ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে ‘টর্চলাইট জ্বালিয়ে’ দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত ৩০
Published: 1st, May 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পূর্ববিরোধের জের ধরে দুটি গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ইউএনও, ওসিসহ ৩০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাত ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত উপজেলার সদর ইউনিয়নের চানমনিপাড়া ও মোঘলটুলা গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। এ সময় বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোশাররফ হোসাইন ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হাসান আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস আগে মুঠোফোনের চার্জার কেনাবেচা নিয়ে চানমনিপাড়া ও মোঘলটুলা গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা ছিল। গতকাল সন্ধ্যায় চানমনিপাড়া গ্রামের প্রয়াত হেলাল মিয়ার স্ত্রী হালিমা বেগম (৪২) ও তাঁর ছেলে সাইফুল ইসলাম (২০) গ্রামের অদূরে একটি চালকলে চাল ভাঙাতে যান। সেখানে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মোঘলটুলা গ্রামের তৌহিদ মিয়া (২০) হালিমা বেগমকে কটূক্তি করেন। এর প্রতিবাদ করেন তাঁর ছেলে সাইফুল ইসলাম। এ নিয়ে সাইফুল ও তৌহিদের মধ্যে হাতাহাতি হয়।
এর জের ধরে গতকাল রাত আটটার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন দা, বল্লম, লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে দুই গ্রামের মাঝখানের সড়কে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় অন্ধকারে অনেকের হাতে ছিল টর্চলাইট।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ইউএনও মোশাররফ হোসাইন, ওসি রফিকুল হাসানসহ পুলিশের একটি দল। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ইউএনও এবং রাত ১০টার দিকে ওসি ইটের আঘাতে আহত হন। ইউএনও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি ডান হাঁটুর নিচে আঘাত পেয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন ওসি রফিকুল হাসান। তাঁর ডান চোখের ওপরে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। তাঁকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) তপন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, সরাইল থানার ওসি রফিকুল হাসান ঘটনাস্থলে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। তাঁকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত আছে।
ইউএনও মোশাররফ হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কয়েক দিন আগে সরাইলে সংঘর্ষে একজন প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনা আমি মেনে নিতে পারিনি। সংঘর্ষের ঘটনা শুনে না গিয়ে পারলাম না। কথায় কথায় সংঘর্ষের সংস্কৃতি থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
শেরপুরে কৃষককে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ
শেরপুরের শ্রীবরদীতে সুদের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে এক কৃষককে বেঁধে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে দহেরপাড় গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী মো. আকবর আলী রবিবার (২ নভেম্বর) শ্রীবরদী থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ পাওয়ার তথ্য গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন শ্রীবরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ।
আরো পড়ুন:
নামাজরত বাবাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ, ৩ পুলিশ আহত
মুন্সীগঞ্জে ড্রেনের ভেতরে মিলল ২৩টি ককটেল, আটক ১
অভিযুক্তরা হলেন, দহেরপার গ্রামের মৃত নুজ বাউনের ছেলে আবু সামা ওরফে বুইজে (৬০), মৃত তরি মিয়ার ছেলে বনিজ উদ্দিন (৫০) ও মৃত ডায়ে শেখের ছেলে আব্দুল বারেক (৩০)।
ভুক্তভোগী আকবর আলীর বলেন, “প্রায় এক বছর আগে তিনি বারেকের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা সুদে নেন। চুক্তি অনুযায়ী তিনি প্রতি মাসে চার হাজার টাকা করে সুদও পরিশোধ করে আসছেন। সম্প্রতি মূল টাকা ফেরত দিলেও অতিরিক্ত আরো দুই হাজার টাকা দাবি করেন বারেক। এ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।”
তিনি বলেন, “গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পরিকল্পিতভাবে তারা আমার বাড়িতে প্রবেশ করে। তারা আমাকে লাঠিপেটা করে গুরুতর আহত করে। একপর্যায়ে আমাকে রশি দিয়ে বেঁধে টেনে-হিঁচড়ে আবু সামার বাড়িতে নিয়ে যায়। তার বাড়ির সামনের রাস্তার সিমেন্টের খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করে। পরে স্থানীয়রা আমাকে শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।”
শ্রীবরদী থানার ওসি আনোয়ার জাহিদ বলেন, “আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/তারিকুল/মাসুদ