একটু একটু করে আবার চলতে শুরু করেছে লাইমিপাড়ার কোমরতাঁত। নতুন সুতা কেনা হচ্ছে। চাদর বুনছেন বম নারীরা। ক্রেতাও পাওয়া যাচ্ছে। বহুদিন পর আবার ফিরে আসতে শুরু করেছে পুরোনো জীবিকার ছন্দ। দুই বছর ধরে পর্যটনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির পর বান্দরবানের শৈলপ্রপাতের ঝরনার পাশে বম নারীদের মুখে হাসি ফুটতে শুরু করেছে আবার।

বান্দরবান জেলার শহরতলির পর্যটনকেন্দ্র শৈলপ্রপাতে আসা পর্যটকদের কাছে কোমরতাঁতের কাপড় বিক্রি করেন বম তরুণী ত্লাওয়াংপুই ওরফে নিক্কি বম। বছর দুয়েক আগেও তাঁর জীবনযাপনে বেশ সচ্ছলতা ছিল। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় হারানো জীবিকায় আবারও ফিরতে পেরেছি। আশা নিয়ে বাঁচা আর কি! সব গুছিয়ে নিতে পারলে আবার হয়তো একটু ভালো থাকতে পারব।’

কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসী তৎপরতার পরিস্থিতিতে একের পর এক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে বান্দরবানের পর্যটন। ফলে গত প্রায় দুই বছর ধরে নিক্কি বমের মতো শৈলপ্রপাত এলাকায় ফারুকপাড়া, লাইমিপাড়ার পর্যটননির্ভর অনেক পরিবার আর্থিক সংকটে পড়েন। এ ছাড়া বান্দরবান-চিম্বুক-থানচি সড়কের গ্যেৎসেমানিপাড়া, ম্রোলংপাড়ার শত শত বম ও ম্রো পরিবার আয়-রোজগার হারিয়ে সংকটে পড়েছিল।

গত ৬ নভেম্বর থানচি, রুমা ও রোয়াংছড়ি ছাড়া বান্দরবান জেলায় পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। এরপর থেকে আবার আগের জীবিকায় ফেরার চেষ্টা করছেন অনেকে। জেলা শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরে বান্দরবান-চিম্বুক-থানচি সড়কে পর্যটনগন্তব্য শৈলপ্রপাত ঝরনা। সেখানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে বম নারীরা তাঁদের কোমরতাঁতের চাদর, কম্বল, মাফলার, ওড়না ছাড়াও হস্ত ও কুটিরশিল্পের পণ্য এবং বাগানের ফলমূল বিক্রি করেন। সেই রোজগারেই চলে তাঁদের সংসার। সম্প্রতি শৈলপ্রপাতে গিয়ে দেখা যায়, পর্যটকদের আগমনে বম নারীদের বেচা-বিক্রি বেড়েছে।

পর্যটন শুরু হওয়ায় বম নারীরা আবারও কোমরতাঁতে কাপড় বুনছেন নিয়মিত। সম্প্রতি বান্দরবানের শৈল প্রপাতের ফারুকপাড়ায়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ন দরব ন ক মরত

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত ৩ জন পেহেলগামের হামলাকারী: পার্লামেন্টে অমিত শাহ

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত তিন বন্দুকধারী ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার অভিযানটি চালানো হয়।

আজ মঙ্গলবার ভারতের সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় দেওয়া বক্তব্যে অমিত শাহ এসব কথা বলেন।

তিন মাসেরও বেশি আগে গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা পেহেলগামের বৈসরানে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীরা হামলা চালান। ওই ঘটনায় ২৬ জন নিহত হন।

অমিত শাহ বলেন, ‘আমি পার্লামেন্টে জানাতে চাই, বৈসরানে যে তিন সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছিলেন, তাঁদের সবাইকে হত্যা করা হয়েছে।’ তাঁর দাবি, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবার সদস্য। জাতিসংঘ এটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে।

অমিত শাহ আরও বলেন, ‘হামলায় তাঁদের জড়িত থাকার ব্যাপারে আমাদের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর কাছে বিস্তারিত প্রমাণ আছে।’

ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, কাশ্মীরের দাচিগাম এলাকার পাহাড়ে গতকাল ওই অভিযান চালানো হয়েছে। শ্রীনগর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে দাচিগামের অবস্থান।

এপ্রিলে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গলের ভেতর লুকিয়ে থাকা বন্দুকধারীরা হঠাৎ বেরিয়ে এসে পর্যটকদের ওপর গুলি চালান। ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের প্রায় সবাই ভারতীয়। একজন নেপালি ছিলেন।

আরও পড়ুনকাশ্মীরে পর্যটকদের গুলি করার আগে কী হয়েছিল, জানালেন প্রত্যক্ষদর্শীরা২৫ এপ্রিল ২০২৫

ভারতের অভিযোগ, এ হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদদ আছে। তবে ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে। পেহেলগামে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত মে মাসে পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে চার দিন ধরে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষে ৭০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকেই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীর অঞ্চলটি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিভক্ত হয়ে আছে। উভয় দেশ পুরো কাশ্মীরকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে থাকে। কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়াকে কেন্দ্র করে তারা দুটি যুদ্ধসহ বেশ কয়েকবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে।

আরও পড়ুনপেহেলগামে হামলায় জড়িত সবাইকে এবার পাকিস্তানি নাগরিক বলে দাবি ভারতের২৪ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে ডুবে গেছে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু
  • ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত ৩ জন পেহেলগামের হামলাকারী: পার্লামেন্টে অমিত শাহ