পঞ্চবটিতে পাইপলাইন ফেটে বন্ধ গ্যাস সরবরাহ, চরম ভোগান্তি
Published: 23rd, November 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়নের শাসনগাঁও এলাকায় পঞ্চবটী-মুক্তারপুর উড়াল সড়কের পাইলিংয়ের সময় আবারও তিতাস গ্যাসের প্রধান পাইপলাইন ফেটে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ১২ ইঞ্চি ব্যাসের এ পাইপলাইন ফেটে গেলে এলাকায় শোঁ-শোঁ শব্দে গ্যাস বের হতে থাকে এবং মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার পরপরই তিতাস কর্তৃপক্ষ সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল অঞ্চল থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। আজ রোববার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১টা পর্যন্ত ১৯ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও পাইপলাইনটি মেরামত করা সম্ভব হয়নি।
এতে নারায়ণগঞ্জের বেশির ভাগ আবাসিক এলাকায় গ্যাস সরবরাহ সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজারো গ্রাহক। গ্যাসনির্ভর শিল্পকারখানার উৎপাদনেও ব্যাপক ব্যাঘাত ঘটছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাইপলাইন ফাটার পর মাটি ফেটে উঠে শব্দ হওয়ায় আশপাশের মানুষ দৌড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যান। পরে তিতাসের কর্মীরা এসে সরবরাহ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে কাজ শুরু করেন।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলের ব্যবস্থাপক মশিউর রহমান বলেন, “২০ থেকে ২৫ ফুট গভীরে থাকা পাইপলাইনটি মাটি খুঁড়তে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গভীরে যেতে গেলে বারবার মাটি ভেঙে পড়ছে।
নিরাপত্তার জন্য চারদিকে লোহার পাত বসানো হচ্ছে। সব প্রস্তুতি শেষ হলে মেরামত শুরু হবে। লাইন ঠিক করতে আরও পাঁচ–ছয় ঘণ্টা লাগতে পারে।”
অন্যদিকে তিতাসের আঞ্চলিক বিপণন বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশীদ জানান, “শনিবার থেকে মেরামতের কাজে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছিল। সকালে হালকা চাপ দিয়ে কিছু এলাকায় সরবরাহ অব্যাহত রাখা হয়। তবে মূল মেরামতকাজ শুরু হলে আবারও পুরোপুরি সরবরাহ বন্ধ রাখতে হবে।”
উড়ালসড়ক প্রকল্পের পরিচালক মো.
পঞ্চবটী মুক্তারপুর উড়ালসড়ক প্রকল্প শুরু হওয়ার পর ফতুল্লা ও আশপাশ এলাকায় অন্তত ২৫ বার তিতাসের প্রধান পাইপলাইন ফাটার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এসব ঘটনায় কয়েকবার অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি তৈরি হওয়ার পাশাপাশি প্রায়ই গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। একই সঙ্গে শিল্পকারখানার উৎপাদনেও ধাক্কা লাগছে।
ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) এম এ করিম বলেন, “পঞ্চবটি বিসিক রোডে গ্যাসের লাইন বিস্ফোরণের কারণে জরুরি ভিত্তিতে মেরামতের কাজ চলছে।
সকাল ১১টা থেকে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। নির্মাণকাজ শেষ হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে। তিতাসের কর্মকর্তাদের বরাতে তিনি বলেন মেরামতের কাজ শেষ হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।”
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ম র মত র বন ধ র এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
ভূমিকম্পে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর ফ্লাইওভারে ৭৭ নম্বর পিলারের ব্লকে ফাটলের চিহ্ন
শুক্রবার সকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুভূত হওয়া ভূমিকম্পে পঞ্চপটিক টু মুক্তারপুর নির্মাণাধীন দ্বিতল সড়কের ৭৭ নম্বর পিলারের উপরের অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে।
বিষয়টি জানাজানি হতেই নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার কাশিপুর মুন্সিবাড়ি এলাকার স্থানীয়দের মাঝে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসীরা জানান, ভূমিকম্পের আগে পিলারটি স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু ভূমিকম্পের পরপরই উপরের অংশে স্পষ্ট ফাটল দেখা দিয়েছে। তবে পিলারের নিচের অংশ একেবারেই অক্ষত।
এ বিষয়ে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে ফ্লাইওভারের কাজ করা কয়েকজন শ্রমিক জানান, ভূমিকম্পের আগ পর্যন্ত পিলারটিতে ফাটলের কোনো চিহ্ন ছিল না।
ফাটলটি কতটা ঝুঁকিপূর্ণ এবং দ্রুত মেরামতের প্রয়োজন আছে কি না—এ নিয়ে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর একনেক সভায় এ প্রকল্প অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ২৪২ কোটি ৭৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।
প্রকল্পটি জিওবি এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এদিকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া হওয়ায় প্রতিদিন হাজারো মানুষ এই সড়ক ও ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে যাতায়াত করেন। এমন অবস্থায় সাধারণ পথচারীদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখা গেছে।
এ বিষয়ে পঞ্চবটি- মুক্তারপুর ফ্লাইওভারের প্রকল্প কর্মকর্তা মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, ফ্লাইওভারে কোথাও ফাটল ধরেনি। ফ্লাইওভারের নিচে ব্লক গুলোর চলটি (আস্তরণ) উঠে গেছে। তারপরও আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো রায়হান কবির জানান, পিলারের ব্লকে ফাটল দেখা যাওয়ার বিষয় আমি সংশ্লিষ্টদের জানাচ্ছি এবং বিষয়টি যাচাই করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে যাতে কোন দুর্ঘটনা না ঘটে এবং সাধারণ মানুষের ঝুঁকি না থাকে।