তুগালের হয়ে রেকর্ড ১৭,৯২৬ মিনিট মাঠে ছিলেন রোনালদো, মেসি কত২০ নভেম্বর ২০২৫

সৌদি প্রো লিগে আল খালেজের বিপক্ষে ম্যাচে দেখা গেছে রোনালদোর বাইসাইকেল কিকে গোল করার এই দৃশ্য। ম্যাচের যোগ করা সময়ের খেলা চলছিল তখন। ৩–১ গোলে এগিয়ে থাকা আল নাসরের জয় কেবলই সময়ের ব্যাপার। এমন সময় ম্যাচের ৯৬ মিনিটে আক্রমণে ওঠে আল নাসর। দলীয় আক্রমণে ডান প্রান্তে বক্সের বাইরে বল পান বদলিতে নামা নাওয়াফ বাওশাল।

রোনালদোর গোল উদ্‌যাপন

সম্পর্কিত নিবন্ধ