চীনা পণ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন করে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার প্রতিক্রিয়ায়, এবার মার্কিন পণ্যেও ১০ থেকে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে চীন।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এই পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে। খবর বিবিসির। 

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা কয়লা এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর ১৫ শতাংশ এবং অপরিশোধিত তেল, কৃষি যন্ত্রপাতি, পিকআপ ট্রাক এবং বড় ইঞ্জিনের গাড়ির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার ঘোষণা দিয়েছে চীন।

আরো পড়ুন:

মোদিকে হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের আমন্ত্রণ

কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর শুল্ক আরোপ স্থগিত করলেন ট্রাম্প

মার্কিন পণ্যে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়ে চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে।

বিবৃতি বলা হয়েছে, “যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা শুল্ক আরোপ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম লঙ্ঘন করে। এটি কেবল নিজস্ব সমস্যা সমাধানে অসহায় নয়, বরং চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাভাবিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে।”

বিবিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে চীনের সব ধরনের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করলেও, চীন কেবল নির্দিষ্ট ধরনের মার্কিন পণ্যে শুল্ক আরোপ করার ঘোষণা দিয়েছে। 

গত শনিবার কানাডা, মেক্সিকো এবং চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনা পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক এবং বাকি দুই দেশের পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করা হয়।

আজ মঙ্গলবার থেকে এটি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। তবে গতকাল সোমবার এক ঘোষণায় কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করেন ট্রাম্প। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেনবাম ট্রাম্পের সঙ্গে ‘সফল’ ফোনালাপের পর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন ট্রাম্প। 

তবে, চীনা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এমন প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নিল চীন।

এদিকে, হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সঙ্গে চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে কথা বলবেন। দুই পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হতে পারে বলে আগে থেকেই বলে আসছে বেইজিং।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ শ ল ক আর প শ ল ক আর প র

এছাড়াও পড়ুন:

খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী

কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।

কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।

একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’

কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।

এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ