শীতের সকালে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করা, হাত-মুখ ধোয়া অনেকের জন্যই অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে। এ সময় জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে গরম পানির চাহিদা। কেবল আরামের জন্য নয়, বরং ঠান্ডাজনিত অসুস্থতা এড়াতে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গিজার ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঠান্ডা পানিতে গোসল, বিশেষত শিশু ও বয়স্কদের জন্য শীতকালীন অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। গিজার গরম পানি সরবরাহ করে এ ঝুঁকি দূর করে। শীতকালীন জীবনকে আরও আরামদায়ক ও স্বাস্থ্যসম্মত করে তোলে।
দেশে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের গিজার বাজারে পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে কিছু ব্র্যান্ড বেশি জনপ্রিয় যেমন– সিঙ্গার, হ্যাভেলস, রিনাই, আরএফএল, এলজি এবং কেনস্টার। এসব ব্র্যান্ডের গিজার তাদের উন্নত প্রযুক্তি, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী সুবিধা এবং দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্সের জন্য বাজারে বেশ পরিচিত। গিজার কেনার সময় একটি ভালো ব্র্যান্ড নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সঠিক ব্র্যান্ড পণ্য দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার এবং ভালো সেবা নিশ্চিত করে।
রাজধানীর রামপুরা বাজারের আরএফএলের বিক্রয় প্রতিনিধি সুমন ভুঁইয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শীতের সময় গিজারের বিক্রি বেড়ে যায়। এ সময় বাজারে বিভিন্ন দাম ও মানের গিজার পাওয়া যায়। এসব গিজারে দুই বছর পর্যন্ত ওয়ারেন্টি সেবা থাকে।
দরদাম: বাজারে অনেক ভেরিয়েশন নিয়ে গিজারের দরদাম হয়ে থাকে। সাধারণত গিজারের দাম ৬ হাজার থেকে শুরু হয়ে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এ দামের মধ্যে গিজারের ক্ষমতা, ব্র্যান্ড এবং ফিচারের ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন মডেল পাওয়া যায়।
এ প্রসঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন গিজার বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাঝারি মডেলের মধ্যে সহজে ব্যবহারযোগ্য এবং কম দামে পাওয়া যায় সিঙ্গারের গিজার। অন্যদিকে, হ্যাভেলস এবং রিনাইয়ের গিজারগুলো বেশি শক্তিশালী। এগুলো উচ্চমূল্যের। এগুলোর পারফরম্যান্সও অত্যন্ত ভালো এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। বিদ্যুৎচালিত গিজার যেমন– ওয়ালটন ও সিঙ্গার, খরচ সাশ্রয়ী এবং সহজ ইনস্টলেশন সুবিধা নিয়ে আসে।
সতর্কতা: গিজার কেনার সময় কিছু বিষয় মনে রাখা উচিত। প্রথমত, পরিবারের সদস্য সংখ্যা এবং ব্যবহারের পরিমাণ অনুযায়ী গিজারের ধারণক্ষমতা (লিটার) নির্বাচন করা উচিত। একটি ছোট পরিবারের জন্য ৩০ থেকে ৫০ লিটার ধারণক্ষমতার গিজার উপযুক্ত হতে পারে। বড় পরিবারের জন্য ৬০ লিটার বা তার বেশি ক্ষমতার গিজার নির্বাচন করা উচিত। দ্বিতীয়ত, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী মডেল নির্বাচন করা অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক। তৃতীয়ত, বিক্রয়োত্তর সেবা ও পণ্যের গ্যারান্টি নিশ্চিত হওয়া উচিত; কারণ এটি দীর্ঘমেয়াদে পণ্যের স্থায়িত্ব এবং মেরামতের সুবিধা নিশ্চিত করে।
কোথায় পাওয়া যায়: অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্মে গিজার কেনার সুবিধা বেড়েছে। দারাজ, পিকাবু, বিডি স্টল, ইভ্যালি এবং আলি এক্সপ্রেসের মতো জনপ্রিয় সাইটগুলোয় আপনি সহজেই গিজারের বিভিন্ন মডেল এবং ব্র্যান্ডের তুলনা করতে পারেন। এ ছাড়া স্থানীয় ইলেকট্রনিক্স দোকান থেকেও আপনি সরাসরি দেখে, দরদাম করে গিজার কিনতে পারেন। v
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ধোনি কেন আইপিএল ছাড়তে পারছেন না: পেছনে হাজার কোটি টাকার খেলা
বয়স ৪৪, শরীরও আর আগের মতো চলছে না। তবু মহেন্দ্র সিং ধোনি আইপিএল ছাড়েননি। সর্বশেষ মৌসুমে খেলেছেন, শোনা যাচ্ছে, পরের মৌসুমেও খেলবেন। অথচ তাঁর মাঠের পারফরম্যান্স বলছে, সময় ফুরিয়েছে। তবু তিনি খেলে যাচ্ছেন কেন? ক্রিকেট ছাড়তে পারছেন না তাই? নাকি খ্যাতির মোহ? সত্যিটা এসবের চেয়েও বড়—ধোনি এখন শুধুই একজন ক্রিকেটার নন, তিনি একটি বিশাল অর্থনৈতিক ইকোসিস্টেমের মূল স্তম্ভ, যাঁর বিদায় মানে অনেক কিছুর ধস।
চলুন দেখা যাক, কীভাবে ধোনির একটুখানি মাঠে থাকা বদলে দেয় বিশাল অঙ্কের হিসাব।২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ব্র্যান্ড ভ্যালু ২০২৫ আইপিএল ছিল চেন্নাই সুপার কিংসের (সিএসকে) জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিটির ইতিহাসেই সবচেয়ে বাজে মৌসুম। পয়েন্ট তালিকায় একেবারে তলানিতে থেকে মৌসুম শেষ করেছে তারা। কিন্তু অবাক হওয়ার মতো ব্যাপার, এর কোনো প্রভাবই পড়েনি সিএসকের ব্র্যান্ড ভ্যালুতে; বরং সামান্য বেড়েছে!
হুলিহ্যান লোকির ‘আইপিএল ব্র্যান্ড ভ্যালুয়েশন স্টাডি ২০২৫’ প্রতিবেদন বলছে, ২০২৫ সালে সিএসকের ব্র্যান্ড ভ্যালু বেড়ে হয়েছে ২৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা ২০২৪ সালে ছিল ২৩ কোটি ১০ লাখ ডলার। যদিও আইপিএলের সবচেয়ে দামি ফ্র্যাঞ্চাইজির র্যাঙ্কিংয়ে চেন্নাই ১ নম্বর থেকে তিনে নেমে গেছে, কিন্তু সেটা পুরোপুরি মাঠের পারফরম্যান্সের কারণে নয়।
তুলনা করে দেখা যাক—রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) প্রথমবার আইপিএল জেতায় তাদের ব্র্যান্ড ভ্যালু দাঁড়িয়েছে ২৬ কোটি ৯০ লাখ ডলারে, উঠে এসেছে ১ নম্বরে। অথচ সিএসকে কিছু না করেই সেরা তিনে আছে শুধু একজনের জন্য—ঠিক ধরেছেন, এম এস ধোনি!
২০২৩ আইপিএলের একটি মুহূর্তই বলে দেয়, ধোনির উপস্থিতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ। লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে মাত্র ৩ বল খেলেছিলেন ধোনি, করেছিলেন ১২ রান। তাতেই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ভিউয়ারশিপ পৌঁছায় ১ কোটি ৭০ লাখে, যা ছিল সে মৌসুমের সর্বোচ্চ। এমনকি টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচের ১ কোটি ৬০ লাখ ভিউয়ারকেও ছাপিয়ে গিয়েছিল ধোনির সেই ৩ বল স্থায়ী ইনিংসটা!
টিএএম মিডিয়া রিসার্চ বলছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরও ধোনি দিনে গড়ে বিভিন্ন প্লাটফর্মে ১৪ ঘণ্টা স্ক্রিন টাইম ধরে রেখেছেন। ২০২৪ সালে তিনি ৪২টি ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন করেছেন, যা অমিতাভ বচ্চন (৪১) ও শাহরুখ খানের (৩৪) চেয়েও বেশি।