কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহবুবুর রহমান নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে অ্যাফিডেভিট করে দল থেকে পদত্যাগ করেছেন।

মাহবুবুর রহমান ছয়সূতি ইউনিয়নের কান্দিগ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার পদত্যাগের ঘোষণা অ্যাফিডেভিট করেন তিনি। আজ রোববার সকাল থেকে তাঁর দল ছাড়ার খবরটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অভিনব কায়দায় দল ছাড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘অফিসে যাই, তালা। বাড়িতে গেলে উত্তর আসে—নাই। নেতা পাই না, তাই অ্যাফিডেভিট করে আওয়ামী লীগকে ছাড়তে হলো।’

পদত্যাগের কারণ হিসেবে মাহবুবুর অ্যাফিডেভিটে উল্লেখ করেন, বর্তমান ও অতীতে আওয়ামী লীগের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড তিনি আর সহ্য করতে পারছেন না। ২০১৪ সালে তিনি দলীয় পদটি গ্রহণ করেন। পদ থাকলেও কখনো তিনি দলে সক্রিয় ছিলেন না। পদত্যাগের পর থেকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাঁর কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই।

পরিবার সূত্র জানায়, ভিন্ন কৌশলে দল ছাড়ার পেছনে মাহবুবুরের মধ্যে লুকিয়ে আছে চাপা কষ্ট। আওয়ামী লীগ শাসনামলে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। তবে মামলাগুলো রাজনৈতিক নয়। পারিবারিক ও বাণিজ্যিক কারণে হওয়া মামলা। এ কারণে বছরের বড় একটি সময় তাঁকে আদালতে আসা–যাওয়া করতে হয়। তাঁর বিশ্বাস, দলীয় লোকজন মামলা না করলেও প্রতিটি মামলায় দলের কোনো না কোনো নেতার ইন্ধন রয়েছে। এ থেকেই তাঁর মনে হয়েছে, রাজনীতি আর নয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, দলীয় কার্যালয়ে কাউকে পাওয়া যায় না সত্য, তবে চাইলে যেকোনো প্রক্রিয়ায় দায়িত্বশীল নেতার হাতেই পদত্যাগপত্র দেওয়া যেত। তা না করে ভিন্ন কৌশল অবলম্বনের পেছনে তাঁর ভিন্ন মতলব থাকতে পারে। অ্যাফিডেভিট করে দল ছেড়ে তিনি দলকে ছোট করেছেন, স্বার্থপরতার পরিচয় দিয়েছেন।

এ বিষয়ে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এখনো পাঁচটা মামলা চলছে। আদালতে দৌড়াতে দৌড়াতে কাহিল। ভিন্ন মতলব নেই। শারীরিক অবস্থাও ভালো নয়। সামাজিকতা ছাড়া আর কারও সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে চাই না। রাজনীতিও না। আর আমি যে পদত্যাগ করলাম, নেতারা এলাকায় না থাকায় কথাটা সবাইকে বিশ্বাস করাতে অ্যাফিডেভিটে যাওয়া ছাড়া বিকল্প ছিল না বলেই যেতে হয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অ য ফ ড ভ ট কর ম হব ব র র পদত য গ দল ছ ড় আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

বসতঘরে একাই থাকতেন বৃদ্ধা, আগুনে পুড়ে মৃত্যু

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় নিজ বসতঘরে আগুনে পুড়ে জেওরা খাতুন (৮২) নামের এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে গোবিন্দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

জেওরা খাতুন গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত আ. রব চৌধুরীর স্ত্রী। এই দম্পতির দুই ছেলে ও এক মেয়ে। তাঁরা বিয়ে ও কাজের সুবাদে বাড়ির বাইরে থাকেন। গোবিন্দপুর গ্রামে একটি টিনের দোচালা ঘরে জেওরা খাতুন একাই থাকতেন।

জেওরা খাতুনের নাতি উপজেলার কালিকাপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আ. ছাত্তার বলেন, গতকাল রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে তাঁর দাদি ঘুমিয়ে পড়েন। রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে ওই ঘরে আগুন লেগে যায়। অল্প সময়ের মধ্যে আগুন ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় ওই বৃদ্ধা চিৎকার করে ঘর থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেও পারেননি। একপর্যায়ে তিনি আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। আগুনে মালামালসহ বসতঘরটিও পুড়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে।

ওই বৃদ্ধার বড় ছেলে মো. সোলেমান বলেন, ‘আগুনে পুইড়া আমার মা দুনিয়া থেকে এইভাবে চইলা যাইব, তা কোনো দিন চিন্তাও করি নাই। এহন আমি কারে মা ডাহুম।’
উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের একাধিক কর্মী জানান, তাঁরা ওই গ্রামে আগুন লাগার খবর পেয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কিন্তু পরে তাঁদের জানানো হয়, সেখানকার আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।

মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালেহ আহাম্মদ বলেন, তাঁরা বিষয়টি জেনেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা বা লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বসতঘরে একাই থাকতেন বৃদ্ধা, আগুনে পুড়ে মৃত্যু