ঢাকার সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার এক ছাত্রকে ‘হত্যাচেষ্টা’র অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানাসহ ২০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য, শিক্ষক, সাংবাদিক, অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরও আসামি করা হয়েছে। 

ঢাকা মহানগর হাকিম মনিরুল ইসলাম বুধবার অভিযোগটি আমলে নিয়ে শাহবাগ থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। গত ২০ মার্চ সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার ছাত্র সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের পক্ষে ছাত্রদলের সাবেক নেতা এম এ হাশেম রাজু আদালতে এ মামলার আবেদন করেন। 

মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সালমান এফ রহমান, আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ প্রমুখ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক আছেন আসামির তালিকায়। তারা হলেন– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড.

আখতারুজ্জামান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. হারুন-অর-রশিদ, ঢাবি শিক্ষক অধ্যাপক মেসবাহ কামাল ও অধ্যাপক আবু জাফর মো. শফিউল আলম ভূঁইয়া, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মুহম্মদ জাফর ইকবাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আনোয়ার হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য মীজানুর রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আবদুল মান্নান, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য এম অহিদুজ্জামান, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. অনুপম সেন, সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান, নঈম নিজাম, শ্যামল দত্ত, মোজাম্মেল বাবু, আলমগীর হোসেন, আবেদ খান প্রমুখ।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে– ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট সকালে মামলার বাদী এম এ হাশেম রাজুর নেতৃত্বে একটি মিছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পরীবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের মোড়ে এসে পৌঁছায়। তখন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী পথরোধ করে ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ, হাতবোমা, পেট্রোল বোমা ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ গুলিতে আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদের ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

এদিকে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আব্দুন নূর নামে এক সাংবাদিক নিহতের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ ১৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহতের বাবা হাফেজ আবুল বাশার গত মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম এম মিজবাউর রহমানের আদালতে এ মামলা করেন। 

মামলায় অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, সালমান এফ রহমান প্রমুখ। 

মামলার বাদী আবুল বাশার বলেন, আব্দুন নূর ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকায় অভিযান নিউজ নামে পত্রিকার রিপোর্টার ছিল। আন্দোলনের সময় ১ আগস্ট সে ঢাকায় আসে এবং যাত্রাবাড়ীতে ৫ আগস্ট গুলিতে মারা যায়। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: রহম ন আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

ডাকসু নির্বাচনের কমিশন ও তফসিলের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের কমিশন গঠন ও তফসিল ঘোষণার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। রোববার বেলা আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে তাঁরা এ কর্মসূচি শুরু করেন।

ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের মাহতাব ইসলাম কর্মসূচিতে টানা অবস্থান করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে তাঁদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে অবস্থান নিতে দেখা যায়।

বিন ইয়ামিন মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, ডাকসু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের একটা প্ল্যাটফর্ম। ডাকসু জুলাই অভ্যুত্থানের একটা কমিটমেন্ট (প্রতিশ্রুতি)। অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে বিশেষ করে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থীরা পরিবর্তিত পরিবেশ চেয়েছেন, যেখানে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ চর্চার জায়গা থাকবে, পারস্পরিক সহিষ্ণুতা ও সহাবস্থান থাকবে। এ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

বিন ইয়ামিন বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন করে আসছি। আমরা সম্প্রতি তিনজন তিন দিনের মতো অনশনে ছিলাম। তারপর ভিসি (উপাচার্য) স্যারসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশ্বস্ত  করেছিলেন, (জুনের) ২ তারিখের ভেতর ডাকসু নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে আমাদের জানাবেন। কিন্তু আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।’

ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আরও বলেন, ‘আমরা পত্রিকা মারফত জানলাম, সোমবার ডাকসুর বিষয়ে জরুরি সিন্ডিকেট মিটিং আহ্বান করা হয়েছে। এই সিন্ডিকেট মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষে এবং ডাকসুর পক্ষে আসতে হবে। নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত করা এবং নির্বাচনের তারিখ আমরা এখান থেকে চাই।’

প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রাত ১১টায় অবস্থান কর্মসূচি চলছিল। ডাকসু নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা না জানানো পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানান বিন ইয়ামিন। সিন্ডিকেট সভা থেকে ডাকসু নির্বাচন কমিশন ও তফসিলের ঘোষণা না এলে আন্দোলন আরও তীব্রতর হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

আরও পড়ুনআজকের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি২৪ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ