জনপ্রিয় তুর্কি টেলিভিশন সিরিজ ‘কুরুলুস উসমান’-এ যুক্ত হয়েছেন তুরগুত আল্প বা তুরগুত বে চরিত্র রূপায়নকারী জেনজিস জোশকুন। তাকে কুরুলুস ওসমানের ষষ্ঠ সিজনের ১৯০তম পর্বে দেখা যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) প্রকাশিত কুরুলুস উসমানের ১৯০তম পর্বের দ্বিতীয় ট্রেইলারে দেখা গেছে জেনজিস জোশকুনকে। এরপর থেকে উচ্ছ্বাসে মেতেছেন বাংলাদেশি তুর্কি সিরিজপ্রেমীরা। বুধবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত মধ্যরাতে তুরস্কের টেলিভিশন চ্যানেল এটিভি’তে প্রচার হয় পর্বটি। বৃহস্পতিবার (১ মে) থেকে বাংলা সাবটাইটেল যুক্ত ১৯০তম পর্ব বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পাওয়া যাচ্ছে।

‘দিরিলিস আর্তুগ্রুল’ সিরিজে আর্তুগ্রুল গাজীর চরিত্রে অভিনয় করেন এনজিন আলতান। তার সহচর হিসেবে তুরগুগ বে চরিত্রে অভিনয় করেছেন জেনজিস জোশকুন। তখন থেকে জেনজিস জোশকুন বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।

আরো পড়ুন:

সিদ্দিককে লাঞ্ছিত, শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা: যা বললেন অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি

অভিনেতা সিদ্দিককে গণধোলাই দিয়ে থানায় সোপর্দ

দীর্ঘদিন ধরেই কুরুলুস উসমান সিরিজে জেনজিস জোশকুনের আগমনের অপেক্ষায় ছিলেন দর্শকরা। অবশেষে এ অপেক্ষার অবসান হলো। তার ফিরে আসা কুরুলুস উসমান সিরিয়ালকে আরো প্রাণবন্ত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্বজুড়ে বিশেষ করে বাংলাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে ‘দিরিলিস আর্তুগ্রুল’ ও ‘কুরুলুস উসমান’ সিরিজ। ‘দিরিলিস আর্তুগ্রুল’ সিরিজ বহু আগেই শেষ হয়েছে। বর্তমানে চলছে ‘কুরুলুস উসমান’ এর ১৯০তম পর্ব।

‘কুরুলুস উসমান’ উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা উসমান গাজী প্রথমের জীবন এবং তার সংগ্রাম নিয়ে নির্মিত। সিরিজটি ইতিহাস, রাজনীতি, সামরিক কৌশল এবং মুসলিম ঐতিহ্যের একটি চমৎকার মিশ্রণ উপস্থাপন করেছে, যা দর্শকদের মধ্যে গভীর আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে।

ঐতিহাসিক চরিত্র তুরগুত আল্প (জন্ম আনুমানিক ১২০০-মৃত্যু ১৩২৩/২৪) ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রথম দিকের গাজীদের একজন। তিনি তুর্কি ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এবং বিখ্যাত যোদ্ধা ছিলেন। তিনি ছিলেন আর্তুগ্রুল গাজীর আজীবন বন্ধু, রক্তের ভাই এবং ঘনিষ্ঠ আত্মবিশ্বাসী। সেইসঙ্গে তার সবচেয়ে বিশ্বস্ত অনুগামী ও সহায়ক একজন বুদ্ধিমান ও দক্ষ ব্যক্তি।

যদিও তার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য পাওয়া যায় না। তবে এটি ভালোভাবেই জানা যায়, তিনি শুধু একজন ঐতিহাসিক চরিত্রই নন, বরং লোককাহিনিতেও একজন কিংবদন্তি বীর হিসেবে আবির্ভূত হন। পাশাপাশি তার যুদ্ধ জীবনের অভিযান ও কৃতিত্ব প্রথম উসমানীয় ইতিহাসবিদদের লেখায় এবং কিছু বাইজেন্টাইন উৎসে লিপিবদ্ধ রয়েছে।

দীর্ঘ জীবন পেয়েছিলেন তুরগুত আল্প। আর্তুগ্রুল বেইমের মৃত্যু পরও ৩৫ বছর বেঁচে ছিলেন এবং ১২৫ বছর বয়সে যুদ্ধক্ষেত্রে, তার কিংবদন্তিসম কুঠার (ব্যাটল-অ্যাক্স) হাতে নিয়ে শহীদ হন।

আর্তুগ্রুল গাজীর মৃত্যুর পর তুরগুত আল্প উসমান গাজীর প্রধান সহায়ক ও ঘনিষ্ঠ আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন এবং উসমানের মৃত্যুর (৬৭ বছর বয়সে) সময় পর্যন্ত তার পাশে থাকেন।

প্রথম উসমানীয় উৎস অনুযায়ী, তুরগুত আলপ ১২৯১ সালে কারাচাহিসার দুর্গের দ্বিতীয় বিজয়ে উসমান বেইয়ের পাশে ছিলেন এবং পরে উসমানের সব বিজয় অভিযানে অংশ নেন। ১২৯৯ সালে উসমান গাজী তাকে ইনেগোল (প্রাচীন নাম: অ্যাঞ্জেলাকোমা) দখলের দায়িত্ব দেন। বিজয়ের পর, শহরটির শাসন এবং প্রশাসনের দায়িত্ব তুরগুত আল্পের হাতে অর্পিত হয়। তিনি ৩৬ বছর শাসন করেন এবং সেই সময়ে ইনেগোলে শান্তি ও সমৃদ্ধি বজায় ছিল।

উসমান গাজীর মৃত্যুর পরও প্রবীণ তুরগুত সুলতান ওরহান গাজীকে একইরূপে সমর্থন প্রদান অব্যাহত রাখেন এবং তার পরামর্শদাতা ও যুদ্ধে সহচর হিসেবে পাশে থাকেন, যতক্ষণ না তিনি যুদ্ধে শহীদ হন। তুরগুত আল্প ওরহানেলি দুর্গ (প্রাচীন নাম: আত্রানোস দুর্গ) বিজয়ের সময় শহীদ হন। তিনি আর্তুগ্রুল গাজী, উসমান গাজী এবং ওরহান গাজীর সময়ে আল্প বা যোদ্ধাদের প্রধান কমান্ডার ছিলেন।

তার মৃত্যুর পর, তুরগুত আল্পকে ইনেগোলের কাছে পাহাড়ি অঞ্চলের একটি শান্ত এবং নিভৃত কবরস্থানে সমাহিত করা হয়, যা বর্তমানে তুরগুত আল্প গ্রাম নামে পরিচিত। আর্তুগ্রুল গাজীর মাজারের বাইরে যে কবরটি দেখা যায়, সেটি কেবল একটি প্রতীকী (সম্মানসূচক) সমাধি, সেটি তার প্রকৃত কবর নয়।

ঢাকা/মেহেদি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক আর ত গ র ল গ জ র ক র ল স উসম ন উসম ন গ জ চর ত র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতির মেয়ে

ফরিদপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা।গত মঙ্গলবার এনসিপির সদস্যসচিব আক্তার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ওই চিঠিতে ফরিদপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক করা হয়েছে মো. আব্দিুর রহমানকে এবং সংগঠক করা হয়েছে মো. রাকিব হোসেনকে।
 
এছাড়া ফরিদপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী জেলার দু’জন করে ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।  

ফরিদপুর জেলার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে যে দু’জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের একজন হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহ্মুদা বেগমের মেয়ে এবং জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ নাসিরের ভাগনি। দোলার বাবা সৈয়দ গোলাম দস্তগীর পেশায় ব্যবসায়ী।

সৈয়দা নীলিমা ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংগীত বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি কিছুদিন একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে চাকরি করেন। বর্তমানে ‘সিনে কার্টেল’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী।
 
এ বিষয়ে সৈয়দা নীলিমা দোলা বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী রাজনীতি করা সংক্রান্ত কিছু পোস্ট আপনাদের সামনে আসতে পারে। আমি নিজে এর একটা ব্যাখ্যা রাজপথের সহযোদ্ধাদের দিয়ে রাখতে চাই। আমি ১০ বছর ধরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করছি। নো মেট্রো অন ডিইউ মুভমেন্ট, রামপাল বিরোধী আন্দোলন, ডিএসএ বাতিলের আন্দোলন, সুফিয়া কামাল হলকে ছাত্রলীগ মুক্ত করাসহ অন্যান্য সকল আন্দোলনে আমি পরিচিত মুখ। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমার লেখালেখিও পুরনো। ২০১২ সালে পরিবার ছাড়ার পর রাজপথই আমার আসল পরিবার। জুলাইয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অন্যতম মামলা তাহির জামান প্রিয় হত্যা মামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী আমি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরাসরি ছাত্রলীগ করে অনেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। আমি কখনও ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না, তাই আমার নাগরিক কমিটির সদস্য হতে বাধা কোথায়? এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জেনে-বুঝে এবং আমি ‘লিটমাস’ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে।’ 

আওয়ামী লীগ নেত্রীর মেয়ে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার এনসিপি কমিটি গঠনে-এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব সোহেল রানা বলেন, ‘তার (সৈয়দা নীলিমা) পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড আওয়ামী লীগ। আমরা দেখেছি, গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তার মামা গোলাম নাসির কিভাবে আমাদের ওপর নির্বিচার গুলি ছুড়েছিল। তার মায়ের কর্মকাণ্ডও আমাদের অজানা নয়।’ 

সৈয়দা নীলিমা দোলার সঙ্গে আমাদের পরিচয় পর্যন্ত নেই মন্তব্য করে সোহেল রানা বলেন, ‘আসলে দায়িত্ব দেওয়ার আগে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হলে ভাল হতো। যাচাই-বাছাই করা হলে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নবীজির (সা.) অদ্ভুত দোয়া
  • অর্থ আত্মসাত: খুলনায় নারী ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
  • বগুড়ায় সারজিসের উপস্থিতিতে মারামারির ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ৪ নেতা হাসপাতালে
  • অমিতাভের চিরকুট কিংবা ফ্যাশন নিয়ে রাধিকার ১০ প্রশ্নের জবাব, ১০ ছবি
  • মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস
  • একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
  • বড় বন্দরে ভারী কাজ করেও চলে না সংসার 
  • নাটোরে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল একজনের
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতির মেয়ে