ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আয়ারল্যান্ড—দুটি সিরিজেই প্রথম ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক লিটন দাস একই কথা বলেছেন। বাংলাদেশের টি–টোয়েন্টি অধিনায়ক চান, তাঁর খেলোয়াড়েরা কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হোক। উদ্দেশ্য, ফেব্রুয়ারির টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এমন পরিস্থিতিতে খেলার অভ্যাস তৈরি করা।

কিন্তু সেই প্রস্তুতির কঠিনতা এখন বাস্তবেই কঠিন চেহারা নিয়েছে। বাংলাদেশ বন্দী হয়ে গেছে হারের বৃত্তে। গত মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৩–০ ব্যবধানে সিরিজ হারের পর এবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি–টোয়েন্টিতেও হেরেছে লিটনের দল। ব্যবধান ৩৯ রানের হলেও ম্যাচে একবারও বাংলাদেশ জয়ের সম্ভাবনায় এগিয়ে থাকতে পারেনি।

চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে আইরিশদের ১৮১ রান তাড়ায় নেমে লিটনের দল ১৮ রানের মধ্যেই হারায় ৪ উইকেট। পাওয়ারপ্লেতে টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যানই ফিরেছেন ক্যাচ তুলে। পরে তাওহিদ হৃদয়ের অপরাজিত ৮৩ রানে ভর করে বাংলাদেশ হারের ব্যবধান কিছুটা কমাতে পেরেছে।

তবু বাংলাদেশ দলকে ঘিরে একটা প্রশ্ন থেকেই গেছে। এ বছরের শুরুর দিকে বাংলাদেশ টানা চারটা সিরিজ জিতেছিল। পরে এশিয়া কাপেও প্রায় ফাইনালের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল। এখন বিশ্বকাপের আগে এমন ফল কি বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশকে খারাপ সংকেতই দিচ্ছে?

বছরের শেষ সিরিজে হার দিয়ে শুরু হলো বাংলাদেশের.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

হংকংয়ের অগ্নিকাণ্ড ৮০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯৪

হংকং শহরে প্রায় ৮০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বিশাল আবাসিক ভবন কমপ্লেক্সে উদ্ধার অভিযান আজ শুক্রবার শেষ করার আশা করছে স্থানীয় দমকল কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছে, এ ঘটনায় কমপক্ষে ৯৪ জন মারা গেছেন। এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।

উত্তরাঞ্চলীয় তাই পো এলাকায় অবস্থিত ‘ওয়াং ফুক কোর্ট’ আবাসন কমপ্লেক্সে আগুন লাগার পর দমকল সদস্যরা আগুনের বড় অংশই নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছেন। ৮টি ভবন নিয়ে গড়া এ কমপ্লেক্সে ৪ হাজার ৬০০-এর বেশি মানুষ থাকতেন। ভবনগুলোতে সংস্কারকাজ চলছিল এবং পুরো কমপ্লেক্স বাঁশের মাচা ও সবুজ নিরাপত্তা জালে ঢাকা ছিল। ফলে গত বুধবার বিকেলের আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

পুলিশ বলেছে, জানালায় দাহ্য ফোম বোর্ডসহ ভবনগুলোতে অনিরাপদ নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এক নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের তিন কর্মকর্তাকে অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

দমকল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজ সকালেই তারা শেষবারের মতো অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

আমরা সাতটি ভবনের সব ইউনিটে ঢুকে খুঁজে দেখব, যেন নিশ্চিত হতে পারি, আর কেউ ভেতরে আটকে নেই।—ডেরেক চ্যান, হংকংয়ের দমকল বিভাগের উপপরিচালক

আজ সকালে দমকল বিভাগের উপপরিচালক ডেরেক চ্যান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সাতটি ভবনের সব ইউনিটে ঢুকে খুঁজে দেখব, যেন নিশ্চিত হতে পারি, আর কেউ ভেতরে আটকে নেই।’

গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে নিখোঁজ ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ২৭৯। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় এ সংখ্যা আর হালনাগাদ করা হয়নি। চ্যান বলেন, তাঁদের দপ্তরে সাহায্যের অনুরোধ জানিয়ে করা ২৫টি ফোনকল এখনো অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে সাম্প্রতিক তিনটি কলকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুনহংকংয়ে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু বেড়ে ৭৫, কেন এত দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ল১২ ঘণ্টা আগে

কমপ্লেক্সের বাসিন্দা জ্যাকি কওক বলেন, ‘আশা করি, তাঁরা (দমকলকর্মীরা) আরও জীবিত কাউকে খুঁজে পাবেন। তাঁরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। কেউই এমন ভয়াবহ বিপর্যয় চাইনি।’

বৃহস্পতিবার ভোরে নিখোঁজ ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ২৭৯। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় এ সংখ্যা আর হালনাগাদ করা হয়নি। গতকাল উৎকণ্ঠিত এক মা তাঁর মেয়ের স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানের ছবি হাতে নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে মেয়েকে খুঁজছিলেন। আটটি আশ্রয়কেন্দ্রে বর্তমানে ৯০০ জন রয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

দমকলকর্মীদের প্রচণ্ড তাপ, ঘন ধোঁয়া, ভেঙে পড়া মাচা ও ধ্বংসস্তূপ পেরিয়ে ভবনের ওপরের তলাগুলোতে আটকে পড়াদের কাছে পৌঁছাতে হয়েছে।

গতকাল উৎকণ্ঠিত এক মা তাঁর মেয়ের স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানের ছবি হাতে নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে মেয়েকে খুঁজছিলেন। আটটি আশ্রয়কেন্দ্রে বর্তমানে ৯০০ জন রয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

৫২ বছর বয়সী ওই নারী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার মেয়ে আর তার বাবাকে এখনো পাওয়া যায়নি। ভবনে আগুন নেভানোর মতো পানি ছিল না।’

আশা করি, তাঁরা (দমকলকর্মীরা) আরও জীবিত কাউকে খুঁজে পাবেন। তাঁরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। কেউই এমন ভয়াবহ বিপর্যয় চাইনি। —জ্যাকি কওক, আবাসন কমপ্লেক্সের বাসিন্দা

দমকল বিভাগের কর্মকর্তা চ্যান বলেন, বেশির ভাগ মৃতদেহ কমপ্লেক্সের দুটি ভবন থেকে পাওয়া গেছে। বিভিন্ন ভবন থেকে জীবিতদেরও উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তিনি আর বিস্তারিত জানাননি।

৮টি টাওয়ার নিয়ে গড়া এ আবাসন কমপ্লেক্সে ৪ হাজার ৬০০-এর বেশি মানুষ থাকতেন। ভবনগুলোতে সংস্কারকাজ চলছিল এবং পুরো কমপ্লেক্স বাঁশের মাচা ও সবুজ নিরাপত্তা জালে ঢাকা ছিল। ফলে গত বুধবার বিকেলের আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।ওয়াং ফুক কোর্ট আবাসন কমপ্লেক্সে আগের দিন লাগা ভয়াবহ আগুনের স্থানের কাছে হাঁটছেন এক ব্যক্তি। গতকাল বৃহস্পতিবারও সেখানে আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছিল। হংকং, চীন, ২৭ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ