স্মার্টফোনের ক্যামেরা এখন এতটাই উন্নত হয়েছে যে মানসম্মত ছবি তুলতে আলাদা করে দামি ক্যামেরা কিংবা বাড়তি সরঞ্জামের প্রয়োজন হয় না। সঠিক সেটিংস ও সুবিধা ব্যবহার করে স্মার্টফোন দিয়েই তোলা সম্ভব চমৎকার সব ছবি। তবে কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখলে ক্যামেরার পারফরম্যান্স আরও বাড়ানো যায়। স্মার্টফোনে ভালো ছবি তুলতে কীভাবে ক্যামেরার সক্ষমতা বাড়ানো যায়, তা দেখে নেওয়া যাক।

যন্ত্রের সুবিধা কাজে লাগানো

বর্তমানে বাজারের বেশির ভাগ স্মার্টফোনে নাইট মোড, পোর্ট্রেট মোড এবং এইচডিআর মোডের মতো সুবিধা দেওয়া থাকে। ছবি তোলার সময় আলো ও পরিবেশের অবস্থা বুঝে এসব সুবিধা ব্যবহার করলে ছবির মান অনেকটাই উন্নত হয়। দিনের আলোয় কিংবা রাতের অল্প আলোয় সঠিক মোড নির্বাচন করলে ছবি স্পষ্ট হয় এবং প্রাণবন্ত রং বজায় থাকে।

আলোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া

ফটোগ্রাফির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো আলো। প্রাকৃতিক আলোয় তোলা ছবি প্রাণবন্ত ও উজ্জ্বল হয়। বিশেষ করে সূর্যোদয়ের পর ও সূর্যাস্তের আগের সময় ছবির জন্য আদর্শ বলে বিবেচিত। এ সময়ের নরম আলোয় বিষয়বস্তু পরিষ্কারভাবে ফুটে ওঠে এবং ছবিতে উষ্ণ টোন পাওয়া যায়। এর ফলে আলাদা কোনো অতিরিক্ত সরঞ্জামের প্রয়োজন পড়ে না।

ভিন্ন অ্যাঙ্গেল

সাধারণ দৃশ্যেও ভিন্নতা আনতে দৃষ্টিকোণের পরিবর্তন জরুরি। ছবি তোলার সময় একাধিক কোণ থেকে শট নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। নিচ থেকে, পাশ থেকে বা ওপর থেকে তোলা ভিন্ন ভিন্ন কোণ ছবিতে নতুন মাত্রা যোগ করে। এতে ছবির গঠনশৈলী আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।

ক্যামেরার সেটিংস ঠিক করা

অনেক স্মার্টফোন ক্যামেরায় আইএসও, ফোকাস ও এক্সপোজার ম্যানুয়ালি নিয়ন্ত্রণের সুবিধা দেওয়া থাকে। ছবি তোলার আগে এগুলো ঠিকমতো সমন্বয় করলে ছবির সূক্ষ্ম বিষয়গুলোও আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। রং হয় নিখুঁত, ঝাপসা ভাব কমে আসে।

লেন্স পরিষ্কার রাখা

ক্যামেরার লেন্সে ধুলাবালু জমে থাকলে ছবির মান খারাপ হতে পারে। ছবি তোলার আগে লেন্স পরিষ্কার রাখা জরুরি। নরম মাইক্রোফাইবার কাপড় দিয়ে নিয়মিত লেন্স মুছে নিতে হবে। এতে লেন্সের ওপর থাকা ধুলা বা দাগ দূর হবে এবং ছবির স্বচ্ছতা বজায় থাকবে।

সূত্র: টেকলুসিভ

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ