নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তারুণ্যের উচ্ছ্বাস সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীদের মাঝে উপহার হিসেবে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার কাঞ্চন ভারত চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু।

এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.

সাইফুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন কাঞ্চন সলিমদ্দিন চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর মালুম, কাঞ্চন পৌরসভার সাবেক মেয়র মজিবুর রহমান ভুঁইয়া, সংগঠনের উপদেষ্টা ও সাবেক কাউন্সিল মফিকুল ইসলাম খাঁন, কালাদী কামিল মাস্টার্স মাদরাসার অধ্যক্ষ মনির  হোসেন, কাঞ্চন ভারত চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এনামুল হক, সংগঠনের সদস্য ওসামন গণি সহ আরো অনেকে। 

অনুষ্ঠানে কাঞ্চন পৌরসভার সকল স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষক, শিক্ষিকা এবং কয়েক হাজার শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। এ সময় দুই শতাধিক মেধাবী শিক্ষার্থীর মাঝে শিক্ষা সামগ্রী উপহার তুলে দেন অতিথিবৃন্দ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মো. সাইফুল ইসলাম শিক্ষনীয় বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন জীবনে কিছু করতে হলে শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতি উন্নয়ন ঘটাতে পারে না।

তারুণ্যের উচ্ছ্বাস সামাজিক সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা মুস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু বলেন, আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। সবাইকে শিক্ষার প্রতি মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান। রূপগঞ্জের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের পাশে থাকাবেন বলেও তিনি ঘোষণা দেন।

রূপগঞ্জ থেকে মাদক, যৌতুক ও বাল্য বিয়ে নির্মূল করতে স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের সহযোগিতা চান অতিথিবৃন্দ। 
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স গঠন র র পগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

৫ দিনের ছাতক যুদ্ধ বেকায়দায় ফেলে পাকিস্তানি বাহিনীকে

‘১৯৭১ সালে আমি বেশ কয়েকটি সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়েছি। আহত হয়েছিলাম একবার। তবে ছাতকের যুদ্ধ ছিল ভয়াবহ। মনে হয়েছিল, এই যুদ্ধেই হয়তো প্রাণ যাবে। সুনামগঞ্জ অঞ্চলে এটিই ছিল সবচেয়ে বড় যুদ্ধ।’ বলছিলেন সুনামগঞ্জের যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান।

সুনামগঞ্জের ছাতক মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনীর দখলে ছিল। সেটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে অক্টোবরে ছাতক অপারেশনের পরিকল্পনা হয়। গুরুত্বপূর্ণ এই যুদ্ধের কথা উঠে এসেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধে সামরিক অভিযান (দ্বিতীয় খণ্ড), প্রথমা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত সম্মুখযুদ্ধ ১৯৭১ মুক্তিযোদ্ধাদের কলমে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ সেক্টরভিত্তিক ইতিহাস (চতুর্থ খণ্ড) বইয়ে।

সম্মুখযুদ্ধ ১৯৭১ মুক্তিযোদ্ধাদের কলমে বইয়ে মো. ইদ্রিস আলী বীর প্রতীক ‘অপারেশন ছাতক’ নামে একটি লেখা লিখেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ছাতকের উত্তরে দোয়ারাবাজারের সীমান্তে বাঁশতলার অবস্থান। এটি ৫ নম্বর সেক্টরের সেলা সাবসেক্টরের সদর দপ্তর। তাদের সেক্টর কমান্ডার লে. কর্নেল মীর শওকত আলী। ছাতক অপারেশন চালাতে মুক্তিবাহিনীর জেড ফোর্সের তৃতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট গারো পাহাড়ের তেলঢালা ক্যাম্প থেকে বাঁশতলায় আসে। এই রেজিমেন্টের অধিনায়ক মেজর শাফায়াত জামিল।

পাঁচ দিনের এই যুদ্ধে ২৫ থেকে ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিহত হন। ছাতক যুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনী যে যথেষ্ট বেকায়দায় পড়েছিল, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার সিদ্দিক সালিক তাঁর উইটনেস টু সারেন্ডার বইয়ে সে কথা স্বীকার করেন।মো. ইদ্রিস আলী বীর প্রতীক

ছাতক শহর ও সিমেন্ট ফ্যাক্টরি ঘিরে ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর শক্ত প্রতিরক্ষা অবস্থান। এই পুরো এলাকায় ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৩১ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের এক কোম্পানি সেনা। সঙ্গে ১২ আজাদ-কাশ্মীর ফোর্স (একেএফ), ইস্ট পাকিস্তান সিভিল আর্মড ফোর্স (ইপিসিএএফ) ও স্থানীয় রাজাকারদের দল।

সুনামগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুল মজিদ চৌধুরী ছাতক যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন। তাঁর লেখা রক্তাক্ত ৭১ সুনামগঞ্জ বইয়ে তিনি এই যুদ্ধ সম্পর্কে লিখেছেন, ক্যাপ্টেন আনোয়ারের ‘এ’ কোম্পানি বালিউড়া বাজারে অবস্থান নেয়। মেজর আকবরের ‘বি’ কোম্পানি জয়নগর টিলায় যায়। ‘সি’ কোম্পানির মেজর মহসিনকে দোয়ারাবাজারে এবং ‘ডি’ কোম্পানির অধিনায়ক লে. নুরুন্নবীকে ছাতক-সিলেট রোডের গোবিন্দগঞ্জে অবস্থান নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়। লে. মনজুর ‘ই’ কোম্পানি নিয়ে কোম্পানীগঞ্জের বিপরীতে রাধানগরে অবস্থান নেন। এ ছাড়া সাবসেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন হেলালের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীর তিনটি কোম্পানি, ক্যাপ্টেন আনোয়ার ও ক্যাপ্টেন আকবরের কোম্পানিও ছিল।

ছাতক যুদ্ধে শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ। সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের বাঁশতলা এলাকা

সম্পর্কিত নিবন্ধ