ফুলে সাজানো রিকশায় করে প্রধান শিক্ষকের বিদায়
Published: 1st, May 2025 GMT
নীলফামারীর ডোমার উপজেলার নাঠুয়াগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম এ এম আকতার জাহান বিউটি অবসর গ্রহণ করেছেন। তার কর্মজীবনের শেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে আবেগঘন বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করেছেন তার সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা। তারা বিদায়ী প্রধান শিক্ষককে ফুলে সাজানো রিকশায় করে বিদ্যালয় থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেন।
এম এ এম আকতার জাহান বিউটিকে বিদায় জানাতে বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুদীপ চন্দ্র শর্মা। সঞ্চলনা করেন সহকারী শিক্ষক মো.
২০১৮ সালে নাঠুয়াগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এম এ এম আকতার জাহান বিউটি। প্রায় ৩৮ বছরের কর্মজীবনের শেষ দিনেও তিনি শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছেন।
অনুষ্ঠানে সহকর্মী শিক্ষকসহ আশপাশের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক হিসেবে আকতার জাহান বিউটি বিদ্যালয়ে পাঠদান, শিক্ষার পরিবেশ ও শৃঙ্খলায় দৃশ্যমান পরিবর্তন এনেছেন।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সালমা আক্তার বলে, “বিউটি ম্যাডাম আমাদের খুব ভালোবাসতেন, শাসন করতেন, ভালোভাবে পড়াতেন।”
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী উৎসব রায় বলে, “ম্যাডামের পড়ানোর ধরন একেবারে আলাদা ছিল। তিনি আমাদের আদর করতেন, আবার প্রয়োজন হলে শাসনও করতেন। আমরা তাকে খুব মিস করব।”
সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল মান্নান বলেন, “বিউটি ম্যাডামের উপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের চিত্রই বদলে গিয়েছিল। তিনি ছিলেন সবার প্রিয়। শৃঙ্খলা, পাঠদান ও শিক্ষার্থীদের ফলাফল সবদিকেই উন্নতি হয়েছে। এমন এক জন শিক্ষককে বিদায় জানানো আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক।”
সহকারী শিক্ষক দীপক চন্দ্র রায় বলেন, “তিনি শুধু এক জন শিক্ষক নন, ছিলেন অভিভাবকের মতো। বিদ্যালয়ের যেকোনো সমস্যায় তিনি সবার আগে এগিয়ে আসতেন।”
বামুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “আকতার জাহান বিউটি ম্যাডাম দায়িত্বশীল, সৎ ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছিলেন। তার অবদান দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকার শিক্ষাক্ষেত্রে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”
উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সুদীপ চন্দ্র শর্মা বলেন, “আখতার জাহান বিউটি ছিলেন আদর্শ শিক্ষক। সব সময় শিক্ষার্থীদের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। সময়ানুবর্তিতা, আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধের ক্ষেত্রে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তিনি। এমন এক জন শিক্ষককে বিদায় জানানো যেমন কষ্টের, তেমনি গর্বেরও।”
বিদায়ী বক্তব্যে এম এ এম আকতার জাহান বিউটি বলেন, “চাকরিজীবনে সব সময় চেষ্টা করেছি নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের। শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা ও সাফল্যই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। আজ তাদের চোখের জল আর ভালোবাসা দেখে বুঝতে পারছি—আমার এই দীর্ঘ কর্মজীবন সার্থক হয়েছে। সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।”
ঢাকা/সিথুন/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দর্শক ভালো নাটক দেখতে চায়, সেটা বারবারই প্রমাণ হচ্ছে: হিমি
জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি। অভিনেত্রী ও মডেল। তাঁর অভিনীত ১০৯টি নাটক কোটি ভিউ পার হয়েছে। এরই মধ্যে আগামী ঈদের কাজ শুরু করেছেন। ভিউয়ের সাফল্য ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে।
আপনার অভিনীত ১০৯টি নাটক কোটি ভিউর মাইলফলক স্পর্শ করেছে। এ সাফল্য কেমন উপভোগ করছেন?
রীতিমতো বিস্মিত হয়েছি। কখনও আমার নাটকের ভিউ গোনার অভ্যাস নেই। তবে সহকর্মী-ভক্তরা যখন এ ধরনের খবর জানান, তখন ভালো লাগে। আরও ভালো লেগেছে, সহকর্মীরাও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এটা সত্যিই আনন্দের। দর্শকের ভালোবাসার কারণেই এমন সাফল্য এসেছে। সহকর্মী নিলয় ভাইয়া [নিলয় আলমগীর] প্রথম ফেসবুকে পোস্ট করেন। তাঁর পোস্ট দেখেই খবরটি আমি প্রথম জেনেছি।
অসংখ্য খণ্ড নাটক ও ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন, সেক্ষেত্রে বাছবিচার করার সুযোগ কতটা পান?
বাছবিচার করে কাজ করব বলে ইদানীং ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করছি না। খণ্ড নাটকেই কাজ করছি। এটি সত্যি যে, অনেক কাজ করছি, কিন্তু তা বাছাই করেই করছি। কিছু কাজ আছে গল্পের আইডিয়া ভালো, কিন্তু চিত্রনাট্য পছন্দ হয়নি। আলাপ আলোচনা করার পরই ক্যামেরার সামনে দাঁড়াচ্ছি। অনেক বেশি কাজ করতে হবে, এটি কখনই মনে করি না। যেটা ভালো লাগে, সেটাতেই অভিনয় করি।
ঈদে আপনার এক ডজনের বেশি নাটক প্রচার হয়েছে। কোন নাটকে বেশি সাড়া পেয়েছেন?
‘একান্নবর্তী’ নাটকটি দর্শক বেশি পছন্দ করেছেন। এ ছাড়া ‘নীল রঙের সাইকেল’ নাটকটিও দর্শক দেখেছেন। এই দুটি কাজ গতানুগতিকতার বাইরে নির্মাণ হয়েছে। সিনিয়র শিল্পীরা এতে অভিনয় করেছেন। সবার কাছ থেকে প্রশংসা পাচ্ছি। দর্শক সবসময় ভালো গল্পের নাটক দেখতে চায়। সেটা বারবারই প্রমাণ হচ্ছে। এ ধরনের কাজ করতেও ভালো লাগে।
কোরবানি ঈদের কাজ শুরু করেছেন…
দুই ঈদের মাঝে গ্যাপ খুব কম। এ কারণে কোরবানির ঈদের কাজ বেশ আগেভাগেই শেষ হয়ে যায়। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি নাটকের কাজ করেছি। গত ঈদেরও বেশ কয়েকটি কাজ আছে। সে নাটকগুলো প্রচার হয়নি। কোরবানির ঈদে তা প্রচার হবে।
উপস্থাপনায় এখন আর আপনাকে দেখা যায় না। কারণ কী?
নাটকে ব্যস্ততার কারণে উপস্থাপনা করছি না। দুটো কাজ একসঙ্গে করা কঠিন। উপস্থাপনা ঠিকঠাক করতে পারি, কিন্তু অভিনয়ের মতো এতটা উপভোগ করি না। তবে নতুন আইডিয়ার অনুষ্ঠান পেলে উপস্থাপনায় আপত্তি নেই।
অভিনয়শিল্পী সংঘের নতুন কমিটি এসেছে। নবনির্বাচিত কমিটির কাছে আপনার প্রত্যাশা কী?
শিল্পীদের জন্যই তো শিল্পী সংঘ। শিল্পীদের পাশে সংগঠন দাঁড়াবে– এটাই বড় চাওয়া। সংগঠনটি এগিয়েছে অনেক দূর। আরও এগিয়ে যাবে, এটিই প্রত্যাশা।
অভিনয়ের পাশাপাশি গানও করছেন। নতুন গান নিয়ে কোনো পরিকল্পনা করছেন?
গান নিয়ে নিজের কোনো পরিকল্পনা নেই। ‘ইত্যাদি’ ও ‘পরান পাখি’ নাটকের জন্য দুটি মৌলিক গান করেছিলাম। আগামীতে যদি ভালো গানের প্রস্তাব পাই, অবশ্যই করব।