গুমের দুই মামলায় শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী জেড আই খান পান্না
Published: 23rd, November 2025 GMT
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম-নির্যাতনের ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে দুই সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই নিয়োগ দেন। এই ট্রাইব্যুনালের অপর সদস্য হলেন বিচারক মো.
টাস্কফোর্স ফর ইন্টারোগেশন সেলে (টিএফআই সেল) গুম করে রাখার ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় শেখ হাসিনাসহ মোট ১৭ জন আসামি। এর মধ্যে ১০ জন গ্রেপ্তার আছেন। তাঁরা হলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে), লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই আসামিদের প্রথম সাতজন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হিসেবে এবং শেষের তিনজন র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁদের আজ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।
এ মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ সাত আসামি পলাতক।
আরও পড়ুন১৩ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছে২ ঘণ্টা আগেঅন্যদিকে, জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) গুম করে রাখার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেকটি মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন আসামি গ্রেপ্তার আছেন। তাঁরা হলেন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক তিনজন পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী। তাঁদেরও আজ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।
এ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ১০ আসামি পলাতক।
এই দুই মামলায় পলাতক শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে জেড আই খান পান্নাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনসেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে আনা উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা৩ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইনজ ব কর ন ল অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের রায় দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
তবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নয়, পরের নির্বাচন থেকে এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়কে অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে এই রায় দেন। খবর বাসসের।
আপিল বেঞ্চের অন্য ছয় বিচারপতি হলেন মো. আশফাকুল ইসলাম, জুবায়ের রহমান চৌধুরী, মো. রেজাউল হক, এস এম ইমদাদুল হক, এ কে এম আসাদুজ্জামান ও ফারাহ মাহবুব।
আজকের এই রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী পুনর্বহাল হয়েছে বলে জানান আইনজীবীরা।
বহুল আলোচিত এই আপিলে বিএনপির পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
অন্যদিকে, পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিকের পক্ষে আপিল শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী শরীফ ভূইয়া। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম. সলিম উল্লাহসহ তিন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন।
২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। এরপর ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক ও এক ব্যক্তি আবেদন করেন।
সেই রিভিউ আবেদন থেকে আপিল শুনানির জন্য গত ২৭ আগস্ট লিভ মঞ্জুর করে ২১ অক্টোবর আপিল শুনানির দিন ধার্য করেন। পরবর্তী ১০ দিন এই আপিল শুনানি শেষে রায়ের দিন ধার্য করেন সর্বোচ্চ আদালত।
ঢাকা/এসবি